বাংলার ধর্ম শাস্ত্রে উৎসব তথ্য–লিখছেন দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী

                           

           বাংলার ধর্ম শাস্ত্রে উৎসব তথ্য
               ( Bengal in Holy Writ)

                                ১৫

                                                                                                ছবিঃ গৌতম মাহাতো

লিখছেন – দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী

 বাংলার ঐতিহাসিক স্থানগুলির উল্লেখ নেই
বেদের স্তব গানে (  Vedic hymns)  । এই প্রান্তে অতীতের আর্য গায়কদের বাস স্পষ্টতই কম ছিল। 
 ঐতরেয় ব্রাহ্মণ তে ব্রহ্মবাদীগণ( আর্যগণ) এই সব অঞ্চলের লোকেদের সম্পর্কে অত্যন্ত নিন্দাসূচক
মন্তব্য করিতেন।  এই সব অঞ্চলেরলোকেদের 
অসুর অর্থাৎ দানবগোষ্ঠীসম্ভুত বলিতেন। 
বৈদিক যুগের শেষ দিকে বাংলাদেশে আর্য সভ্যতা
ও আর্যজাতির বিস্তারের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়।  বৈদিক যুগের প্রথমদিকে আর্যরা এই বাংলাদেশের
সহিত পরিচিত ছিলেন না।  ঋকসংহিতায় বাংলাদেশের নাম  নেই।  তাহার পরবর্তী কালে
অথর্ববেদে বাংলাদেশের কোন উল্লেখ না থাকলেও 
পূর্বাঞ্চলীয় অধিবাসীদের (অঙ্গ, মগধ প্রভৃতি অঞ্চলের লোকেদের সম্পর্কে  নিন্দাসূচক মন্তব্য করতেন। অন্ধ্র,, পুন্ড্র, শবর প্রভৃতি জাতিকে ঐতরেয় ব্রাম্মণে ‘দস্যু’ বলিয়া বলিয়া বর্ণনা করেছেন। 
‘বঙ্গ’ শব্দের প্রাচীনতম উল্লেখ ঋগ্বেদের  ঐতরেয় আরণ্যকে (২ । ১  । ৩) দেখতে পাওয়া যায়। 
“ইমা: প্রজাস্তিস্রোৎ অধ্যায় মায়ং স্তানীমানি বয়াংসি।
বঙ্গাবগধাশ্চেরপাদান্যান্যা অকর্ম ভিতো বিবিশ্র ইতি। “
“Among such folks  we find mention of the Pundras. Pundranagara, the capital city of this ancient people, is proved by epigraphic evidence to have been situated in the Bogra district of the Northern Bengal. 
Some writers have traced the name of the
vangas, another early Bengal tribe, to the Aitareya Aranyaka. In the text occur the
‘VayansiVangavagadhas-Cerapadah’. The
expression vangavagadhah has been
emended  to vanga-Magadhah, that is the 
People of Vanga-Magadhah and Magadha. The Aranyaka refers to them as folks who were  guilty of transgression. …………. … 
The first unambiguous references to Vanga-Magadhah occur in the ancient
epics and the Dharmasutras. “
এই সব অঞ্চলে আসিবার ফলে যে-সকল  আর্য
পতিত আর্যে পরিনত হয়েছিল তাহাদের মধ্যে
পৌন্ড্রগণের ও উল্লেখ আছে।  এই থেকে  অন্ততঃ
এটা প্রমাণ হয় যে, ধর্ম শাস্ত্রের যুগের পূর্বে ই  আর্যগণ বাংলাদেশে বসতি বিস্তার শুরু করেছিলেন। প্রামাণ্য হিসেবে এটা তো বলা যায়
আমাদের রামায়ণ ও মহাভারতে  বাংলাদেশের কথা উল্লেখ আছে। এই দুই মহাকাব্যে পুন্ড্র( উত্তর
বঙ্গ), বঙ্গ (দক্ষিণ ও পূর্ব বঙ্গ), সুম্ভ(পশ্চিমবঙ্গ), 
তাম্রলিপ্তি, প্রভৃতি র উল্লেখ আছে। অতীতের সেই যুগে বাংলাদেশের উন্নত , সভ্য অধিবাসীদের পাশাপাশি অসভ্য জাতিও বাস করত। আবার
মহাভারতে বাংলার সমুদ্র তীরবর্তী বসবাসকারী দের ম্লেচ্ছ বলা হয়েছে, ভাগবত পুরাণে সুম্ভগণকে
পাপাচারী বলা হয়েছে। 
এই সম্বন্ধে মহামহোপাধ্যায় পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় লিখেছেন-“যখন আর্য্যগণ মধ্য এশিয়া হইতে পাঞ্জাবে আসিয়া  উপনীত হন, তখন ও
বাঙ্গলা সভ্য ছিল। আর্য্যগণ আপনাদের বসতি
বিস্তার করিয়া যখন এলাহাবাদ পর্যন্ত উপস্থিত হন, 
তখন বাংলার সভ্যতার ঈর্ষা পরবশ হইয়াই তাঁহারা
বাঙ্গালীকে ধর্মজ্ঞানশূণ্য এবং ভাষা শূণ্য পক্ষী বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। “

তথ্যসূত্র: The History of Bengal 1943
               Dr. Professor Robert. C. Majumdar

             ভারতের ইতিহাসকথা -১৯৯৩
              ডঃ কিরণচন্দ্র চৌধুরী
               হুগলী জেলার ইতিহাস- ১৯৪৮
                 সুধীরকুমার মিত্র বিদ্যাবিনোদ

                                                                ক্রমশঃ….
             
           

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *