ই ন্দ্র নী ল ব ক্সী-র কবিতাগুচ্ছ
স্থিরচিত্র
এমনিভাবে প্রকাশ ভয়ে লুকিয়ে ফেলছি প্রচণ্ড বিষাদ। সময়ের আগে শীত চলে যাওয়ার
দুর্ভাবনায় পশমের পোশাকের মেলে ধরা রঙেদের আগুন – অনেক। অনেক আগুন।
আসলে মৃত্যু বললে একটা সাদা খাতাকেই বোঝায়। জন্ম শুধু অক্ষরমালা।
চলে যাওয়ার পিছনে রয়ে যাচ্ছে ফিরে আসা। এমনটা হলফ করে বলা যায় না / যায়।
উচ্ছ্বাস ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে সূক্ষ্ম একা এবং একারা। দাঁড়িয়ে উঠছে আয়নায় সখের দোসর।
এখন তুলি ভেজাই বরং। রঙেদের প্রতিস্থাপন এখন সংখ্যা নির্ভর।
ঘুম থেকে ওঠাই নাকি জেগে ওটা। এমনটা ধরে নিয়ে রোজ ঘুমিয়ে পড়াই অভ্যাসে থাকছে।
আলাপচারিতা থেকে নরম উষ্ণতা স্রোত তখন হাঁটু জল । যে আমি জাগিনি একটিও সূর্যোদয়।
আমাকেই বুনে যেতে হবে গঠনমূলক আত্মকথন।
…কথন থেকে আত্ম মুছে নিলাম।
সারারাত চাঁদের বাগান
স্পন্দন জমে ওঠে যেখানে
যেখানে হাত রাখি …বুক রাখি
একি হলো! এমন স্বল্প রাত
জোয়ান সন্ধ্যার হাত ধরাধরি
…মিহি গন্ধে কেমন কান্না পেয়ে যায়
রাত কি গভীর হলো?
নেভানো রয়েছে শোওয়ার ঘরের রাতবাতি
আমার অনেকটা ভিতরে ঢুকছে ‘মুনলাইট সোনাটা ‘
জানালায় আটকে প্রথম ব্র্যাকেট চাঁদ
… কেমন কিশোরতা আচ্ছন্ন করছে
ফুলেরা কই!
বাগান বলে যে চৌক জায়গাটা ভেসে রয়েছে
যেসব বিকল্প তাসেদের রাজা ও রানীরা অনর্গল ফুটছে বালিকাপ্রবণ
আবছা আলোয় এরা তো ফুল নয় – বিকল্প মুখের অ্যালবাম
…শুধু ধুয়ে যাচ্ছে পুরানো আলোর গোপন স্রোত
পাশের শহরের ধ্বনি গাঢ় করে আরও গাঢ় করে
রাত
এসব সামান্য বদস্বপ্ন ভেবে নিতে পারি অনায়াসে
কিচ্ছুটি বোধ নেই এমন নিভৃতে ঘুমিয়ে পড়তে পারি
শুধু বড্ড ঘামে ভিজে উঠবে জামা …জামার নিচের আমি
আমার নিচে…অজস্র পায়রা …
এ বাগানে চাঁদ নেমেছে…
হতেও পারে চাঁদের বাগানে আমি
হলদে লাল সেমিকোলনে শুধুই ঢুকে পড়ছে আমায় ফেলে যাওয়া মুখগুলো
জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে যারা শুয়ে ছিলো রমণজর্জর …হঠাৎ তারাই সমবেত স্বরে
বলে ওঠে … “হাঁ করো , বিশ্বরূপ দেখি ”
পিঠজুড়ে অন্ধকার ভাঙছে …অন্ধকার ক্রমশ ঘাস হচ্ছে চৌক জায়গায় রাতভিজে
বালিকাপ্রবণ ফুটে থাকা রাজা ও রানি গুটিয়ে যাচ্ছে ফলস এলার্মের মতো আচমকা
বাথরুমের আয়ত আলোয়,ওরা জানে আর কিছুসময় …
তারপর… তারপর ওদের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই
জানালায় হাত রাখি
হাত জুড়ে ভোর নামে … যেমন প্রতিদিন ।
তামা রঙ বিকেলের সনেট
পুরোনো তামাটে সেই শহুরে বিকেলগুলো চেনো!
জন্মান্তর শুধু একজীবনের অপেক্ষার নাম জেনো
এতদিন পর কিসেরইবা দাবী কিসের অপেক্ষা -কেন!
হাত বাড়ালে স্পর্ষসুখের নীবিড় সে রূপকথা যেন !
যখন বৃষ্টি নামে ভিজে ওঠে ঘাস মাঠ কার্নিস মন
বহুযুগ পর যাযাবর পাখি ফিরেছে বাসায় আপন
এমনভাবে বুঝি রয়েগেছে প্রিয় মনে থাকা সব জামারা
ভেসে গেছে শুধু একদিন ভিজেছিলো বৃষ্টিতে
যারা যারা
তবু স্নানঘরে ঝর্নাকলে একা মনখারাপের ভুল কি!
গমরঙা পিঠে এঁকে চলা শুধু খেলা খুনশুটি উল্কি
সুখশহর
ছবি সারাইয়ের অছিলায় মুছে যাচ্ছে মুখের সমস্ত ভিড় ।। উড়ো শহরের চিঠি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে মেলানকলি।। …এখন শুধু গান বাজবে রাস্তায় রাস্তায় ।। স্পর্ধা উড়ছে পর্দা হয়ে চোখের তারায় …জুহুরীপট্টির ভিড় থেকে উঠেছে মারহাবা রব।।
“যারা সামনে যাবেন …শহরান্তে অথবা পরিত্যক্ত কসাইখানার দিকে -হাত তুলুন…
একটাই আবেদন – সঙ্গে কিছু সফেদ ফুল রাখবেন …”
রোদ্দুরের সঙ্গে নেশা মিশছে – আঠা আঠা।। চামড়া কারখানার শিশুরা অনায়াসে ফাঁকা পেরিয়ে যাচ্ছে ।।