হ রি ৎ   ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়-র গুচ্ছকবিতা

পরিচিতিঃ জন্ম ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার ধনিয়াখালি গ্রামে। লেখালিখির শুরু খুব ছোটবেলা থেকেই। পেশায় গৃহশিক্ষক হলেও সাহিত্যই চব্বিশ ঘণ্টার ধ্যানজ্ঞান।  প্রকাশিত গ্রন্থ  — তুমি অনন্ত জলধি (কবিতা), মধ্যরাতের সংলাপ (কবিতা), জানলা সিরিজ (কবিতা), অস্বীকারের অসৌজন্যে উড়ে যাবে আকাশ (কবিতা), চিরহরিৎ ( ই বুক), বৃষ্টিদিনে অক্ষরগান (কাব্যনাট্য), বিমূর্ততার অনন্ত প্রবাহে (কবিতা সংক্রান্ত গদ্য), দু এক পশলা মান্না (ছড়া), চার ছক্কায় শচিন (ছড়া)। সম্পাদিত পত্রিকা : ছায়াবৃত্ত, কাটুম কুটুম। বাইফোকালিজম্-এ আজ তাঁরই গুচ্ছকবিতা। 

হ রি ৎ   ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়-র গুচ্ছকবিতা

 

স্টেশন দুয়ারে দিন কয়েক 

এক

স্টেশনে পড়ে রইলো আমার ব্যাগপত্তর
দেখার নয় বলেই কেউ দেখবে না
আবার কালো বলেও নজরে আসতে পারে
যাই হোক আমি এখন একটু এগিয়ে যাই
রাস্তায় চিহ্ন দিয়ে যাবার কিছু নেই
চারপাশে সবকিছুই দেখার, ঘুরতে এলে সবকিছুই চকচকে
সকলের চোখের ওপর থাক ব্যাগ
চোখে পড়লে ভাববে কাছেই আছে কেউ
চোখের সামনে এখনও সবকিছু পুড়ে যায়নি।

দুই

আমার কোথাও যাওয়া বলতে স্টেশন
আমার কোথাও যাওয়ার আছে কিনা জানি না
আমাকে দেখে কেউ হাত তোলেনি
আমার হাত আমি নিজেই দেখি
ভয়ঙ্কর একটা বাঁক ঘুরে স্টেশনে এসে থেমে যায়

আমার একটাই যাওয়ার জায়গা
আমার একটাই যাওয়ার জায়গা তাই স্টেশনে যাই

 

চিত্রঃ ২

তিন

বেঁধে রাখার জন্যে জানলা দরজা সেটা জানতাম না
আমাদের তো কোনো জানলা দরজাই ছিল না
যে কেউ যখন তখন বেরিয়ে যেতে পারে এটাও মনে হয়নি

বাবাই প্রথম কাউকে কিছু না বলে হারিয়ে গেল
বাবাকে তো কোনোদিন দেখতেই পাইনি
কোনোদিন কাছে এসে থামেনি, ভুলে দাঁড়ায়নি
হারিয়ে যাওয়ার জন্যে জানলা দরজা মাথায় আসেনি
দুয়ারে চোখ তুললে বটগাছ, তার পাশে চোদ্দদীঘি
বাসন মাজতে গিয়ে মা জলে বাসা বাঁধলো

হাওদাখানা স্টেশনের লোক
চারপাশ দিয়ে হুড়হুড় করে নেমে কোথায় হারিয়ে যায়

চার

মাঝরাতে খাতার পাতার অক্ষরেরা কথা বলে ওঠে
কারও গলাই চিনতে পারি না
অথচ আমার হাতেই তৈরি এক একটা শরীর
আমি চিনি বলেছি আর তারাও বিশ্বাস করে এসেছে

সমস্ত রাত অন্ধকারে হাতড়াই
মনে করার চেষ্টা করি প্রথম কোথায় দেখা হয়েছিল
একের পর এক স্টেশন পেরিয়ে যায়
বেশিরভাগ স্টেশনই প্রায় কুয়াশাজড়ানো
এখানে ওখানে দু’একটা মাত্র আলো চোখে পড়ে
যারা আরও গভীর অন্ধকার ছড়িয়ে যায়।

পাঁচ

মুষলধারে বৃষ্টি নামল
পুরো ভিজে গেল দুটি পা
এখন সারা বারান্দায় পায়ের জলছাপ

আমরা যারা বৃষ্টি চেয়ে জানলা খুলেছিলাম
তাদের হাত এখনও পুরোপুরি শুকনো
অথচ সবার বৃষ্টির গল্প শোনা

বৃষ্টিকথা মানে শুধু জল?

অনেক দূরে বসে থাকা প্রায় স্টেশনের কাছাকাছি
ভোরের বারান্দায় জলছাপ নিয়ে রোদ্দুর গুনগুন করে
কোনো এক বৃষ্টিদিনেই তার স্টেশন পাওয়া।

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *