সি দ্ধা র্থ সিং হে র হাফ ডজন কবিতা
কেন বাড়ি ফিরব
কেন বাড়ি ফিরব?
এমন কি কেউ আছে
যে শুধু আমার জন্য অপেক্ষা করবে!
বাড়ি ফিরতে না-পারলে ফোন করে জানাতে যাব কেন?
না-ফিরলে কেউ কি সারা রাত জেগে বারবার ঘড়ি দেখবে!
নাকি মোবাইলের বোতাম টিপবে!
‘রাত হলে বাড়ি ফিরতে হয়’
শুধু সে জন্য আর বাড়ি ফিরব না।
যার নূপুরের শব্দে গোটা বাড়ি ঝনঝন করে বেজে ওঠার কথা
সে যদি চাবি দেওয়া পুতুল হয়
কেন বাড়ি ফিরব?
ফিরতেই যদি হয়
হাওয়ায় ওড়া কোনও আঁচলের কাছে ফিরব
অথবা ফিরব কোনও লাজুক ইশারার কাছে।
কী করে বলি
হাইকম্যান্ডকে কী করে বলি!
ও রকম দু’-চারটে খুন সবাই করতে পারে
কিন্তু এক কোপে কারও মাথা নামিয়ে
সেই মুণ্ডু নিয়ে কখনও কি ফুটবল খেলেছেন প্রকাশ্য রাস্তায়?
তবে?
ও রকম দশ-বিশটা ধর্ষণ সবাই করতে পারে
কিন্তু আপনার নাম শুনলেই
মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যাবে মেয়েদের স্কুল, পাপড়ি গুটিয়ে নেবে ফুল
সে রকম বিভীষিকা কি ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন চারিদিকে?
তবে?
আপনাকে আসতে দেখলে
আশপাশের বাজার, চৌরাস্তার মোড়
কিংবা অফিসপাড়া
খরগোশ হয়ে যেতেই পারে
কিন্তু ওদের ভিতরের বাঘটাও যে মাথা নুইয়ে কোণে গিয়ে লুকোবে
সে রকম কুচকুচে কালো মেঘে কি ঢেকে দিতে পেরেছেন গোটা আকাশ?
তবে?
হাইকম্যান্ডকে আমি কী করে বলি
এ বার অন্তত ভোটে দাঁড়ানোর জন্য আপনাকে একটা টিকিট দিক!
মাঝখানে
মাঝখানে বাবি থাক, তুমি দেয়ালের দিকে
পড়লে না হয় আমিও পড়ব
খাটের পায়ে তো মাত্র ওই ক’টা ইট
সব ইটই তো মাথা তুলেছে আমাদের মাঝখানে।
কত দিন হয়ে গেল মুঠোতে বকুল এনে
বলি না আর— গন্ধ শুঁকে দ্যাখো
গলির বাঁকে মিলিয়ে যাওয়ার আগে দেখি
তুমিও দাঁড়িয়ে নেই আগের মতো…
মাঝখানে বাবি থাক, তুমি দেয়ালের দিকে
যত দিন না বাবিকে রং-তুলি দিয়ে বসিয়ে
পাশের ঘরে যাব
চুপিচুপি, তুমি আমি।
বিয়েবাড়ি
বিয়েবাড়িটা মাতিয়ে রেখেছিল সে।
ভীষণ ছটফটে, মিশুকে
কিছুক্ষণের মধ্যেই জেনে নিলাম তার বাড়ি, স্কুল
গানের স্কুল, এমনকী কোথায় টিউশনি নেয়, তাও।
ক্লাস নাইনে পড়ে
দল বেঁধে বেঁধে সব মেয়েরা চলে যাচ্ছে, সে কোথায়!
উলটো ফুটে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম
বন্ধ হয়ে গেল স্কুলের ফটক।
আধ ঘণ্টা আগেই বাণীচক্রের সামনে আমি হাজির
রবিবার ওর গানের ক্লাস
কিন্তু তিনটে তো বেজে গেছে
তবে কি ওর কোনও অসুখ-বিসুখ হল!
যেখানে ও টিউশনি নেয়
সেই গলির মুখে ঘোরাঘুরি করলাম ক’টা দিন
এত অন্ধকার কিচ্ছু দেখা গেল না।
ওর হাতে তো একটা মোবাইল ছিল!
ওহোঃ, কেন যে নম্বরটা নিলাম না
না-হয় একটু হ্যাংলাই ভাবত!
ক’দিন পরে আবার একটা বিয়ে
এবং সেখানেও যথারীতি সে।
প্রথমেই বললাম, আগে আপনার নম্বরটা দিন তো…
উত্তাল ঢেউ শান্ত হয়ে গেল। মৃদুস্বরে বলল—
বিয়েবাড়ি ছাড়া আপনি বুঝি আমাকে চিনতে পারেন না, না?
সতর্কীকরণ
বয়স্কদের থেকে একটু সাবধানে থাকবেন।
দেখবেন, ছেলেদের দিকে তেমন ভিড় না থাকলেও
লেডিজ সিটের সামনে মেয়েদের ঠিক পিছনে
কিংবা গা ঘেষে দাঁড়ানোর জন্য,
বাবা-জ্যাঠা-মামাদের সে কী প্রাণপণ লড়াই
কয়েক দিন খেয়াল করলেই টের পাবেন
গভীর রাতে উঠে শাশুড়ি কান পাতছেন
ছেলের ঘরের দরজায়
না না, ছিঃ, ও সব শোনার জন্য নয়,
কান পাতছেন, বউমা তাঁর ছেলের কানে কোন মন্ত্র দিচ্ছেন,
তা শোনার জন্য
বয়স হলে মানুষেরা ফুটপাতের এত ধার ঘেঁষে হাঁটেন যে,
নোংরা তাঁরা মাড়াবেনই।
বয়স্কদের থেকে একটু সাবধানে থাকবেন।
এমনকী, যখন আমার বয়স হবে, তখন আমার থেকেও
অবশ্য আমার বয়স কি আর বাড়বে!
ঢ়ঠজর
ভাগ্যিস, এতগুলো ভাষা জানতাম!
আমার আর কোনও ভয় নেই
আপনি যে ভাষাটা জানেন না
আমি ঠিক সেই ভাষাতেই আমার মনের কথাটা আপনাকে অনায়াসে বলে দেব
আপনি না বুঝুন
তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
আমি তো জানব,
আমি যা বলতে চেয়েছিলাম, সেটা বলে দিয়েছি।ভাগ্যিস, এতগুলো ভাষা জানতাম!
না জানলে এক বুক সাহস নিয়ে কী করে না বলতাম–
উমঠদ্যভঢ়ঙ দথচঢভঢ়্য ঢ়ঠজর।