গৌ ত ম ম ণ্ড ল–র ধারাবাহিক উপন্যাস
হেঁতালপারের উপাখ্যান(১৬তম পর্ব)
সাপ
“পারি পইকার ই সারৌ কুয়াদা লালা রুকশারে/সারাপা আফত ই দিল বুদ সাব যায়কি ম্যাঁয় বুদাম” আমির খুসরু
(আমি অবাক হয়ে যাই গতরাতে আমি কোথায় ছিলাম/ আমার চারপাশে অর্ধমৃত প্রেমের শিকারেরা যন্ত্রণায় ছটপট করছিল)
গোবিন্দ মালোর ব্যাটাকে সাপে কেটেছে। মাধবী, গোবিন্দের বৌ কেঁদেকেটে আকুল। মাথা খুঁড়ছে মাটির দেওয়ালে। মহল্লার লোক জুটে গেছে গোবিন্দের উঠানে। বছর পাঁচেক বয়েস হবে বাচ্চাটার। উনুনের ধারে খেলা করছিল। শিলনোড়া নিয়ে ঠোকাঠুকি করছিল। দেয়ালের গায়ে, শিলের পিছনে চক্র বেঁধে শুয়েছিল জন্তুটা। বোধ হয় দেওয়ালে একটা গর্ত আছে। কিছু একটা তাড়া করে এখান অব্দি চলে এসেছিল সাপটা। সাপের লেজটা দেখেছে মাধবী। কিন্তু লেজ দেখে বোঝা যায় না কেউটে না দাঁড়াস। এদিকে এই মহল্লায় কেউটে সাপের যা উৎপাত তাতে সবার দৃঢ় ধারণা কেউটে সাপই ছোবল দিয়েছে মাধবীর ব্যাটা গম্বাকে।
তরুবালা ঠাকমা নিমপাতা খাওয়াচ্ছে গম্বাকে। সে খেতে চায় না। নিমপাতার স্বাদ এমনিতেই তেতো। সবাই বলে বিষধর সাপ কামড়ালে নিমপাতার স্বাদ মিষ্টি হয়ে যায়। আজ অব্দি কার মুখে নিমপাতা মিষ্টি লেগেছে কেউ খবর নিয়েছে কি না জানা নেই। আহত জায়গায় নুন ঘসে দিচ্ছে আমার মা। নুন ঘসে দিলে নাকি বিষক্রিয়া কমে যায়। কিন্তু এমন করে আজ অব্দি কে বেঁচেছে জানি না। ভীড়ের মধ্য থেকে কেউ একজন বল্লে “মন্টু সাউকে খবর দে”। আমি দৌড়ে গেলুম মন্টু সাউর কাছে। মন্টু সাউ ঠিক গুনীন নয়, কিন্তু দাঁতের দাগ দেখে অনায়াসে বলে দেয় কী সাপ কামড়েছে। লোকটা শিকড়বাকড়ও দেয়। আবার মুখে বলে ” শেকড়বাকড় কিচুটা কাজ করে বটে কিন্তু সের্কম ভাল করার শেকড় আমি জাঁইনি বাবু”। তার শিকড়ে ভাল হয়ে যাবার পরেও লোকটা অনায়াসে বলে “আসলে সাপ কম বিষ ঢালতল, সৌজন্যে ভাল হইচে।”
আমি দৌড়ে গিয়ে সাবাড়ের বাইরে দাঁড়িয়ে চেঁচালুম “মন্টু জ্যাঠা গোওওও”
লুংগি পরা, গামছা কাঁধে বেরিয়ে এল মন্টু সাউ। কী হইচে?
গোবিন্দ দার ব্যাটাকে সাপে কাটচে।
ওহহহহ, কী সাপ, দ্যাকচে?
ক’টে তো কেউটে সাপ।
তা’লে বাপ বাহাল সেকের কাছে লিজা।
তবু তুমি একবার চলো।
আচ্ছা, চল, যাইটি।
মন্টু সাউকে নিয়ে যখন এলুম তখন উঠোনে লোকে লোকারণ্য। কেউ বলছে তেঁতুল খাওয়াতে, কেউ বলছে নিমপাতা আরো দাও, কেউ বলছে গর্ত খুঁড়ে সাপটা দেখা হোক। মন্টু সাউ এসে উঠোনে বসে পড়ে। গম্বার ডান পা নিজের কোলে তুলে নেয়। তারপর মন দিয়ে নিরীক্ষণ করে। থুতু দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে বারবার। আবার দেখে। তারপর বলে “হঁ রে বাপ, বিষাক্ত সাপ। কেউটে কামড়িছে। একে এক্ষুঁয়ী বাহাল সেকের কাছে লিজা তোন্নে, দোলায় করিয়া লিজা, হাঁটাইসনি একে।”
আমি যখনকার কথা বলছি তখন দ্বীপে বাইসাইকেল দেখার জন্যেও বাচ্চা বুড়ো সবাই বেরিয়ে আসত রাস্তায়। রুগি নিয়ে কোথাও যাবার হলে দোলাই ছিল ভরসা। দড়ির তৈরি দোলা একটা বাঁশের উপর ঝুলে থাকে। তার মধ্যে কাঁথা বালিস দিয়ে রুগিকে শোয়ানো হোত, আর সেই বাঁশের দুদিকে কাঁধ দিত দু’জন লোক। এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা হেঁটে গুনীন বা কবরেজের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হতো। যেতে যেতে পথেই মারা যেত কত জন! এই তো গত বছর পঞ্চা মালোর বৌর যখন প্রসব বেদনা উঠল, তরুবালা ঠাকমা এসে হাত ভ’রে দেখে বল্লে ” না রে বাপ হবেনি, মাথা উল্টা দিকে আছে। একে চিত্ত দলির কাছে লিজা। শিকড়ে যেদি কিছু হয়।” ঘন্টা তিনেকের হাঁটা পথ। দোলায় করে নিয়ে চিত্ত দলুইর বাড়ি পৌঁছানোর আগেই পঞ্চা মালোর বৌ যন্ত্রণায় বার তিনেক দোলা থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ল। চিত্ত দলুই বাড়ি যখন পৌঁছানো গেল অবশেষে, তখন সে আর বেঁচে নেই”। চিত্ত দলুই রেগেমেগে বল্লে “শ্লা, হারামখুরগুলা, মরা লোককে ল্যাসসু?”
যাইহোক, পবন পাত্রের বাড়ি থেকে দোলা এনে সাজানো হোল। বাঁশের একদিকে আমি আর একদিকে নুনা কাঁধ দিল। গোবিন্দ আর তার বৌ মাধবী আমাদের সংগে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়াতে লাগল। বেরোবার মুহুর্তে কোথা থেকে হাজির হোল মনি মণ্ডল। ” ওওও বাপ, কী হইচে রে? ঝন্টু আসসে?” তাকে বোঝানো মুশকিল। একবার শুরু করলে থামতে চায় না। দোলার সামনে ঘিরে দাঁড়ায় বারবার। তাকে সরাতে গিয়ে বিপত্তি। কে একজন এমন ঠেলে দিল, পড়ে গিয়ে তার নাক থেকে রক্ত বেরোতে শুরু করল। শেষ অব্দি মন্টু সাউ তাকে ধরে নিয়ে জোর করে বসিয়ে নাকে ভেরাণ্ডা গাছের আঠা লাগাতে লাগল। আমরা দেরি না করে পা চালালাম।বাহাল সেকের বাড়ি এখান থেকে আনুমানিক ঘন্টা আড়াইর হাঁটা পথ। রোদের তাত মাথার উপর তখনই আগুনের মত ছ্যাঁকা দিচ্ছিল। গোবিন্দের হাতে একটা জলের মগ। দীর্ঘ পথ। তাই জল রাখতে হয়েছে সংগে। রুগির সংগে জল রাখাটা খুব জরুরি। অন্তত পথেও যদি মারা যায়, তাহকে একটু জল খেয়ে মরবে। মাঠের হাঁটা পথ যে ধরবো তার উপায় নেই। জল জমে গেছে। রাস্তায়ও হাঁটতে হচ্ছে খুব সাবধানে। কাল রাত্রেও বৃষ্টি হয়েছে মুষলধারে। এখন বর্ষাকাল। বৃষ্টি হওটাই স্বাভাবিক। সকাল থেকে বৃষ্টি নেই। কিন্তু কালো মেঘের ভিতর দিয়ে যে চড়া রোদ উঠেছে তার ঝাঁঝই বলে দিচ্ছে আবার মেঘ নামল বলে।
জেটি খালের বাঁক ঘুরে নেয়েদের বাড়ি পেরোতে পারলাম না, তার আগেই বৃষ্টি এল ঝরঝরিয়ে। পাশেই রুইদাসদের চামড়া শুকানোর জন্য একটা চালাঘর বাঁধা আছে, সেখানেই ঢুকে পড়লুম।
ঘামে বৃষ্টিতে ভিজে একশা হয়ে গেছি। বাঁশের উপর একটা চাদর দিয়ে রেখেছিলুম। গম্বা ভেজেনি। চাদর খুলে গম্বাকে দেখলুম। সে নির্বাক। বোধ হয় মৃত্যুভয়ে তার কথা হারিয়ে গেছে। তাকে জল খাওয়ালুম। নিজেরাও জল খেলুম। নুনার ডান কাঁধে চামড়া উঠে গেছে। আমার কাঁধের অবস্থাও ভাল নয়। বৃষ্টি ক্রমশ হালকা হোল। দলার উপর চাদর দিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লুম। সদ্য বৃষ্টি হওয়া মাটির রাস্তায় পা’র টিপ থাকে না। হড়কে যায়। নখ টিপে টিপে যেতে হয়। নখের গোড়ায় বোধ হয় রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। এর মধ্যে নুনার পা ভাঙা শামুকের উপর পড়ে কেটে ফালা হয়ে গেছে। কাদা রাস্তায় পায়ের পুরু কাদা ভেদ করে রক্ত বেরিয়ে চিহ্ন রেখে যাচ্ছে।
যখন পৌঁছালুম তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। বাহাল সেক তেলের শিশি নিয়ে বসেছে, স্নানে যাবে বলে। ধান ভাঙার জন্য একটা ঢেকি উঠোনে, সেখানেই একটা চালাঘর। বাহাল সেক ইংগিত করে ওখানেই দোলা নামাতে বল্লে। দোলা নামিয়ে চাদর খুল্লুম। বাহাল সেক জিজ্ঞেস করে “কী হইচে?”
সাপে কাটচে, চাচা।
ওহহহ, কী সাপ, দ্যাকচু?
না চাচা, ল্যাজ দেখিয়া মনে হয় কেউটে সাপ।
অহ।
বাহাল সেক উঠে ঘরে যায়। একটা ঝোলা নিয়ে আসে। তারপর গম্বার কাছে এসে মাটিতে বসে পড়ে।
উঠিয়া বুস বাপ।
গম্বা উঠে বসে।
কদবা কামড়িচে?
আমি বল্লুম “তা, সকায়ের দিকে হবে।”
অহ।
কামড়ানোর জায়গাটা দেখে বাহাল সেক।
হুম, কেউটিয়া কামড়িচে।
গোবিন্দ মাধবী ফুঁপিয়ে উঠে। তাদেরকে সামলানোর জন্য একটু দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলি নুনাকে।
তিন চার রকমের শিকড় বের করে বৌমার হাতে দেয় বাহাল সেক। শিলে বেটে আনে সে। বাহাল সেক গম্বাকে খাইয়ে দেয়।
হে আল্লা, তবিয়ত করে দাও মেহেরবান।
বাহাল সেক মন্ত্র পড়তে থাকে। কাঁধের গামছা পাক দিয়ে অর্ধেক করে ভাঁজ করে। সাপে কাটা ক্ষতস্থানের উপর মারতে থাকে। গম্বা এক পা শুইয়ে, এক পা হাঁটু মুড়ে বসে আছে। তার চোখ মুখ বিস্ফারিত। কিছুক্ষণ এভাবে করার পর, বাহাল সেক কত গুলো কাঁচা পাতা তুলে আনে বাড়ির পিছন থেকে। হাতে দ’লে লাগিয়ে দেয় ক্ষতস্থানে। তারপর গম্বাকে বলে পা সরিয়ে আরাম করে বসতে।
কী দ্যাখল চাচা? আমি জিজ্ঞেস করি।
বাহাল সেক আমার দিকে তাকায়। তারপর বলে “কইটি দাঁড়া”
উঠে সামনের মাঠ দিয়ে হেঁটে মাজারে যায়। ফিরে আসে হাতে একটু খানি মাটি নিয়ে। সেটা গম্বার কপালে চন্দনের মতো লাগিয়ে দেয়। হাত মাথায় মুছতে মুছতে বলে “তবিয়ত হইছে, বুঝলু ব্যাটা?”
আমি আনন্দে প্রায় কেঁদে ফেল্লাম। নুনাকে ডাকলাম। সে গোবিন্দ মাধবীকে নিয়ে এল। বল্লুম “গম্বা ঠিক হইচে রে”
গোবিন্দ মাধবী কেঁদে কেটে বাহাল সেকের পায়ে পড়ে গেল।
গম্বা হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরল।
বর্ষাকালে গঙ্গাবুড়ির ঘাট অন্যরকম হয়ে যায়। ডেলি ফিশিং করে যে সব নৌকা তারা এখানে সন্ধ্যার সময় আসে, ঘাটে নৌকা বেঁধে রাখে। নৌকায় রান্না করে। অন্তত বিশ ত্রিশটা নৌকার বোম্বার আলো দেখা যায়, লোকজনের কথাবার্তা শোনা যায়। রান্নার শব্দ আসে, ইলিস মাছ ভাজার গন্ধে ম’ম করে গোটা এলাকাটা। ঘাটে বসে বোঝা যায় না কোন নৌকাটা কার। শম্ভু ডেলি ফিশিং এর নৌকায় উঠেছে এ বছর। তার নৌকাও এই ঘাটেই কোথাও না কোথাও আছে। দেখতে পাচ্ছি না। জোয়ারের জল উঠে এসেছে। শম্ভুর নৌকাটা খোঁজার চেষ্টা করছি। পাচ্ছিলাম না।
একটা ঘাসের চাঙড়ের উপর বসে পা ঝুলিয়ে রেখেছি গাঙের দিকে মুখ করে। আকাশে অসংখ্য নক্ষত্র। চাঁদ নেই। মৃদু বাতাসে জলের শব্দ কানে আসছে। বাঁধ থেকে একটু দূরে পারসে মাছের ঝাঁক খেলা করছে। খিলখিল করে ফরফরাস জ্বলে উঠছে থেকে থেকে। লুথিয়ানের মাথার উপর দিয়ে হরিপুরের ফিশারির আলো দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ শম্ভুর কন্ঠস্বর শুনতে পেলুম। একেবারে কাছেই একটা নৌকা থেকে ভেসে আসছে। শম্ভু গান করছে গলা ছেড়ে ” পরাণ মাঝি রেএএএএএ,অকূল দরিয়ায় আমি যাই যে ভেসে, আমার আপন নাই, পরও নাই, এই আমিও নয় রেএএএএএ।” অবাক হয়ে গেলুম। এ গান কমল দলুই গাইত আর বলত, “জীবনে কউ কারুর না, এই আমিও আমার না। এই আমি শ্লা,আমার খাবে আমার পরবে, ভাবে লোকের কথা”। একটা ঠাণ্ডা স্রোত খেলে যাচ্ছে গোটা পিঠ জুড়ে, কমল দলুইর গান শম্ভু গাইছে! সাময়িক বিষ্ময়াবেশ কাটিয়ে ডাক দিলুম ” শম্ভু রেএএএএএএএএএএ”
কে রেএএএএ,অপু উ উ উ উ উ?
হঁ রেএএএএএএ।
যাইটি বুসসসস।
আবার গান করছে শম্ভু। “আমার খেলি, আমার পরলি ভাবলিনা আমারে, পরাণ বন্ধু রে,অকূল দরিয়ায় আমায় ডুবাইলি রেএএ”
আরো অনেকটা সময় কেটে গেল। শম্ভু আমাকে ডাকতে ডাকতে নৌকা থেকে নেমে এল।
হাতে কী?
দ্যাখ।
দেখলুম একটা থালা অন্ধকারে চকচক করছে। হাত দিয়ে দেখলুম থালা ভর্তি ইলিশ মাছের ভাজা।
অত মাছ?
তুই খাবু তো।
অত?
হঁ।
তুইও খা না।
আছে অনেক। তুই খা না।
আমি অন্ধকারে মাছের ভাজা খাচ্ছি আর শম্ভুকে দেখার চেষ্টা করছি। দেখতে পাচ্ছি না।
শম্ভু
হঁ
ভাল আছু?
হঁ রে, শুঁউ, জুতা কিঁইছু?
হঁ, এই তো পরিয়াছি।
শম্ভু অন্ধকারে একপাটি জুতোয় হাত দিয়ে নেড়ে চেড়ে বল্লে ” ভাল হইচে, নীল রং তো?”
হঁ, তুই তো নীল কিঁইতে কইলু।
হঁ
নীল রং তোর খুব ভাল্লাগে, না?
হঁ
একটু থেমে বল্লে “নীল রং গৌরিকে যা মানায় না!”
কবি যাবু, শম্ভু?
যাবো, অউ গনটার শেষে।
শুঁউ, অন্ধকারে আর বুসতে হবেনি। তুই ঘর যা। দাঁড়া একটু বুস।
নৌকায় উঠে শম্ভু একটা ইলিশ মাছ আনল।
অউটা চঞ্চলী বৌদিকে দিয়া কইবু ঠাকমাকে য্যানো অর্ধেকটা দ্যায়।
আচ্ছা।
ইলিশ মাছটা হাতে করে বাঁক ঘুরে চন্দ্রানীর ঘাটের দিকে যাচ্ছি।
কে রে বাআআআপ, ঝন্টু?
কাছে গিয়ে অনুমান করলাম মনি জ্যাঠা বসে আছে। পাশে আর একজন কেউ। জিজ্ঞেস করলুম “আর কে?”
আমতা আমতা করে বল্ল “আআআমি”
গলার স্বর শুনে বুঝলাম চঞ্চলী বৌদির ব্যাটা। তুই ঘর যাবুনি?
দাদুকে লিয়া যাবো। না’লে রাত্রে অউঠি রয়াবে।
অহ, কদবা যাবু?
একটু পরে।
অহ।
চন্দ্রানীর ঘাট ফেলে খালের পাড় ঘুরে চঞ্চলী বৌদির ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ালুম। ভাঙা গরান বাতার কবাট। ভিতরে উঁকি মেরে দেখলুম ভানু বাগ, উলংগ চঞ্চলী বৌদিকে কেউটে সাপের মতো পোঁচ দিয়ে ধ’রে বুকে মুখ গুঁজে দিয়েছে। চঞ্চলী বৌদি অস্ফুট কাঁপা কাঁপা স্বরে বলছে “কাকা, লাগেটে গো, লাগেটে গো, মনে হয় কাটিয়াল গো।” এক সময় ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে…
ক্রমশ…
আগের পর্বটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
গৌ ত ম ম ণ্ড ল-র ধারাবাহিক উপন্যাস–হেঁতালপারের উপাখ্যান(১৫তম পর্ব)