পরিচিতি ঃঃ গোবিন্দ মোদক। পিতা: কানাইলাল মোদক। মাতা : প্রতিভারাণী মোদক। লেখকের কথা:- জন্ম 05-01-1967 পেশা:- প্রথম জীবনে অধ্যাপনা, পরবর্তীতে India Post (ডাক বিভাগের) কর্মরত। বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র হওয়া সত্বেও ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি ঐকান্তিক অনুরাগে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, রম্য রচনা, উপন্যাস ইত্যাদি লিখলেও ছোটদের জন্য ছড়া-কবিতা ও গল্প লেখার মধ্যেই খুঁজে পান অধিকতর তৃপ্তি। প্রচারবিমুখ আত্মমগ্ন এই মানুষটি লেখালিখি ছাড়াও ভালোবাসেন:- বই পড়া, গান শোনা, পত্রিকা সম্পাদনা, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা, বেড়ানো, সাহিত্য বিষয়ক নির্ভেজাল আড্ডা, এলোমেলো ভাবনায় নিমগ্ন হওয়া। প্রথম লেখালিখি: প্রথম কবিতা “প্রেম” প্রকাশিত হয় শারদীয়া অভিষেক (1397) পত্রিকায়। প্রথম গল্প ছাপা হয় তটরেখা পত্রিকায় (হরিপদ’র গল্প) 1989 সালে। প্রথম কিশোর উপন্যাস “গুপ্তধনের খোঁজে” প্রকাশিত হয়েছে 1989 সালে শারদীয় “আসানসোল হিতৈষী” পত্রিকায়।সেই প্রবাহ এখনও বহমান … নানা ধরণের লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে চলেছে অজস্র পত্র-পত্রিকা ও দৈনিকে। প্রকাশিতব্য গ্রন্থ:- পদ্য ভরা আমার ছড়া, ছন্দ ভরা আমার ছড়া, রূপকথার রূপ-কথা, ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ, গুপ্তধনের সন্ধানে, জীবনের রোদ-রং ইত্যাদি। গোবিন্দ মোদক। সম্পাদক: কথা কোলাজ সাহিত্য পত্রিকা রাধানগর, ডাক- ঘূর্ণি, কৃষ্ণনগর, নদিয়া। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত – 741103
গো বি ন্দ মো দ ক-র ছড়াগুচ্ছ
ও ছড়াকার
ও ছড়াকার কেমন করে লেখো তুমি ছড়া !
তোমার কাছে আছে নাকি ছড়া ভর্তি ঘড়া !!
ও ছড়াকার কেমন করে মেলাও তুমি ছন্দ !
তোমার বুকে আছে বুঝি হাজার ফুলের গন্ধ !!
ও ছড়াকার কেমন করে লেখো তুমি পদ্য !
তোমার মনে কুঁড়ি থেকে ফুল ফুটেছে সদ্য !!
ও ছড়াকার কোথায় থাকো কোথায় তোমার বাস !
খাতা জুড়ে সারা বছর করো ছড়ার চাষ !!
ও ছড়াকার কোথা থেকে এমন ছন্দ পাও !
তবে কি তুমি নীল-সায়রে ময়ূরপঙ্খী বাও !!
ও ছড়াকার তোমার ছড়ায় আছে সে কোন জাদু!
সবাই ভোলে ধনী-গরীব নাতি থেকে দাদু !!
ও ছড়াকার আমাকেও তবে শিখিয়ে দিও ছড়া !
সেই ছড়াতে থাকে যেন একশো রসের ঘড়া !!
গিনেস রেকর্ড
অনর্গল মিথ্যে কথা
বলে পাড়ার ভোলা,
উদ্দেশ্য একটাই তার
গিনেসে নাম তোলা !
পাঁচটি বছর ধরে সে
মিথ্যে কথা বলে,
রেকর্ড করে নাম কিনবে
দারুণ অবহেলে !
তাই সে বলে,- “মিথ্যে কথা
বলবো আমি ভাই,
কারণ মিথ্যে বলার রেকর্ড
গিনেস বুকে নাই !!”
মহামায়ার স্তব
বর্ষা শেষে অরুণ-আলোর
শরৎ যখন আসে,
ভোরের বেলায শিউলি ঝরে
শিশির ভেজা ঘাসে ।
নীল আকাশে বেড়ায় ভেসে
সাদা মেঘের ভেলা ,
নদীর দু’ধার হাসছে দেখো
দিচ্ছে কাশে দোলা ।
দীঘির জলে পদ্ম-শালুক
পড়লো কাঠি ঢাকে,
আগমনী সুর যে গো তাই
দুগ্গা মাকে ডাকে ।
মা আসছেন মা আসছেন
সাজো সাজো রব ,
শোনো সবাই বাতাস জুড়ে
মহামায়ার স্তব ।।
বাঘ
কাছে-পিঠে ছিলো এক
মোটা-সোটা বাঘ !
গায়ে তার ডোরা-কাটা
নেই মনে রাগ !!
মাঝে মাঝে দুলে-দুলে
মিটিমিটি হাসে !
সব্বাই যেতে পারে
তার কাছে, পাশে !!
হালুম করে না সে
মারে নাকো থাবা !
তাই বলে ভেবো নাকো
একেবারে হাবা !!
থাকে সে দেওয়ালেতে
ক্যালেন্ডার জুড়ে !
আমরা দেখি তাকে
রোজ ঘুরে ঘুরে !!
হিরো
অঙ্ক শিখে বড়াই করে
বর্ধমানের ভোলা ,
নামতা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে
চিবোয় কাঁচা ছোলা !
হেঁকে বলে — সবই জানি
সাত-দশেতে সাতাশ,
গুরু বলেন — গেলুম গেলুম
জোরসে দে রে বাতাস !
ভোলা বলে,- বলুন তো স্যার
কতোটা শিখেছি!
এই দেখুন না খাতা জুড়ে
কতো শূন্য এঁকেছি !
গুরু বলে,- মাথাটা তোর
বিরাট একটা জিরো!
হেসে ভোলা বলে,- স্যার,
আমি সেই কারণেই হিরো !
শরৎ প্রকৃতি
দীঘি জলে টই-টম্বুর
গাছ-গাছালি সবুজ,
মৌমাছিরা উড়ছে ফুলে
ভীষণ রকম অবুঝ !
পেঁজা তুলোর মতো মেঘ
আকাশ জুড়ে ভাসে ,
মাঠটি কেমন গেছে ভরে
অজস্র হেই কাশে !
শিউলিরা সব শিশির মেখে
করছে ভোরের স্নান ,
মাঠের ধারে রাখাল ছেলের
বাঁশির সুরে গান !
গ্রামের পথে গাইছে বাউল
আগমনীর সুরে,
সোনা-রোদে প্রকৃতি তাই
আজ উঠেছে ভরে !!
ইচিং বিচিং মন্ত্র
ইচিং বিচিং মন্ত্র দিলাম
দিলাম পানের চুন,
হাজার টাকার ঝাড়বাতি নয়
পান্তা ভাতে নুন !
নুন নয় রে ওরে পাগল
ওটাই স্বাদের জান ,
জীবন জুড়ে হরেক মজা
খোলা রাখিস কান !
কান শুনতে ধান শুনলি
ওরে দস্যি ছেলে ,
অন্য যে কেউ বর্তে যেতো
মন্ত্র খানা পেলে !!
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
ভীষণ জোরে ঝড় এসেছে
উড়ছে ধুলোবালি !
আকাশ ছেঁয়েছে কালো মেঘে
ভর্তি যেন কালি !!
গুড় গুড় গুড় মেঘ ডাকছে
পড়বে এবার বাজ !
তাড়াতাড়ি চল রে বাড়ি
থাকুক পড়ে কাজ !!
একটু বাদে নামবে এখন
ভীষণ রকম বৃষ্টি !
বৃষ্টির ছাঁট বিঁধবে গায়ে
ঝাপসা হবে দৃষ্টি !!
মাটি ভিজে কাদা হবে
মিষ্টি সোঁদা গন্ধ !
আয় বৃষ্টি আয়রে ঝেঁপে
সব করে দে বন্ধ !!