শ্রী প র্ণা গ ঙ্গো পা ধ্যা য়-র কবিতাগুচ্ছ
প্রেম
কতখানি ভরে গেলে একাকী কলস
একটি পৃথিবী হয়ে যায়?
আমি তার আঙুলের ওপর একটিমাত্র আঙুল রেখেছি
তখনই কয়েকটা নদী বরষারঞ্জিত কলসে ভরেছে
সাতপাত্র অমৃত আর পাঁচখণ্ড ভূমি
অমোঘ পৃথিবী।
আবাস
দূরত্বের ভেতরে ঢুকে
বাইরে বেরিয়ে
দেখেছি অনেকবার
লগ্ন হয়ে আছি
দিগন্তরেখায়।
কোনদিনই স্পর্শ করার মত
নিকটে যাইনি।
প্রসারিত হাত শুধু
বসতি নিয়েছে
শূন্যতার ঘরে।
কথোপকথন
জলের অতলে এসো বৃষ্টি সহোদরা
আমাদের কথা আজও বাকি।
তুমি চলে গেলে আর
যেটুকু বলেছি
সেটুকু তো নেহাতই পোশাকি।
বুকের গভীরে জমে থাকে যে নির্জন
মধ্যরাতে সে তোমাকে ডাকে।
পায়ে পায়ে সরে যায় ঘুম।
আমাদের কথাগুলি ফোঁটা ফোঁটা
ঝরে পড়লে ভেজা ঘরদোরে
জানলায় সারি সারি ফুটে ওঠে
অগুরু কুসুম।
ক্যালাইডোস্কোপ
অতিক্রান্ত সময়ের ওপর পড়ে আছে কাঁচরোদ।
ক্যালাইডোস্কোপের ভেতর
গুঁড়ো আয়নায় নকশা বদল হয়।
তোমার মুখের থেকে সরে আসে দিন।
তবুও যেদিন রোদের ভেতরে মেঘ করে
তোমার পাশেই বসি মনে মনে,
হাত রাখি হাতের ওপরে
স্পর্শের ছাপচিত্র স্মৃতির ভেতরে।
তেষ্টা
যতবারই তেষ্টার সামনে দাঁড়িয়ে
জলপাত্র দুহাতে নিয়েছি ততবারই
সময় টুকরো হয়ে ভেঙে ভেঙে গেছে।
জলপাত্র দুখণ্ডে শয়ান।
তৃষ্ণার জলটুকু নামে না গলায়
তৃপ্তির তপ্তগ্রাস পিছনে রেখেই
বার বার চলে যেতে হয়।
সামনের রাস্তা জুড়ে আকন্ঠ অতৃপ্তি সব
সাদা সাদা খই হয়ে
গড়াগড়ি দেয়।
সেতু
সম্পর্কের সেতু নড়বড়ে হলে
ভাঙনের শব্দ থেকে জল পড়ে।
পারাপার বন্ধ হলে
এপারে দাঁড়াই
ওপার ঝাপসা হয় ঘন কুয়াশায়।