প্রাচীন বাংলা ও জৈন ও বৌদ্ধ গ্রন্থে বাংলাদেশের উল্লেখ,ও তার জনপদঃ লিখছেন দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী


  প্রাচীন বাংলা ও জৈন ও বৌদ্ধ গ্রন্থে 
         বাংলাদেশের উল্লেখ, জনপদ

                                                                            ছবিঃগৌতম মাহাতো

                      লিখছেন দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী

                               ১৯

Jaina writers of the Acharanga-sutra describes the land of the Ladha(Radha) in West Bengal as a pathless country inhabited by a rude folk who attacked peaceful monks. In one of the Upangas however, the Ladhas  has as well as the Vangas are classed as Aryans”
” The Acharanga-sutra devides the land of Ladha into two parts named Vajjabhumi and Subbha(Suhma) bhumi. Vajjabhumi or
vajrabhumi had it’s capital, according to
Commentators, at Panitabhumi. The name Vajrabhumi, “Land of diamond, ” reminds us as the Sarkar of Mandaran in South-west Bengal, mentioned in the A’in-i-
Akbar in which there was a diamond mine. 
The Sarkar answers to parts of the modern
Birbhum, Burdwan, and Hooghly districts. 
The land of Diamond ‘ may have extended 
Westwards as far as Kohkhra on the boarders of  Bihar which was famous
for its. Diamond mines in the days of the  Emperor Jahangir. “

জৈন ‘আচারঙ্গ সূত্র’  পশ্চিম বাংলার  রাধার রাজ্য সম্পর্কে  বর্ননা করেছেন  ‘ এই জায়গায় চলাচলের
জন্য রাস্তা ছিল না। শান্তিপূর্ণ সন্ন্যাসীদের এই জায়গার লোকেরা আক্রমণ করত , গালাগালি করত।  লাঢ় বা রাঢ় দেশ তখন  সুহ্ম ভূমি ও বজ্র ভূমি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। মহাবীর জিন কে
গালাগালি করেছিল, কুকুর লেলিয়ে দিয়েছিল। 
তিনি আত্মরক্ষার্থে  সর্বদাই একটি লাঠি সঙ্গে 
রাখতেন। 
প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্যেও বঙ্গ ও সুহ্ম- এই দুইটি
অঞ্চলের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

বজ্র ভূমি মনে করিয়ে দেয় দক্ষিণ- পশ্চিম বাংলার
মান্দারণকে।  এই মান্দারণে ডায়মন্ডের খনি ছিল
এই কথা উল্লিখিত আছে আইনি আকবরি তে । 
এই বজ্র ভূমি সম্ভবত: বিহার সীমান্তে কোখরা  পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়। 

আর্যদের উপনিবেশ বিস্তারের ফলেই বাংলাদেশে
আর্য ভাষা, ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি স্থায়ীত্ব লাভ
করেছিল। অনার্য জাতির সভ্যতা, আচার আচরণ  অনেক কিছু বাংলাদেশে আগত আর্যগণ
কর্তৃক গৃহীত হ’লে  আর্য- অনার্য সংমিশ্রণে বাংলার
সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক  জীবন নতুন ভাবে
গড়ে উঠল। শাড়ি, সিন্দুর, পান, হলুদ প্রভৃতির ব্যবহার, কালীপূজা, মনসাপূজা, শিবের গাজন, বালাম চাউল( একপ্রকার বেত দ্বারা নৌকাকে
‘বালাম’ বলা হত। এই সকল নৌকায় যে চাউল
আমদানি রপ্তানি করা হ’ত তা ক্রমে ‘বালাম চাউল’
নামে পরিচিত হয়।), খোকা-খুকী’ নামকরণ প্রভৃতি
অনার্য যুগের স্মৃতি আজও এই প্রথা চালু আছে। 
বাংলাদেশে আর্য প্রভাব বিস্তারের কাল নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তবে খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীর মধ্যেই
আর্য গণ বাংলাদেশে বসতি বিস্তার সম্পন্ন করেছিলেন বলিয়া পণ্ডিত গণ মনে করেন। 

প্রথমত, আলেকজান্ডারের ভারত- আক্রমণের পূর্বে বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীরা ছিলেন অনার্য, কিন্তু খ্রীষ্টের জন্মের  প্রায় সহস্র বৎসর পূর্বেই আর্য গণ বাংলাদেশে বসতি বিস্তার করিতে আরম্ভ করিলে এ-দেশে আর্য-  অনার্য রক্তের সংমিশ্রণ ঘটে। 
দ্বিতীয়ত, আদিম  বাংলার অধিবাসীদের সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা গঠনের  ক্ষমতা ছিল। বস্তুত, তাঁরা
সেকালে কোন কোন রাজার অধীনে যথেষ্ট শক্তি ও প্রতিপত্তি অর্জন করেছিলেন। 
তৃতীয়ত, সে যুগে বাংলাদেশ বলিতে রাজনৈতিক
ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ একটি সমগ্র দেশকে বুঝাতো না। 
অনেক ছোট ছোট  রাজ্যে বিভক্ত ছিল। অনেক
রাজা প্রতিপত্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন। 
চতুর্থত, সে কালের বাঙালিরা অন্তর্মুখী ছিলেন না। প্রতিবেশী রাজ্যসমূহ বাংলাদেশের পশ্চিম প্রান্তের বিভিন্ন দেশ ও লোকেদের সহিত বাঙালি র
ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। 

বাংলার ইতিহাস আলেকজান্ডারের ভারত- আক্রমণের (৩২৭-৩২৬ খ্রীস্ট পূর্ব) সময় হতে
প্রকৃত ইতিহাসের রূপ পরিগ্রহ করে। বাংলাদেশের
প্রামাণিক ইতিহাস সর্বপ্রথম গ্রীক ও ল্যাটিন লেখকদের রচনায় পাওয়া যায়। 

তথ্যসূত্র:  The History of Bengal, ১৯৪৩
               Dr. (Professor) R. C. Majumdar
              
                 ভারতের ইতিহাস কথা ১৯৭৯
               ডঃ কিরণচন্দ্র চৌধুরী

                                                           ক্রমশঃ…..

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *