অ ম লে ন্দু বি শ্বা স-র কবিতাগুচ্ছ
সমুদ্র ডায়েরি ১০
বাটার ফ্লাই সাঁতারের মতো ঊর্মিমালা ভেংগে পড়ে
তোমার অপার কূলে। সন্ধ্যারতি যত
সঘনায়মান হতে থাকে ততই নিকষ অন্ধকারে —
ধেয়ে আসে ধেয়ে আসে তরঙ্গের মত
যেন মনে হতে থাকে দূরদিকচক্রবাল
ধরে ভেসে আসা শাদা শাদা বনহংসীদল।
যেসব অক্ষরগুলি কেবলি জলের নিচে
ডুবুরির মত তাকে আমি নিরন্তর খুঁজে আনি
ঝিনুক কুড়ানো এই সমুদ্র সৈকতে।
সমুদ্র ডায়েরি ১১
সমুদ্র গর্জন এসে থমকে থাকে অজস্র উপলখণ্ডে
দূরে ও অদূরে জ্বলে উঠলে সাঁঝবাতি।
তোমার মুখের পরে কুহক রেখার মায়াফাঁস
খুলে যেতে থাকে অনঘ আবাসে।
বড়ো বড়ো ঢেউগুলো ক্রমান্বয়ে
ভেঙে যেতে থাক রাঙা অভিমানী শ্বাস।
কূলে বাধা পাথর খণ্ডের নীল দীর্ঘশ্বাস
তোমাকে ছোঁয়নি বলে টাঙানো বৃহত্ ক্যানভাসে
চন্দ্রিমার গুপ্ত ছলাকলা লুকোনো আঁধারে।
গ্রীষ্মদহন ও মেঘমল্লার রাগানুগ
কখন যে নিরন্তর সন্ধ্যার বাতাসে
তন্দ্রালসা অক্ষরের নিচে মদালসা আশ্চর্য বুনন
চিনে নিতে ছুঁয়ে গেল দ্বিতীয় শৈশব
দহন জুড়ানো হাওয়া আছে বলে
অক্ষরে ভ্রমর ঘুরে ঘুরে নিয়েছি মৌতাত।
ব্রা–ঋতু
ফের এলো, ফিরে এলো
ব্রা–ঋতু উৎসব।
এলো যে ফাগুন রৌদ্রদাহ
মৃদু তাপে দাহিত অক্ষর।
প্রশমিত হবে সব তাপ
যদি সেই কুহুর কুহক
খুলে যায় অনিবার্য টানে —
পিটুরিয়া নাভিকুণ্ড!
প্রত্নলিপি গুহাচিত্রে
জেগে থাকে আমাদের
সুগোপন লিবিডো লহরী।
ছুঁয়ে যায়, ছুঁয়ে থাকে
স্লিপলেস ব্লাউজের
সুডৌল বাহুতে
খাজুরাহো গুপ্তনাচ।
নতুন তরঙ্গ ৯
দূরত্ব নিস্তব্ধ থাকে। তবে কেন যেন দূরগামী —
বাতিস্তম্ভ হয়ে জ্বলে থাকে এই নীলপোতাশ্রয়ে। /
রয়েছে নোঙরে বাঁধা হৃদ্তরণী খানি
তেমন ইশারা পেলে সাংকেতিক পথে
আবার ভাসাতে পারি নব্য জেলে ডিঙা।
উন্মন ঊর্মির চোখ, ফেনায়িত ডাক পেলে
কিশোর বয়স যেন আকস্মিক লাগাবে ছুট /
অলীক দরিয়া ধরে তোমার দিগন্তে।
দিগন্তের নীলপাখি জানে তার ভাষা
ভাষার মরমে থাক আমার না-বলা কথা।