ছবিঃ গৌতম মাহাতো
লিখছেন– দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী
১৪
এই বারবার নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে নদী অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠে, ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। তাম্রলিপ্তি আর সপ্তগ্রামের ক্ষেত্রেও তাই। এটা বিশ্বাস করতেই হয় যে গৌড়ের শহরের ধ্বংসের কারণ এই কোশি নদীর স্থান পরিবর্তন , নদীর জলাভূমিতে রুপান্তরিত হওয়া।
আর আমরা এটাও জানি যে এই খামখেয়ালি পদ্মা নদী যে কত গ্রাম, কত শহরকে প্লাবিত করেছিল, একই ভাবে সমগ্র ভারতের অন্যান্য নদীগুলির বাহ্যিক রুপ বদলে যাচ্ছে যার জন্য প্রকৃতি ও
নদীগুলির ধ্বংসাত্মক প্রভাবই দায়ী। এটাই
আমাদের ধারণা। এর সঙ্গে এটাও বলতে হয়, এই নদীগুলির গতিপথ বদল,ভাগীরথী,পদ্মার মধ্যবর্তী ব্দ্বীপ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পলিমাটি
জমে যাওয়ার ফলে অনেকাংশে বাহ্যিক গঠন বদলে গেছে। এরজন্য অনবরত এই সব জায়গায় পলি জমতে থাকে ফলে নদীর অববাহিকা অঞ্চল উঁচু হয়, তুলনায় অন্যান্য জায়গা গুলি নীচু হতে থাকে এবং জলে ভরে যায়, জল নামে না। এই বিশাল সুন্দরবন এলাকার বদ্বীপ অঞ্চলের এটি দীর্ঘ স্থায়ী জটিল সমস্যা।
অনেকেরই এই মত যে সুন্দরবন একসময় ঘনবসতিপূর্ণ ছিল, সেই সব জায়গা খালি হয়ে
যাওয়ার কারন হ’ল প্রকৃতির বিধ্বংসী খেলা এবং অত্যাচারী মগ, পর্তুগিজদের লুটপাট করে ছারখার করে দেওয়া। “Reference to the Khadi- vishaya or-mandala, a flourishing district in the Sena period which in later ages, became part of the dense forest, and to the country between the Biskhali and Rabanabad which was depopulated by Maghs,may be recalled in this connection. “
এটা উল্লেখ করা যায় যে খাড়ি-বিশ্ব অথবা মণ্ডল একদা সেন যুগে সমৃদ্ধশালী জেলা ছিল যা পরবর্তী কালে ঘন জঙ্গলে পরিবর্তন হয়, বিষখালী আর রাবনাবাদের মধ্যবর্তী দেশের জনবসতি খালি করেছিল এই মগদস্যুরা।
প্রামাণ্য সূত্র লিপি(epigraphic ) অনুসারে এটা প্রমাণ করা যায় ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জের
নিকট কোটালিপাড়া এলাকা যা জলাভূমিতে রুপান্তরিত অতীতে এ জায়গা সভ্য জনবসতি ছিল। সম্ভবতঃ এই এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্য হ’ত যা সমুদ্র মাধ্যমে অন্যান্য দেশে পাঠানো হ’ত।
অতীতের কয়েক শতাব্দী ধরে যশোর জেলা ও খুলনা জেলার ভিতর বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থা
পরিবর্তনের কারন অনেক বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা যা সারাবছরই চলত।
Ref: The History of Bengal -1943
Dr. R. C Majumdar
ক্রমশ…