বিষ্ময়ের বর্ফিলা গ্রাম
কলমে ও ছবিতেঃ ব র্ণা লী রা য়
হিমালয় কে ঘিরে মানুষের মধ্যে রহস্য এবং বিস্ময় চিরকালের।হিমাচলের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে বিস্ময়, রাস্তার প্রতিটি কোনায় অপেক্ষা করে আছে রোমাঞ্চ। হিমাচলের এরকমই তিনটি বিস্ময়কর গ্রামের কথা বলব আজকে। স্পিতি উপত্যকার তিনটে ছোট ছোট সুন্দর গ্রাম। যারা ডিজিটাল ভারতবর্ষের থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হয়েও নিজেদের মহিমায় উজ্জ্বল। তিনটে গ্রামেরই নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে আমরা শুধুমাত্র কিভাবে গেলাম, কি খেলাম, কোথায় থাকলাম বা রাস্তার বর্ণনা এসব নিয়েই বেশি মাথা ঘামাই। কিন্তু সেই সব অচেনা অজানা গ্রামগুলো যে নিজের বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল সেই জিনিসগুলোকে খুঁটিয়ে দেখতে বা জানতে ভুলে যাই।হিমাচলের গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে আমি ভাষাহীন হয়ে পড়ি। অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি, কবি-সাহিত্যিকরা সেইসব সৌন্দর্য পাঠকের দরবারে তুলে ধরেছেন বারবার। তাই সেসবের পুনরাবৃত্তি না করে আমি আজ শুধুই গ্রাম গুলোর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করব।
কোমিক
‘কোমিক’ অন্যতম বিশ্বের উচ্চতম গ্ৰাম।যেখানে সর্বোচ্চ মোটরেবেল রোড আছে।আর আছে সর্বোচ্চ রেস্টুরেন্ট।উচ্চতা প্রায় ১৫১০০ ফিট। জনসংখ্যা মাত্র ১১৪ জন। বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসা স্বপ্নপুরী।কোমিক, আক্ষরিক অর্থ “তুষার মোরগের চোখ” (কো-স্নো-কক, মাইক-আই), স্পিতি উপত্যকার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। বিশ্বের সর্বোচ্চ গ্রাম হিসেবে খ্যাতি একটি মোটরযোগী রাস্তার সাথে যুক্ত, কোমিক স্পিতি ভ্রমণকারী বেশিরভাগ মানুষের জন্য বেশ উল্লেখযোগ্য গন্তব্য।কমিক গ্রাম লুন্ডুপ সেমো গোম্পা বৌদ্ধ বিহারের জন্য বিখ্যাত। বিশ্বাস করা হয় যে মঠটিতে ‘মাত্রে বুদ্ধ’ বা ‘ভবিষ্যতের বুদ্ধ’ আছেন, যিনি কমিক গ্রামের মানুষের কল্যাণের দেখাশোনা করেন। কথিত আছে যে, মঠটি তৈরির আগে থেকেই তিব্বতে আগেই বলা হয়েছিল যে তুষার মোরগের চোখের আকৃতির একটি মঠ
স্পিতিতে একটি পাহাড়ি অঞ্চলে নির্মিত হবে। এইভাবে, জায়গাটিকে কোমিক বা কৌমিক বলা হত, যেখানে ‘কো’ বরফ মোরগ এবং ‘মিক’ মানে চোখ।এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরচালিত বৌদ্ধ বিহার হিসেবেও বিখ্যাত, যেখানে বাইকার এবং বিশ্বব্যাপী ভ্রমণপিপাসুরা পরিদর্শন করেন। চতুর্দশ শতাব্দীর মঠটিতে রয়েছে একটি দুর্গম দুর্গ যা মাটির প্রাচীর দিয়ে তৈরি, যেখানে প্রাচীন যুগের ম্যুরাল, ধর্মগ্রন্থ এবং শিল্পকলার নিদর্শন রক্ষিত আছে।
ছোট্ট মাটির কাঁচঘেরা দোকান। কাঁচ দিয়ে ঘেরার কারনেই হয়তো দারুণ আরামদায়ক ভেতরটা। ওই ঠান্ডায় ৮-৯ ডিগ্ৰী দারুণ আরাম দিল। দুধ চা আর ম্যাগি সিম্পল মেনু। দারুণ খেতে চা-টা। একচুমুক দিয়ে দেখি কি অপূর্ব তার স্বাদ। খাওয়া হলে টাকা মিটালাম দোকানিকে। উনি মিটিমিটি হেসে জিজ্ঞেস করলেন “আপনে ক্যয়া পিয়া ?” আমরা বুঝতে না বোকার মত হেসে বললাম ‘চায়ে পিয়া’। উত্তরে উনি যেটা বললেন সেটা শুনে আমরা হতবাক। আমাদের চা-তে নাকি চা পাতাই ছিলনা। খুরমানি বলে একটি ফলের বীজ ব্যবহার হয়েছে চা বানাতে। কিন্তু ছ’জনের একজনও বুঝতে পারিনি সেটা। সত্যিই পৃথিবীতে কত কি জানার আছে। এর পোশাকি নাম ‘সি বাক থর্ন’ চা। বহুযুগ আগে থেকেই তিব্বতি আয়ুর্বেদিক ওষুধে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। গ্রামটায় দাঁড়িয়ে ভাবতে অবাক লাগলো বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটর রাস্তা এটি।যাদের কঠোর পরিশ্রম আর পরিকল্পনায় বিচ্ছিন্ন এইসব অঞ্চল জুড়ে দেওয়া হয়েছে মূল শহরগুলোর সাথে, তাদের কুর্নিশ।
ল্যাংজা
ল্যাংজা এর নাম ‘লা’ (পর্বত পাস) এবং ‘জা’ (জামা থেকে) থেকে এসেছে বলে মনে করা হয়। অন্য একটি তত্ত্ব অনুসারে, ল্যাংজার নাম ‘ল্যাং’ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে- গ্রামের মন্দির।যখন কাজা থেকে ল্যাংজার কাছাকাছি আসা যায়, এক কিলোমিটার দূর থেকে বুদ্ধের একটি সোনালী রঙের মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। লাংজ়ার বিখ্যাত বুদ্ধমূর্তি। কিন্তু সর্পিল রাস্তায় এতটাই বাঁক নিয়েছে যে কতটা বাকি সেটা আর বোঝা যাচ্ছেনা। তবে দূর থেকেই অনিন্দ্য সুন্দর উপত্যকার মধ্যে একাকী বুদ্ধমূর্তি দারুণ দেখতে লাগছে। চলে এসেছি তথাগত র পাদদেশে। সামনের মন ভুলোনো উপত্যকা মায়া সৃষ্টি করছে অবিরত। মূর্তির সামনেই যে পর্বতশ্রেণি তার নামটি বড় দুর্বোধ্য ও মজার। নাম তার চাউ-চাউ-কাং-নিল্ডা। যার অর্থ blue moon in the sky।ল্যাং, প্রাচীন গ্রামের মন্দিরটি স্থানীয়দের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে স্পিতি উপত্যকার সমস্ত দেবতারা উপত্যকার আধ্যাত্মিক স্নায়ু কেন্দ্রের মতো এখানে বাস করেন। এছাড়াও, ল্যাংজা গোম্পা নামে পরিচিত।
ছোটো ছোটো স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা হাতে ফসিল নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করে বেড়াচ্ছে। জুরাসিক যুগের সময়ে টেথিস সাগরের তলায় বসবাসকারী সামুদ্রিক প্রাণীগুলো পরে ফসিল হয়ে পড়ে। হিমালয় সৃষ্টির বহু আগের সে ইতিহাস। প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগে, হিমালয় পর্বত এবং তিব্বতীয় মালভূমি দুটি সুপারকন্টিনেন্টের (লরাসিয়া এবং গন্ডোয়ানা) টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, যা টেথিস মহাসাগরকে অদৃশ্য করে দিয়েছিল। টেথিস সমুদ্রের নীচে বসবাসকারী সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্ম আজ ল্যাংজা এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে পাওয়া যায়। আজ যদি আপনি একটি কোদাল নিয়ে যান এবং ল্যাংজার আশেপাশে যে কোনও জায়গায় খনন শুরু করেন, আপনি বিস্ময়ের জন্য একটি বা দুটি জীবাশ্ম পাবেন।এখানে মেসোজোইক সামুদ্রিক প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতির বাসিন্দা ছিল। এটা কল্পনা করা কঠিন যে এই ভূমি একটি বিশাল সমুদ্র হতে পারত!ল্যাংজা প্রত্নতত্ত্ব গবেষকদের জন্য একটি ভান্ডার। পিন উপত্যকা এবং স্পিতি উপত্যকায় বেশ কয়েকটি অবস্থান সামুদ্রিক জীবাশ্ম সমৃদ্ধ। এই জায়গাগুলির মধ্যে ল্যাংজা হল এমন একটি যেখানে এই জীবাশ্মগুলি সহজেই আবিষ্কার করা যায়। ল্যাংজাতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, অ্যামোনাইটস। এই অ্যামোনাইটস্ হল সর্পিল আকৃতির জীবাশ্ম যা জুরাসিক যুগের শেষের দিকে। ডাইনোসরদের একই সময়ে তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। গ্রামে একটি চৌদুয়া (জীবাশ্মের স্থানীয় নাম) কেন্দ্র রয়েছে। আপনি হয়তো দেখতে পাবেন ছোট বাচ্চারা বা স্থানীয় দোকানগুলিও এই জীবাশ্মগুলি আপনার কাছে 10 থেকে 100 টাকার মধ্যে বিক্রি করছে।
ল্যাংজা স্পিতি উপত্যকার জীবাশ্ম গ্রাম হিসাবে পরিচিত। ভ্রমণকারীরা স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে বাড়িতে জীবাশ্ম নিয়ে যেতে বেশি খুশি হয়ে থাকেন । ক্রমবর্ধমান টুরিস্টদের দ্বারা এটি করা হচ্ছে, জীবাশ্মগুলি নিজেই এই অঞ্চলে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা এবং ভ্রমণকারীদের অবশ্যই এলাকার মধ্যে এই জীবাশ্ম ধারণ করার গুরুত্ব বুঝতে হবে। এগুলি কেবল প্রত্নতাত্ত্বিকভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ নয় বরং এটি একটি ঐতিহ্যও। তাদের দূরে নিয়ে যাওয়া আমাদের উপমহাদেশের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক ধ্বংস করতে পারে।এই জীবাশ্মগুলির প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব উপলব্ধি করা এবং হিমালয়ের এই অনন্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্পিতির জলবায়ু কঠোর, কিন্তু উপত্যকা প্রাচীন ঐতিহ্য, রীতিনীতি এবং কারুশিল্পের দ্বারা উজ্জ্বল। প্রাচীনকালে, জলবায়ু এবং কঠিন ভূখণ্ডের কারণে, স্পিতির বাসিন্দারা বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে বাস করত। এই বিচ্ছিন্নতার কারণেই তারা তাদের সংস্কৃতি এবং স্থানীয় কারুশিল্প সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল।তেমনি একটি প্রাচীন শিল্পকর্ম হল জামা মৃৎশিল্প, যা ঐতিহ্যগতভাবে ল্যাংজা গ্রামের প্রধান পেশা ছিল। মৃৎশিল্পের এই ঐতিহ্যগত রূপটি স্পিতি উপত্যকায় খুব ভালোভাবে গড়ে উঠেছিল, কারণ এই অঞ্চলে হলুদ এবং কালো মাটির সহজলভ্যতা।বিভিন্ন গৃহস্থালি ব্যবহারের জন্য পাত্র তৈরির প্রয়োজনীয়তা জন্ম দেয় জামা মৃৎশিল্পের। যদিও এখন ইস্পাত, প্লাস্টিক এবং চীনের পণ্য উপত্যকায় ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। মৃৎ শিল্পের কারিগরদের আলংকারিক পাত্র, প্রদীপ এবং অন্যান্য শিল্পকর্ম তৈরিতে বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করেছিল। ল্যাংজার কিছু মৃৎশিল্পী তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শিল্পকর্মটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন এবং এখনও এটি অনুশীলন করেন। যদিও বর্তমানে ল্যাংজার পেশার মূল উৎস কৃষি।
হিক্কিম
কাজা থেকে ঘুরে নেওয়া যায় স্বল্প চেনা অথচ বিশেষ একটা গ্রাম।নাম হিক্কিম।এখানে বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতম পোস্ট অফিসের (১৪,৪০০ ফুট’)দেখা মিলল৷ কাজা থেকে হিক্কিমের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। হিক্কিমের বেশীরভাগ মানুষই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। ৪৪৪০ মিটার উঁচু এই গ্রামে কয়েক ঘর পরিবারের বাস।নানা কারণেই হিমাচলের এই দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলো বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্র। আর হিক্কিমকে নিয়ে আকর্ষণ হল বিশ্বের সবচেয়ে ডাকঘরটি এই গ্রামেই অবস্হিত। এই এলাকা অত্যাধিক তুষারপাত এর কারনে ছয় মাস পুরোপুরি নিশ্চল থাকে। এখানখার গ্রামবাসীরা ঘর বানানোর জন্য পাথর ব্যবহার করেন।এখানে পাথর সহজলভ্য,আর তাছাড়া পাথরের তৈরি বাড়ি প্রবল ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। বাড়িগুলো সংঘবদ্ধ ভাবে একই জায়গায় অবস্থিত।এইসব মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই খুবই সংঘর্ষময়।বেশিরভাগ মানুষই কাজের খোঁজে শহরে যান।যারা আছেন তাদের প্রায় সবারই জীবিকা ভেড়া প্রতিপালন।রুক্ষতার মাঝে কিছু চাষজমিন আছে নিত্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য।ছোট হলেও হিক্কিম একটা সাজনো গোছানো গ্রাম।
এবার আসি হেক্কিমের সেই বরফিলা ডাকঘরের গল্পে।এই ডাকঘর ভ্রমনপিপাসুদের কাছে বিশেষ আকর্ষনীয়। ডাকঘরের একজন মাত্র পোস্টমাস্টার আছেন।১৯৮৩সালে এই পোস্টঅফিসের সূচনাকাল থেকেই তিনি এখানকার একমাত্র কর্মী তথা পোস্টমাস্টার। জেনেছিলাম হিকিমের পোস্টমাস্টারের নাম রিনচেন চেরিং।ঢুকে পড়লাম ডাকঘরের ভিতর। তার সাথে টুকটাক গল্প করতে করতে রকমারি ছবি দেওয়া পোষ্ট কার্ড চোখে পড়লো।মনে হল মন্দ হবে না যদি এখান থেকে নিজের বাড়ির ঠিকানায় একটা চিঠি পাঠাই।যেই বলা সেই কাজ লাহুল স্পিতির স্মৃতিস্বরূপ পাঠিয়ে দিলাম একটা পোস্টকার্ড নিজের ঠিকানায়।।স্পিতি ভ্যালীর চমৎকার সব ছবি দেওয়া পোষ্টকার্ড টিকিট সহ পাওয়া যাচ্ছে এই ডাকঘরে।ডাকঘরের বাইরের দেওয়ালে আটা ইন্ডিয়ান পোস্টের সাদা লাল বোর্ড পিনকোড ১৭২১১৪। পরে ।হিক্কিম থেকে চিঠি পায়ে হাঁটা পথে যায় কাজা; সেখান থেকে রেকং-পিও হয়ে সিমলা। সিমলা থেকে ট্রেনে কালকা, সেখান থেকে বাসে দিল্লি। তারপর সারা ভারতবর্ষে।এই ডাকঘরে চিঠি আনা নেওয়ার জন্য দুজন মাত্র রানার আছে। যাদের চিঠি আনা নেওয়া করার জন্য ৪৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। যেসব টুরিস্ট কাজ়া থেকে হিক্কিম আসেননা, সোজা মানালি চলে যান তারাও কাজ়ার দোকান থেকে পোস্টকার্ড কিনে নিয়ে কিংবা কিনে দোকানদারকে সেগুলো হিক্কিম থেকে পোস্ট করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে খুশি মনে ঘরে ফেরেন । তবে বিশ্বের সর্বোচ্চ ডাকঘর থেকে নিজে পোস্ট করার আনন্দ ও রোমাঞ্চ একদমই আলাদা অনুভূতি।
জনবিরল একটা গ্রামের এক কোণে একটা পাথরের তৈরি পোস্টঅফিস।একলা এক পোস্টমাস্টার বসে থাকেন কখন কেউ চিঠি নিয়ে আসবে পোস্ট করতে কিংবা সেভিংস একাউন্টের কোন এক গ্রাহক আসবেন তার ডাকঘরে সেই অপেক্ষায়। এই হিক্কিম গ্রামকে আবার বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভোটকেন্দ্র হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এই কারনে এই গ্ৰামটি ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডে’ জায়গা করে নিয়েছে।পোস্টমাস্টারসাহেবের কাছেই শুনছিলাম একবার নাকি ভোটের সময় মাইনাস ১৬ ডিগ্ৰী সেলসিয়াসে তাপমাত্রাতেও ১৯৪ জন ভোট দিয়েছিলেন।
হিক্কিমসহ আশেপাশের গ্রামগুলো আরও একটা বিশেষকারণে উল্লেখযোগ্য।এখানে ট্রায়াসিক-জুরাসিক যুগের প্রাচীন ফসিল – আমোনয়েড, ট্রাইলোবাইট ইত্যাদি পাওয়া যায়। এ যেন এক অন্য ভারতবর্ষ। ডিজিটাল ভারতের বাইরে প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক ছবির মতো গ্রাম।
বর্ণালীর অন্যান্য লেখাগুলিঃ