লক্ষ্মণ ঘোষ-এর কবিতাগুচ্ছ

কবিতাগুচ্ছ

                                                                                                ছবিঃ গৌতম মাহাতো

ল ক্ষ্ম ণ     ঘো ষ-এর কবিতাগুচ্ছ

                                                    

কবিতার মধ্যেই তাঁর নিরন্তর যাপন।আত্মমগ্নতার ভেতর তাঁর নিভৃত যাপন।গদ্যের প্রতিও টান চিরকালের তবে কবিতা তার কাছে ধরা দ্যায় বহির্জগতের বস্তুকেন্দ্রিক বাস্তবে।তিনি খুজে চলেন অন্তর্জন্মের ইতিহাস।তাঁর পেরিয়ে আসা পথ তাঁর 
আত্মদর্শন।লিখেছেন অজস্র লিটল ম্যাগাজিনে।ইনিও বাইফোকালিজম-f2.8-এর একজন অন্যতম সদস্য।

 বাখুলের ইতিহাস

  ১
এখন আমাদের বাখুল টাখুল
নেই । ভেঙে ভেঙে রূপ পেল ছোটো পরিবার । সারাদিনের ক্লান্তি খিল কপাটের ধরাস তাও যাচ্ছে পাল্টে ,পাল্টা তে তো হবেই । 

আঁচমনে বসা পুরোহিত জানে না আমাদের রহস্যের মহাভারত , জানে না মন্ত্রের খর উচারণ 
গম্ভীর অথচ প্রশান্ত পৃথিবী 

এক ভাগ কে কোন দিকে টানছে কোন পাশে রণ হুংকার রাজনীতির জটিল মায়াঘর সেজে উঠছে প্রাচীন ভারতে । 

ভীষণ তরতাজা চুলের দম্ভ 
রাশি রাশি ঢেউ ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে কারাগার খানা ছিন্ন ভিন্ন যে যেদিকে পারছে ছুটছে 

এই তাণ্ডব লীলা , বিজয় পতাকা কই ? 
এই অভিলাশ চিরকাল থেকে গেছে কারও বুকের গ্রন্থি তে একশ ধনুক বল্লম তা থেকে আগুন ঝরছে উন্মত্ত বাহিনীর তরল উদ্যোগ আছড়ে ভেঙে 
                                                              ফেলছে । 

মাঠের প্রান্ত খানি খালি যুদ্ধ রব মাঝ খানে পাহাড়ি নদী পেরিয়ে গেলেই সেই অমৃত 
উদার হস্তে দন্ডায়মান ঋষিরা 

যে জল ধারা নেমে যাচ্ছে তার বিপুল বেগ নিয়ে চলেছে মহা বেগের মহা পথে

নিম্ন দিকে দুর্গে শঙ্খ বাজে 
দামামা , যুদ্ধের , হতাশের 
ফলত হাজির সৈন্যগণ ভাঙছে পাথরের কোন 
ঐ পথেই আলেক জান্দর এসেছিল 
আজ তার পদ রেখা দেখা যায় । 
হাওয়ায় ভরে যাচ্ছে চার পাশ অম্ভি পুরু রুখে দাঁড়িয়ে ছে 
কেবল বাখুল ভেঙে ছোট পরিবার পি ডি এফ রূপ যোগদান করছে নেটে । 

   ২
মেঘে মেঘে যুদ্ধ জলে জলে যুদ্ধ,  যুদ্ধ মানেই ক্ষতি যুদ্ধ মানে মতের অমিল 
সৈন্যদের একাংশ বাড়ির কথা পরিবারের কথা ভাবছে একাংশ ভুলে যেতে বসেছে । 

নিঃসঙ্গ নির্মম 
আঘাত করতে করতে পেছনে তাকাবার সময় পাচ্ছে না 

সামনের দিকে দেশের রাজা 
পিছু হটবে না 
সেখানে ভাঙা কিছূ রূপ পাচ্ছে কৌতুহল 

এই নিষ্টুর সময় চমকিত সময় 
আগুন কে আগুন জলকে জল বলতে শেখাছে 
ভিতর ও বাহির নিরূপায় 
‘ রাজাকে রাজার মতো ব্যবহার করা ‘  উচিত 

তৈরি হচ্ছে ইতিহাস 
ইতিহাস এর বাখুল
ভেঙে ভেঙে রূপ পাচ্ছে 
একবিংশ শতকে 
ছোট পরিবার এক একটি পরিবার ।

 একা থাকার সময় 

প্রাণের কাছে প্রাণকে অবহেলা আর আঁচলে চোখের জল মোছা 
দিনযাপনের পরিধি মাপা 

সুখের দিনগুলি সামনে আসে 
ভেসে যায় চোখের সামনেই 
সব আজ মরীচিকা 

কোথায় শান্তির ছায়া ! 
কোথায় ভালোবাসার টুকরো খানি 
সবাই দূরত্বে সবাই ….

একার মধ্যে গ্রহণ লাগে একা থাকার মধ্যে । 

লকডাউন এ সবাই 

মনখারাপ 
লিখি 
লিখি চায়ের দোকান বন্ধ 
তার পাশে ফুচকা স্টল বন্ধ 
সোজা সরল মনে শহরের ফুটপাত ধরে হাঁটা নেই

সব লকডাউন । 

লিখি তুমি কে 
লিখি আমি কে 
সবাই ঘরে 

না বলাদের কলমের জীভ এ ঢালি 
লিখি লকডাউন কবে উঠবে 
কবে দেখা হবে চায়ের দোকানে 
সেই অপেক্ষায় দিনগুনি 
আর লিখি 
সুন্দর পৃথিবী তে অনেক মনখারাপ ….

মহাশূন্যে

রাস্তার কালো পিচে কতদিন 
মনখারাপ চাপা পড়ে 

মেসের কথা নিজেদের কথা 
বাঁশির মতো বাজে 

প্রতি মুহূর্ত ফোনালাপের অক্ষর লাফিয়ে ওঠে 
মহাশূন্যে । 

এ তো প্রেম

আড়াল হলেই মনে হয় 
খোঁপায় দেয়নি ফুল । 

মন ভালো নেই হয়তো 
হৃদয়ে আঘাত লেগেছে 

ভালো কিছূ পেতে 
হারিয়েছে ভাবনা । 

গোপন কান্নার স্রোত বাঁক নিয়েছে জীবনে 

হৃদয়ের ফুল কখনো শুকনো হয় না হৃদয় চিনলে।  

 ★★★

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *