হারানো দিন আর সোনালি বিকেল

প্রদীপ ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৫২ সালে কোচবিহার জেলার দিনহাটায় ।দিনহাটায় স্কুল জীবন শেষ করে শিলিগুড়িতে কলেজ জীবন শুরু।বর্তমান বাসস্থান শিলিগুড়ি পুরসভার 31নং ওয়ার্ডে সুকান্তপল্লীতে । ৭০ এর দশকের শুরু থেকেই নাট্যকার, অভিনেতা ও পরিচালক হিসেবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন। পরবর্তী কালে গল্প , কবিতা ও প্রবন্ধ উত্তরের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই করোণা আবহে ঘরে বন্দি । ছোটবেলার বিভিন্ন স্মৃতি বিশেষ করে এবারের পূজোর পরিমণ্ডলে নিজের ছোটবেলার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ।

আমাদের ছােটবেলা ও দুর্গাপুজো

প্র দী প    ভ ট্টা চা র্য

দুর্গাপূজা আসার মাস দুয়েক আগে থেকেই মনের মধ্যে একটা কেমন যেন আনন্দের হিল্লোল বয়ে যেত। অন্ততঃ আমাদের ছােটবেলায় আমার সমবয়সি সবার মনেই এই সুখানুভূতি ছিল। থাকাটাই স্বাভাবিক। এখনকার দিনেও ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও এই আনন্দ-উচ্ছ্বাস আছে। তবে এখন আনন্দ করার বিষয় আলাদা। ধরণ আলাদা। দুর্গাপূজোকে কেন্দ্র করে আনন্দ উচ্ছ্বাস হলেও এখন পূজোর বহিরাবরণ, আলাে, সজ্জা এগুলােই প্রধান হয়ে উঠেছে। সময়ের সাথে সাথে এই পরিবর্তন হয়েছে। এগুলাে যে খারাপ নয়। একথা আমি কখনই ভাবিনা যে যাহা কিছু পুরাতন তাহাই সুন্দর, তাহাই সত্য। আমার ছােটবেলা কেটেছে কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমায়। তখন দিনহাটা ছিল গ্রামের একটু উন্নত সংস্করণ। দিনহাটায় দুর্গোপূজো হতাে হাতেগােনা কয়েকটা। তার মধ্যে মদনমােহনবাড়ী, মহামায়ারপাট – এই দুটো পূজোই ছিল প্রধান। আমার ছােটবেলায় দেখেছি পূর্বপাড়া, বাবুপাড়া, মদনমােহন পাড়া, পশ্চিমপাড়া, ভাটাপাড়ার (বর্তমানে কলেজপাড়া) প্রতিটি পরিবারের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে থাকতাে সাধ্যানুসারে। ধনী-দরিদ্রের তফাৎ বােঝা যেত না। ধনী-দরীদ্রের পার্থক্যতাে ছিলই কিন্তু পূজোর কাজকর্মে যুক্ত হবার ক্ষেত্রে তা কখনই বাধার সৃষ্টি করতাে না। বেশ মনে আছে অখিলদার (সবার অখিলদা) তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকবছর পুজো হয়েছিল। পূজার চাদা ছিল নিজের সাধ্যমত এবং সেটাসবাই মদনমােহন বাড়িতে এসে নিজে থেকে দিয়ে যেত। মদনমােহন ঠাকুরের পূজারী সেটা খাতায় লিখে রাখতাে। অখিলদার তত্ত্বাবধানে একেক পাড়াকে এক-একদিনের পূজোর ফল-মূল সহ পূজোর সেইদিনের সমস্ত উপকরণের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেওয়া হতাে। যেদিন যে পাড়ার দায়িত্ব থাকতাে, সে পাড়ার মেয়ে-বৌরা সকাল সকাল স্নান সেরে লালপাড়ের শাড়ী অথবা গরদের কাপড় পরে ধােয়া বটি-দা নিয়ে মন্ডপে চলে আসতাে ফল-মূল কেটে নৈবে, ভােগ রান্না এসব করতে। এখন মনে হয় এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অখিলদা দুটো কাজে করেছিলেন। প্রথমতঃ মদনমােহন বাড়ীর পুজো আমারও পূজো – এই বােধ এবং আন্তরিকতা প্রত্যেকের মনে সঞ্চারিত করতে পেরেছিলেন। দ্বিতীয়তঃ বাজেটের একটা বিরাট অংশ পাড়াগুলাের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া। কারণ তখনতাে ডেকরেশনের জন্য এখনকার মতাে খরচের ব্যাপার ছিল না। প্রধান খরচের ব্যাপার ছিল প্রতিদিনের ফল-মূল সহ ভােগের উপকরণ। এসব যে পাড়ার দায়িত্বে থাকতাে সে পাড়া এসব ব্যবস্থা করতাে। মােটের উপর পূজোয় সবার মধ্যেই একটা অকৃত্রিম আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হত। আমার মনে হয় এখন এই আন্তরিকতা আমি খুব একটা পাই না। অবশ্য হতেই পারে সময়ের সাথে আন্তরিকতা প্রকাশেরও ভঙ্গিমা পাল্টেছে। এটা হওয়াই স্বাভাবিক। ওল্ড ইজ গোল্ড একথা সবক্ষেত্রেই সঠিক নয়। পূজোয় আমাদের, শুধু আমাদের কেন এখনকার সময়ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হােল জামা-কাপড়। বড়দা বাইরে থাকতাে আমরা তিন ভাই, এক দিদি দিনহাটা থাকতাম।বাবা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকছিলেন।৮৭ টাকা মাইনেয় অবসর নিয়েছিলেন। সঙ্গে জজমানি কেন। বাবা অবশ্য একসময় সিঙ্গার সিউয়িং কম্পানির তৎকালিন সমগ্র উত্তরবঙ্গের ম্যানেজার ছিলেন। কেন, সে সব ছেড়ে জজমানি আর সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকতা করার জন্য দিনহাটায় পরে থাকলেন- সে সব অনেক কথা। শুধু পিসিমা (বাবার খুড়তুতাে বােন) এবং ছােটকাকুর (বাবা খুড়তুতাে ভাই) মুখে শুনেছি বাবা, কোর্ট-প্যান্ট-টাই পরা বড় চাকুরে ছিলেন। বাবার উপনয়নে বাবার কাকা (দুর্গানাথ ভট্টাচাৰ্য) বাবার দীক্ষাগুরু হয়েছিলেন সে কারণে বাবা দীক্ষামাকে মাগাে বলতেন। আমি অবশ্য আমার নিজের ঠাকুর্দা ঠাকুমাকে দেখেনি। বাবার কাকা-কাকিমাকেই আমাদের নিজেদের ঠাকুর্দা, ঠাকুমা বলে জেনেছি। তাদের স্নেহ-ভালবাসা যথেষ্টই পেয়েছি। পিসিমাকে বিধবা দেখেছি। পিসিমার হাতের রান্না ছিল অপূর্ব। এখন মনে আছে পিসিমার রান্না কুমড়াের ভগা দিয়ে মটর ডাল মাথা আতপচালের ভাতের ডলা খাবার জন্য ব্যাকুল ছিলাম।ছুটির পর পিসিমার বাড়ি হয়ে আসতাম। সেই ভাত ডালের স্বাদ এখনও ভুলতে পারিনি। যাইহােক শেষপর্যন্ত বাবা যজমানি আর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দিন অতিবাহিত করেন। যেভাবে-বােনদের জন্য বাবা লােভনিয় চাকরী ছেড়ে দিয়েছিলেন সেই ভাইয়েরা (পিসিমা ছাড়া) পরবর্তী সময়ে বাবাকে প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে সম্পূর্ণতঃ বঞ্চিত করেছিলেন। ঠাকুর্দা, ঠাকুমা অবশ্য আমৃত্যু বাবাকে পুত্রবৎ স্নেহ করেছেন। বাবাও নিজের বাবা হলেও যা করতেন তার বেশী-ছাড়া কম করেন নি। বাবা ৮৭ টাকা মাইনের অবসর নিয়েছেন স্বভাবতঃই মধ্যবিত্ত ও ছিলাম না, নিম্ন মধ্যবিত্ত ছিলাম না। এই দুটোর মাঝামাঝি ছিল আমাদের অবস্থান। তখন মাইনের জন্য মানি-অর্ডার আসতাে। তিনুদা মানি অর্ডার নিয়ে আসতেন। খাকি হাফপ্যান্ট দুটো পকেট সহ খাকি ফুলহাতা শার্ট পরে বেঁটে খাটো মানুষটা বাড়ীতে এলে আমাদের আনন্দের সীমা থাকতাে না। তার প্রথম কারণ বাবা মাইনে পাবার দিন বাজার থেকে বড় মাছ আর কাছারির সামনে থেকে রসগােল্লা নিয়ে আসতেন। মাসে ঐ একদিন বড় মাছ আর মিষ্টি আমাদের নিশ্চিত ছিল। মাইনে কোন নির্দিষ্ট দিনে হােত না। হােত তবে কখনও তা মাসের ২৫ তারিখ হয়ে যেতাে। প্রতিদিন দু-বেলা ডাক আসতাে। আমি প্রতিদিন স্কুলে যাবার সময় পােষ্ট অফিসে খোঁজনিতে যেতাম। আমাকে দেখলেই তিনুদাবলে দিত। আমি পােষ্টমাস্টারের জানলার সামনে দাঁড়িয়ে টরে-টক্কা শুনতাম। অবাক হয়ে ভাবতাম এই শব্দ কি করে বহুদূর দেশে কথা হয়ে পৌছে যায়। মাইনের মানি-অর্ডার যেদিন আসতাে সেদিন কাছারির উল্টো দিকের মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি আর বাজার থেকে রুই-কাতল মাছ আসতাে। তাই আমাদের আনন্দের সীমা থাকতাে না। বাবা যজমানি করতেন তাই মিষ্টি অবশ্য মাসে আরাে দু-একদিন আসতাে। সঙ্গে দইও থাকতাে।

তবে বড় মাছ খুব বেশী খাওয়া হােত না। তখন খুব স্বচ্ছল পরিবার রুই-কাতলা মাছ খেতাে। আমাদের মতাে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা সাধারণতঃ ছােট মাছ খেতাম কারণ দামে সস্তা বলে। এখন অবশ্য উল্টো দেখি। যারা স্বচ্ছল তারাই এখন ছােট মাছ কেনে নিম্নবিত্তরা রুই। অন্ত্রের দৌলতে তা বেশ সস্তা। অবশ্য একটা কথা বলা দরকার আমরা বাজার থেকে কিনতে না পারলেও নিজেদের জমিতে দুটো বড় ডােবা ছিল। আশেপাশে আরাে বেশ কয়েকটা ছােট-বড় ডোবা ছিল। প্রায় বলা যায় বর্ষা শুরু হবার মাসখানে পর থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত আমরা ছিপ দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কই-মাগুর-সিঙ্গি-শােল-টাকি ধরতাম। জল কমে গেলে ফাল্গুন চৈত্রমাসের দিকে তখন ডােবাগুলাের জল সেচে মাছ করতাম। জল সেচার সময় অবশ্য তিন-চারজন প্রতিবেশী বন্ধুও থাকতাে। বর্তমানে এই মাছগুলাে খুবই মহার্ঘ্য। কয়েকদিন আগে আমাদের বাজারে ছােট পুঁটি মাছ উঠেছিল। বহুদিন পুঁটি মাছ খাইনা। বাজারে খুব একটা ওঠেও না। সেদিনদাম করায় শুনলাম দেড়শােটাকা পােয়াঅর্থাৎ ছয়শােটাকা কেজি। অবাক হয়ে ভাবলাম বর্ষাকালে ভােরবেলায় উঠে দুটো ধানের জমির মাঝের আলে এপাশ থেকে ওপাশে জল যেতে পারে এমন সামান্য কেটে একটা কাপড়ের টুকরাে মুখে আটকে দিলে ঘন্টাখানেকের মধ্যে এক কেজি পুঁটি মাছ জমা হােত। পুঁটি মাছ ভাজা, লংকাকাটা ঝােল, ঝাল, টক আরাে কত রকমের রান্না যে হােত। এখনকার ছেলে মেয়েরা বিশ্বাসই করতে চাইবে না। তখন রাসায়নিক সারের প্রচলন হয়নি তাই খেতে ডােবায় মাছের অভাব ছিলনা। শাক-সকজির স্বাদও ছিল খুবই সুস্বাদু। যাইহােক এখনকার মতাে তখনও পূজোর বড় আকর্ষণ ছিল নতুন জামা-কাপড় জুতাে। তখনকার সাথে এখনকার বড় পার্থক্য হচ্ছে যে, তখন রেডিমেড জামা-কাপড়ড়ে চল ছিল না। এখন যেমন বড় বড় শপিং মলে পৃথিবীর তাবড় নামি ব্র্যান্ডের জামা-কাপড় রেডিমেড পাওয়া যায়। আমাদের ছােটবেলায় অবশ্য ছােটবেলায় বলবাে কেন এই ক’বছর আগে পর্যন্ত কাটা কাপড়ের দোকান থেকে কাপড় কিনে দর্জির কাছে বানাতে দেওয়া হােত। ছােড়দা আমাদের দুই-ভাইকে নিয়ে গিয়ে সস্তার জামা-কাপড় কিনে দিত। দুই ভাইয়ের একই রকম কাপড়। কাপড় নিয়ে আমরা চলে যেতাম খলিফাদার (দর্জি) কাছে। একবার মনে আছে খলিফাদা আমার জামার বুকপকেটে বুকের বাঁদিকের বদলে ডানদিকে লাগিয়েছে ভুল করে। দৌড়ে গেলাম খলিফাদার কাছে। খলিফাদাকে বলতেই খলিফাদা বলল “জামা ধুইয়া দ্যাখ কেনে? ঠিক হয়ে যাইবে।” খলিফাদা জানতাে জামায় পূজোর সময় যতােই জিলিপির সিরা পাপড় ভাজার তেল পড়ুক না কেনপুজো শেষ হবার আগেনতুন জামা ধােওয়া হবে না। পূজোর ব্যস্ততায় পকেট খুলে ঠিক করে লাগানাের সময় ছিল না। তাই আমাকে জামা ধুতে বলছে। পূজোর পর জামা ধুয়ে খলিফাদাকে গিয়ে বললাম যে পকেটতাে ঠিক হয়নি। “কী বলিস”- বলে খলিফাদা জামাটা নিয়ে পরে যেতে বলল। সবচেয়ে মজার ছিল আমাদের জুতাে কেনা। একবার সদ্য সদ্য বাজারে হাওয়াই চটি উঠেছে। অনেকের মতাে আমরাও দুই ভাই হাওয়াই চটি কিনেছি। নতুন স্যান্ডেল তাও আবার পূজোর। দৈনিক একবার করে বিছানার উপরে চটিটা পরতাম তারপর বাক্সে ভরে রাখতাম। তবে পূজোর প্রথমদিন জুতাে বাচপ্পল-চটি যাই হােকনা কেন কোনরকমে পরতাম বাকি দিনগুলােতে পাদুকাহাতে নিয়ে ঘুরতাম কারণ পায়ে ফোস্কা পরে যেতাে। প্রায় প্রত্যেকেরই একই অবস্থা হত। আর একটা বিষয় অবশ্যই মজার। পূজোর চারদিন আমাদের দু-ভাইয়ের বরাদ্দ ছিল চারআনা করে এক-একেক জনের অর্থাৎ পুজোর চারদিন এক-একেক জনের এক টাকা। আমরা তাতেই খুশি ছিলাম। আর হবাে নাই বা কেন? কত খরচ ছিল ?

দু-পয়সায় একপ্লেট মটরের ঘুগনি, দু-পয়সায় একটা বড় গােল আস্ত পাপড়, দু-পয়সায় দুটো বড় সরেস জিলিপি, দু-পয়সায় একটা হাওয়াই মিঠাই, দু-পয়সায় তিলের খাজা এসবই তাে ছিল আমাদের পুজোর বিশেষ খাবার। হিসেবে করে দেখেছি তখনকার মানে ৬০ বছর আগের চারআনা এখন পঞ্চাশ টাকার সমান হবে তার বেশি তাে নয়। আধুনিকতার অন্যান্য দিক বিবেচনা করলেও আমার কাছে এখনকার ছেলেমেয়েদের পূজোর চারদিনের খরচের হিসেব মেলাতে পারি না। তবে একটা পার্থক্য বেশ চোখে পড়ে। আমরা ছােটবেলায় একটা সাইকেল না পেলেও তাে তেমনকিছু মনে হত না। কিন্তু এখন মাধ্যমিক পাশ করার পর এক লক্ষ-এক টাকা বেশি দামের মোটরসাইকেল না পেলে অনেক ছেলেই বাবা-মাকে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। আত্মহত্যা করেছে এমন দু-একটা ঘটনাও শুনেছি। খুবই পরিতাপের বিষয়। তবে একটা কথা বলতেই হবে যে, আমাদের সময় পূজোয় কিছুটা হলেও ধর্মীয় ভাবাবেগ ছিল। যা এখন সম্পূর্ণই সাৰ্ব্বজনীন সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। এটা খুবই আনন্দের কথা, এখনকার পূজোর বাহ্যবন্বর অবশ্যই বাংলার অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তা অবশ্যই বাংলার পক্ষে মঙ্গল এবার এই অতিমারীর আবহে পূজো অনারম্বর ভাবেই হয়তাে শেষ হয়। তবে আশাবাদী। সামনের বছর নিশ্চয়ই আবার ধুমধাম করে আমার পূজোয় মেতে উঠবাে।
চরৈবেতি চরৈবেতি চরৈবেতি।

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *