প্রাচীন বাংলার নদনদীঃ দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী

প্রাচীন বাংলার নদনদী

                                                          ছবিঃ গৌতম মাহাতো

লিখছেন দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী

                                 ১৩
এ ক্ষেত্রে উত্তর বঙ্গের তিস্তা নদীর তিনটি মুখ্য জল ধারা  সম্বন্ধে হান্টার সাহেবের যা বিবৃতি,  ১৭৮৭ সালে (A.D.) বিধ্বস্ত বন্যায় এই নদীটি হঠাৎ করে আগের চ্যানেলটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছল,এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ধাবিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছিল। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাস করার মতন যথেষ্ট কারণ হ’ল এই বেগবান প্রবাহ বা জলস্রোত গতিবেগ হারিয়ে গেছল এবং ধীরে ধীরে  সময়ের সঙ্গে শুকিয়ে গেছল। 
এই অবস্থায়  তিস্তা নদীর (১৯৮৭ A. D. হঠাৎ পরিবর্তনের প্রকৃত কারন হ’ল  ব্রহ্মপুত্র নদের
দ্রুত বেগে যমুনা নদীতে ধাবিত হওয়া। তবে এই যুক্তি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য  নয়। 
সম্ভবতঃ কোশী বা কৌশীকী নদীপথের  পরিবর্তন
তিস্তা নদীর থেকেও  আরও লক্ষণীয়। বর্তমানে এই নদীটি প্রবাহিত হয়েছে পূর্ণিয়া জেলার ভিতর দিয়ে এবং  এর জলরাশি রাজমহলের অনেক উপরে গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়ে, উত্তর-পূর্বে ধাবিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয় ।সেইজন্য  কোশী নদীর
গতিপথ বার বার  পরিবর্তিত হয়েছে পশ্চিম দিকে  সমগ্র উত্তর বাংলার প্রস্ত জুড়ে। 

সেই সময়  যখন কোশী নদী আর মহানন্দা  নদী
তোর্সা সাথে মিলিত হয়ে জাতিগত সীমানা তৈরী  করেছিল দক্ষিণে  বসবাসকারী সভ্যদের আর 
উত্তরে কচ্ছ,কিরাতদের মধ্যে। 
এটা লক্ষণীয়, বিগত  ৪০০/৫০০ বছর ধরে এই
বাংলায় মুখ্য নদনদী গুলি বার বার তাদের গতিপথ
বদলেছে। আমরা ধারণা করতেই পারি এইসব নদ- নদী গুলি অতীতে বার বার গতি পরিবর্তন করেছে। 
এ ব্যাপারে ভৌগোলিক জিজ্ঞাসা থাকতে পারে। 
এই বারবার নদীর গতি পরিবর্তনে  তীর সংলগ্ন
পুরাতন, ঐতিহাসিক শহর, অনেক মন্দির, স্থাপত্য
 জলস্রোতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে । এখনও আমরা মাটির নীচে, নদী বক্ষে এই সব ধ্বংস বস্তু দেখতে পাই। 

Ref: The History of Bengal-  1943
         Dr. R. C. Majumdar

                                                            ক্রমশ…. 

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *