লিখছেন-দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী
১২
গঙ্গা নদীর ক্ষেত্রে এটা লক্ষণীয় যে অতীতের দিন থেকে এই নদীটির ধর্মীয় পবিত্রতা
বজায় আছে। আজকের দিনেও হাজার হাজার তীর্থযাত্রী নাঙ্গলবাঁধের নিকটে মাটি পুলের কছে
স্নান করে। কিন্তু এখনও একেবারে পূর্ব প্রান্তে স্থিত
নদীপথ হঠাৎ করে আঁকাবাঁকা হওয়ার কারনে
স্রোত অতটা নেই। ১৮ শতাব্দীর শেষ দিকে যমুনা
নদীর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় এবং ১৮৫০ A. D., থেকে
এই নদীটি ব্রহ্মপুত্র নদীর মুখ্য ধারা হয়ে যায়।
উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন নদী ,যেগুলি গঙ্গা নদী অথবা ব্রহ্মপুত্র নদে প্রবাহিত হয়েছিল,বর্তমানে সেগুলির মধ্যে কয়েকটি গতিপথ বদলেছে। তিস্তা নদী প্রথমে জলপাইগুড়ি থেকে একেবারে দক্ষিণে
প্রবাহিত হয়ে তিন ভাগে ভাগ হয়েছে, যেমন পূর্ব দিকে তোর্সা, পশ্চিমে পূর্ণভবা আর মধ্যে আত্রেয়ী,
সম্ভবত সেই জন্য এই নদীকে ত্রিস্রোতা বলা হয়।
এর জন্য তিস্তা নদী ছোট ও দূষিত হয়েছে।
পূর্নভবা নদীটি মহানন্দা তে মিলেছে। আত্রেয়ী
নদীটি বিশালাকার জলাভূমি (চালান বিল নামে
চিহ্নিত ) হয়ে তোর্সা নদীতে মিলিত হয়, তাদের
মিলিত জলধারা জফরগজ্ঞের পদ্মা নদীতে
পতিত হয়েছে। এই তোর্সা নদী একসময় পবিত্র বৃহৎনদী ছিল। আজও তোর্সা মাহাত্ম্যের বিশেষত্ব,
পবিত্রতা হারায়নি।
এর ই তীরে পুণ্ড্রবর্ধন শহর ছিল। যার পুরাতাত্বিক
গুরুত্ব মৌর্য্য শাসনকালকে মনে করিয়ে দেয়।
এই তোর্সা আঁকা বাঁকা পথে বয়ে চলেছে বোগড়া জেলার প্রাচীন মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষের
উপর দিয়ে এবং একটি নির্দিষ্ট চিহ্নিত জায়গা যেখানে বালি উত্তোলনে ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শিত হয়।
Ref: The History of Bengal, 1943
Dr. R. C. Majumder
ক্রমশঃ….