সু ম ন রা য়-র কবিতাগুচ্ছ
সৌমিত্রবাবু…
আমি যদি বলি আপনি অসাধারণ
আপনি বলবেন না না এ আর এমনকি
যদি জীবন নিয়ে প্রশ্ন করি
আপনি হেসে বলবেন বাজি রেখেছো কখনো
সেদিন যেমন চুরুট ধরালেন অভিনেত্রী
দেরি করছে বলে,আপনি বলবেন মল্লিকা ফ্লোরে
বড্ড মুডি,ছাড়ো ওর কথা
আবার ক্ষয়িষ্ণু সমাজকে পাশে রেখে হাঁটবেন আপনি
সেই বাংলার পথঘাট,অযত্নের ফুল এনে দেবেন
বাক,বিঠোফেন শোনার টেবিলে
সব কথা হয়ে গেলে একবার রাফটাফ বলবেন
কে তোমরা সূর্যোদয়ে প্রেমের ডিকটেশন দাও
একবার শূন্যে তাকাও
ওতো বাঁদিকে থাকবে আলগোছে
গোধূলির আলোয় যতটা দেখা যায়
ওর ঠোঁট,গ্ৰীবা,ঊরু সবই কল্পনা
খানিকটা আন্দাজে চুল ঠিক করার মতো
শরীরের প্রতিটি অন্তরাই সুর খোঁজে
অবলীলায় আপনার মতে
গল্পটা সূর্যাস্তের আমি জানি
সৌমিত্রবাবু ,তার সব কিছু ঢাকা
রোদচশমায় , আপনার মতো আমিও
দেখতে পাইনি
তফাৎটা এই যে আপনি মেকআপে ছিলেন সেদিন
আমি ছন্দহীন দুপুরে বেআব্রু
ভালোবেসে
এ এক অপূর্ব সময়
এ এক একা ক্লান্ত অসময়
মন খারাপের ঝিঁঝিঁ শুনতে হয়
হাত নাড়ে সুগন্ধি রুমাল আয় আয়
অত কাছে মৃত্যু দেখে অলক্ষ্যে গান গায়
তাকে বারেবারে ভালোবেসে পথ চলা যায়
মন খারাপের আগে ও পরে
একটা মন খারাপের আগে
দীপ্তমান আলো
চকিতে অবাধ্য হয়ে
ছুটেছে এই রাজপথে
সারাদিন টো টো…
অবশেষে কথা রেখে
সত্যি বন্ধুর অমন আস্তিনে
মুছে ফেলেছে দিব্যি
তার শেষ অভিমানটুকু
আবার ও সন্ধিতে দেখা হবে
একটা মন খারাপের পরে…
প্রেম করে যাও
এই এতো লিখি,এতো ছবি আঁকি
এই এতো বকাঝকা খেয়ে
বেখেয়াল ঠুংরি বাজাই
কখনো পাইনি তোর কুমারী জীবন
এই এক ছাদ পাখিদের ভিড়ে
এই আলোছায়া কোভিডের সন্দেহ ঘিরে
গোঁত্তা মেরে পড়ে নাতো সিংহ মার্কা ঘুড়ি
এই বার একবার ভুলে ভুলে
হিমাংশুর দোকানে পা দিলে
বলে নাতো তোর কথা কেউ
এই এতো অগোছালো থেকে
হেসেখেলে মাইনেটা নিয়ে
ডাকে নাতো পারিজাত কাকু
খুকুকে ঘুঙুর দেব এসো সোনা
প্রেম করে যাও…
আছি এবং আছি
আছি পথেপ্রান্তরে, কখনও মানুষের পাশে, অলক্ষ্যে একা
আনন্দ ভাগ করে দিতে তোমাদের
সখের বাগানে জল সিঞ্চনে আছি
এ আকাশ, মেঘলা দুপুরে, ধানশীষে
শীতভোর খেজুরের রসে বেঁচে আছি বেশ
আবছায়া শরীরটা ছুঁয়ে, জন্মভুমিতে
মৌনতায় দিন গুনে বিপ্লবে আছি
এসো তোমাদের চিনতে পারি কিনা
আতসবাজির ভিড়ে,দেওয়ালি পুতুলে
আছি কথা দেব বলে, মানুষ হওয়ার পথে
একটি হলেও হলুদ ফুলের গাছ রোপণ
করে যাব আমি
তোমরা কখনো …
তোমরা কখনো কুবাই নদীতে যাওনি,তার মায়াবী পাড়ে আলো আঁধারে বসোনি কখনো
তোমরা টুসু গান শোনোনি,ভোরের আলোয় টুসুর অভিমানী মুখ দেখোনি
তোমরা খেয়াল করোনি ধানের শিষ গুলি কি নির্নিমেষ চেয়ে আছে সারাক্ষণ
তোমরা হয়ত ভাবনি তাথৈ র মতো এত প্রাণোচ্ছল মেয়ে হয়তো নির্বাক হয়ে যাবে কোনদিন
বা সমীরণে র মতো ছেলে ও বলবে পথ আগলে লেটস এনজয় দাদা,লাইফে কি করলেন
তোমরা আসলে দেখার মতো করে কিছুই দেখনি
মেঘ মেঘ ছেলেটিকে ডেকে কখনো বলোনি
কোথাও এখুনি বৃষ্টি হয়ে গেলো
সে এখনো খোঁজ রাখে
এই সাধারণ ভাবটি বেশ লাগে,যেখানে ফুলগুলি সাদা কিন্তু অযত্নে যত্রতত্র,তার মন কেমন করা নেই,ন বছরের বৈধব্য বিস্মৃতপ্রায়,আবার অহিংস দর্শন সচেতন ।
এই সন্ধ্যামুখ মানসপ্রতিমাটি বরণ পর্ব সেরে অলিতে গলিতে ডিজে সজ্জিত উন্মুখ,তার আবাহন সংক্ষিপ্ত,তবে গ্ৰিনরুমে গরিমাময়,শুধু কাজল ঘেঁটেছে
এই নীল সাদা বাসস্টপে প্রথম লটারি দোকান, খেয়াল করিনি কখন লেগেছে শেষ তিনটি ডিজিট আনন্দির পোড়াহাতে,গালেতে,চিবুকে,এ তোমার এমনি লাগে নির্লজ্জ সংলাপে
এই এতোদিন পর তোদের দিয়েছি দুটি আলিঙ্গন ভোর,সেতো তার এমনি এমনি পাওয়া নিঃশর্ত জামিন,যদি রং ধরে তার অপেক্ষায়।
তোমার রুমাল
কথা দিচ্ছি পেছন ফিরে তাকাবনা কোনদিন
অপলক চেয়ে থাকবনা অজানা ভিড়ে
আহত হয়েও তলোয়ার শানাবোনা তৈমুরের মতো
কথা দিচ্ছি সরষের ক্ষেত দেখে গাইবনা আর
ফুলের আগুন লাগলো
রোদচশমায় ঢেকে নেব অবাধ্য অশ্রুধারা
কথা দিচ্ছি বেনোজল ঢুকে গেলে আল বাঁধতে রাত জাগবোনা কোনদিন
তোমার পছন্দের আইসক্রিম ধরবনা গলে গেলে
কথা দিচ্ছি ঘাসে ঘাসে পায়ে পায়ে বেয়াদবি তর্ক
জুড়বনা অযথা রঙীন
পথ শেষে ক্লান্তির ভ্রমণ না কবিতা হবে ঠিক তবে
কথা দিচ্ছি এ বসন্ত পার হয়ে যাবে ঠিক
নদীতীরে অহেতুক ঘুরে
বুকে ধরে তোমার রুমাল