মু স্তা ফা কো জ-র কবিতা (অনুবাদ: রু দ্র কিং শু ক)

পরিচিতিঃ রুদ্র কিংশুক কবি, অনুবাদক এবং ছোটোদের লেখক। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। ডক্টরেট করেছেন কালচার স্টাডিজে। প্রকাশিত গ্রন্থ একাধিক। লিখেছেন ও লিখছেন নানান লিটল ম্যাগাজিনে এবং একাধিক বানিজ্যিক পত্র-পত্রিকাতেও।

 

মু স্তা ফা   কো জ -র কবিতা

অনুবাদঃ রু দ্র   কিং শু ক

 

[মুস্তাফা কোজ (Mustafa Koz, 1959) আতাতুর্ক ইনস্টিটিউটের তার্কিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে স্নাতক। বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জার্নালিজম এবং ল —এই বিষয়গুলি নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর রাজনৈতিক বিষয়ে নানান প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কবিতার বিষয় ও প্রকরণে তিনি তুর্কি কবিতায় এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কবিতায় অপ্রচলিত শব্দ, অস্বাভাবিক বাক্যবিন্যাস এবং অভিনব চিত্রকল্পের সমাবেশ ঘটেছে।]

 

পথ

কেউই সূর্যের দিকে ফিরতে পারে না;
আমাদের সবার একটা গোপন জঙ্গল থাকা উচিত,

কিন্তু এই পথ কোথায় ছিল?

জলের ভেতরে জল বয়ে যায়,
ওটা কি দরজা, না আমাদের হৃদয় বাতাসে শব্দ করছে ?

আমাদের সবার একটা গোপন ঝরনা থাকা উচিত,

কিন্তু এই পথ কোথায় ছিল?

ভালোবাসা কি রক্তাক্ত স্তূপ,
বরফ চিবানো, কোন কারণ ছাড়াই যা আসে যায়?
আমাদের হৃদয়গুলোই বাতাসে শব্দ করছে একজন কবির জীবন ছন্দ ও কারণ ছাড়া,

কিন্তু এ পথ কোথায় ছিল?

 

জেগে ওঠা

তিনজন কর্মী আকাশকে মেশাচ্ছে। শীতকাল। একঘেয়েমি ভরা,
তলহীন। সব কিছুকেই অবশ্যই তার নিজের জায়গায় পড়তে হবে। কারণ
চোখই আমাদের টেবিল। হারানো কাগজ,
একটা পুরনো ডেস্কপ্যাড, একটা কালিঝুলি মাখা লন্ঠন ।
আমাদের সবকিছুই শুরু করতে হবে আবার,

সকালকে হতে হবে পেন্সিলের মতো ধারালো।

 

আবার

আমরা সমুদ্রমুখী একটা কাফেতে বসেছিলাম আমাদের উপর, মিষ্টি আকাশ
আমরা টুকরো করলাম তরমুজ, শব্দ কাটলাম
রডে বাঁধা হাইড্রানজিয়াস ফুল।

আমি বললাম তোমাকে ভালোবাসি
একটা কুটুরে পেঁচা তোমাকে ভালোবাসে।

সমুদ্র শস্যক্ষেত
আর তার মাথাগুলো ঝাড়াই-হওয়া।

শীতকালকে নিবেদিত লিরিক

 

এক

আধ- পোড়া গাছ আমাকে
দেখেছিল তোমাকে চুম্বন করছি,
আর দুটো কাক টেনে ছিঁড়ছে
গাছের একমাত্র ফল।

দুই

তোমার প্রথম মুখ যা আমি সম্মান করেছিলাম, তোমার সংকীর্ণ মুখ, তোমার চোয়ালের হাড়,
একটা ডোরিক দরজা আর আমরা আইয়োনীয়রা, আর জগৎ স্নাত সূর্যালোকে।

তিন

তোমার কূজনী ঘাড়
পিছনে তোমার ঘাড় তোমার থেকে
দূরে, পারমা শহরের একমাত্র দুঃখী পায়রা
আমি তোমায় ভালোবাসি, মনে রেখো।

 

চার

তোমার চোখ, বাগানের একজোড়া দরজা
একটা ভিতরে খোলা, অন্যটা বাইরে
কিন্তু পাশাপাশি, একই সময়ে।

পাঁচ

তুমি এখানে পোশাক খুললে, আমার জন্য নয় জগতের জন্য
তোমার অঙ্গুরীয় রত্নটি ওপাল অথবা গন্ধর্বমনিক।

ছয়

তুমি ছিলে ছোট্ট মেয়ে উড়ে বেড়ানো,
তোমার হৃদয় ছিল একটা কালো বাক্স সম্ভবত,
যা খুলবে তুমি চলে যাবার পর।

সাত

তুমি পুঁইশাক লাগিয়েছো একটা পাত্রে
সেই পাত্র যে নিজেকে বাগান ভাবে।

আট

আমি বললাম প্রতিটি পাহাড় একটি পর্বতশ্রেনীর সংক্ষিপ্তসার
আমার আনন্দ যে আমি তা ভুলিনি, এমনকি যদিও
তার অর্থ যে দগ্ধ ডালপালারাই গাছকে সবচেয়ে ভালো বোঝে।

নয়

সবকিছু বুঝতে বুঝতে আমি ক্লান্ত ,
তুমি ভাব এ জগত সঠিক ;
তুমি নও, কবিতাই
আমাকে রাতের ভেতর হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচালো।

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *