সাময়িক মুক্তির স্বাদে(প্রথম পর্ব)-রুহুল আমিন

রুহুল আমি, পেশায় একজন শিক্ষক। এই শিক্ষকতার মাঝেই বেরিয়ে পড়েন বাংলা তথা ভারতের আনাচে-কানাচে। তাঁর কলমের কখনও ছবিতে কখনও লেখায় সেজে ওঠে নিজস্ব ভাবনা। তেমনই ভাবনায় আজ থেকে সেজে উঠতে চলেছে বাইফোকালিজম্-র পাতা।

সাময়িক মুক্তির স্বাদে(প্রথম পর্ব)

রু হু ল   আ মি ন

 

বেড রুম – থেকে ড্রইং রুম, ড্রইং রুম থেকে – কিচেন, কিচেন থেকে – ছোট্ট ঘর চরকির মতো আট মাস থেকে ঘুরছি। ভার্চুয়াল জগতে সামাজিকতা রক্ষা করে চলছিলাম। এক চিলতে ছাদ আর ছাদবাগান ছিল আমাদের স্বর্গ। হঠাৎ হুজুগের বসেই চিরো দা অর্থাৎ চির রঞ্জন সামন্ত ও মৌসম দা অর্থাৎ মৌসম মজুমদারের উদ্যোগে আমরা বেরিয়ে পড়লাম অযোধ্যা পাহাড় হয়ে বড়ন্তী-র দিকে।

    সূর্য মহারাজ চোখ খোলার আগেই আমাদের চোখ খুলে গেল অদৃষ্ট আনন্দে মুক্তির টানে। আদি যাকে ডাকলে গোটা ঘর উঠে গেলেও এপাশ ওপাশ ফিরে বেলা আট টা পর্যন্ত যে ঘুমায় সেও আজ উঠে পড়েছে আমাদের চুপি চুপি পায়ের শব্দে ।

     আমরা সকাল ছটায় উঠে পড়লাম চিরো দা’র গাড়িতে। আয়ুস, শ্রী ও মুনমুন দির চোখে মুখে তখন আনন্দের ছোঁয়া লেগে আছে। চিরো দার অকৃত্রিম অভিনন্দনে আমরা আপ্লুত। আমাদের সারথি রজত।

মাঝরাতে ই রওনা দিয়েছে আমাদের সকলের হৃদয়ের মানুষ মৌসম দা ও সুপর্ণা দি। সঙ্গে আমাদের ছোট্ট দুই রাজকন্যে রাধিকা ও ঋতিকা । আরো একজন নতুন সদস্য আজ আমাদের দলে এন্ট্রি করেছেন , নাম শশাঙ্ক শাস্ত্রী , পুরো নাম শশাঙ্ক সামন্ত।

আমাদের আগে আগেই মৌসম দা রা তাঁতি গেরিয়ার মাঠের পাশে উপস্থিত । আমরা পৌঁছাতেই দপ করে জ্বলে উঠলো ভ্রমন মনের চেপে রাখা আনন্দ । শশাঙ্ক দার পাঁচ বছরের ছেলে অঙ্কন আজ মা ও সদ্য আগত বনুকে ছেড়ে আমাদের সঙ্গী। হই হই করতে করতে আমরা কফি খেয়ে উঠে পড়লাম গাড়িতে।আমরা বড়দের একটা গাড়ি আর চিরো দা বাচ্চা পার্টি দের নিয়ে একটা একটা গাড়িতে উঠলাম।

    আট মাসের ঘর বন্দী জীবন যে আমাদের উপর বেশ বিষময় ছাপ ফেলেছে তা কিছুক্ষন পরেই বুঝতে পারলাম। তুলি, আদি আর অঙ্কন গাড়ির দোলাতে সামান্য খাবার টুকুও উগরে দিলো রাস্তার মাঝে। একটু পরে বাতাস লাগাই যদিও আবার ছন্দে ফিরলাম আমরা সবাই। দু পাশের শাল গাছের সারি ও ঢেউ খলানো রাস্তা আমাদের বার বার অভিভূত করছিল।

ইতি মধ্যে সকলের পেটের মধ্যে শুরু হয়ে গেলো ইঁদুর দৌড়ে।বেল পাহারির বাস স্টপের চৌমাথায় রেস্টুরেন্টে র কাছে এসে দাঁড়ালো আমাদের দুটি যান। আগে থেকে অর্ডার দেওয়া ছিল খাবার। রেস্টুরেন্টের নাম কাঁচা লঙ্কা। হাত ধুয়ে বসতেই চলে এলো মুড়ি ঘুগনি আর গরম পিঁয়াজি সাথে ছোলা ও চানাচুর মিকচার। অবশেষে গরম গরম চা।

টিফিন সেরে উঠে পড়লাম আবার যে যার গাড়িতে। গাড়ি ছুটল ফাঁকা চওড়া উচু নিচু রাস্তায় দুই পাশে শালগাছের সারি ফেলে। সঙ্গে প্রাণ ভরে হাঁসি , গল্প আর গান……… চলা যাতা হু কিসিকে ধুন মে , ধড়ক্তে দিল কি তারানে লিয়ে …

আগামী পর্বে প্রান মন রাখুন …

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *