বি পু ল চ ক্র ব র্তী-র কবিতাগুচ্ছ
যেতে যেতে
সন্ধ্যা নেমে এল
যেতে যেতে সন্ধ্যা নেমে এল
যেতে যেতে হারাল প্রান্তর
যেতে যেতে রাক্ষুসে প্রাসাদ
যেতে যেতে সে এক শহর
.
যেতে যেতে ভীষণ হাঁ-মুখ
যেতে যেতে, যাওয়াই সঙ্গিন
যেতে যেতে পার হওয়া তবু
দিন আর রাত্রি আর দিন…
ব্যথার আগুনে
.
সে ছিল আমার দুঃখী বয়স —
গঞ্জনা কত কী যে
পুড়েছে সে তার ব্যথার আগুনে
পুড়ছি আমিও নিজে
.
আগুন পেরিয়ে সে কী চেয়েছিল —
কোন্ সে পৃথিবী পেতে
খুঁজে ফিরি আজও তার সে ভুবন
যেতে যেতে যেতে যেতে…
কুয়াশার দেশে
দু’টি হাতে কুয়াশা তাড়াই
কুয়াশায় ফের যাই ঢেকে
একদিন পাশে ছিল কারা
আজ নেই তাহাদের কে কে
.
কুয়াশায় যেতে যেতে যেতে
এই, শুধু এই-ই দেখে নেয়া
কুয়াশা জড়ানো দু’টি হাতে
বেয়ে চলা জীবনের খেয়া…
চরৈবতি
বাতাস বলেছে, চলো চলো বয়ে চলো
আমি কিছু বলি, তুমি কিছু কথা বলো
.
কারা তা শুনছে, দরকার নেই জানার
পাখিটি বলেছে, ওড়বারই কথা ডানার
.
ঝরাপাতা আর নদীও বলেছে তাই-ই
যেতে যেতে আমি সেই কথা লিখে যাই…
মাদারির খেল
একঃ
কষ্টেসৃষ্টে কেটে গেল দিন —
কখনও চাইনি পেতে
কেষ্ট
শুধু আসা-যাওয়া
আর থাকা-খাওয়া
এজন্য
চেয়েছি সামান্য
কিছু রেস্ত
সেখানে পড়লে টান
খানখান
হয়েছি, চেয়েছি
হেস্তনেস্ত
.
একদিন হেঁটেছি রাস্তায়
টানটান
বাধা ছিল, পরোয়া থোড়াই
আজকে খোঁড়াই
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটি…
মনে হয়, এর চেয়ে
এখানেই দাড়ি টানা শ্রেয়
হাত-পা ঝারা
যত্রতত্র হ’তে হয়-না হেয়
আর তাছাড়া
শুরু হয় যে রচনা, আছে তার
শেষ তো!
দুই
একদিন তো যেতে হবেই —
পেরিয়ে রোদন
শ্মশানে যাওয়ার পথে
দেখে যাব প্রসূতিসদন
না, ধনি
ওখানে জন্মাইনি
তবে, বলা যেতে পারে
ওখানে প্রত্যহ আমি
প্রতিটি শিশুর মধ্যে
এখনও জন্মাই
.
যাই
জীবনের মাদারির খেলা
আর-বার শেষবেলা
দেখে যেতে চাই —
এপাশে আসছে কেউ
এপাশে হাসির ঢেউ
ওপাশে শ্মশানঘাটে
কী মরাকান্নাই
.
এইসব দেখতে দেখতে
একদিন যেতেই হবে, ভাই!