ল ক্ষ্মী কা ন্ত ম ণ্ড ল-র কবিতাগুচ্ছ

পরিচিতিঃ লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলজন্ম- ১৯৬৯ সালের জুন মাস। বাবা – গোরাচাঁদ মণ্ডল ; মা – গীতা রাণী মণ্ডল। পেশা – প্রাথমিক শিক্ষক গ্রাম – বরদা ; ডাক – মোহাড় ; জেলা – পশ্চিম মেদিনীপুর পিন- ৭২১১৬১ মেল – mandallk69@gmail.com কবিতা মানে জন্ম , কবিতা মানে প্রেম , কবিতা মানে জীবন , কবিতা মানে মৃত্যু , এররকম বলা যেতেই পারে । সেকারনে জীবন , জীবিকা ও মানবিকতার একটি পূর্ণ অবয়ব হল কবিতা । কোন অবসর নয়, কোন সময় কাটানো নয় , তার জন্য চাই একাগ্রতা , ধ্যান । তখনই নীরব মননে বেজে ওঠে মন্ত্র , সুর । শিহরিত ইন্দ্রিয়ের অঙ্গ উপাঙ্গ । এর নামই মগ্নতা। এর মাঝেই হেঁটে চলেছেন আমার দাদু ঠাকুমা – সেই বৃক্ষের ছায়ায় বিস্তারিত কবিতা । কবিতার বইগুলি– ‘হঠাৎ হঠাৎই‘ – আনন্দ বিহার – ১৯৯৮। চার ফর্মা। ‘মানুষের নদী ‘- আনন্দ বিহার ২০০০। চার ফর্মা। ‘খরানদীর বৃষ্টি সম্ভব’ – দেশ প্রকাশন ২০১০। তিন ফর্মা। ‘সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ’ – তূর্য – ২০১১। চার ফর্মা। ‘আঁধারের পাঁজর’ – তূর্য – ২০১২। ২৫ টাকা । পাঁচ ফর্মা। ‘কালো নৌকার তৃষ্ণা’ – পাঠক –২০১৩ । চার ফর্মা । ‘তিলক জন্মের ছায়া ‘- পাঠক – ২০১৫। চার ফর্মা। ‘হরিত প্রাণের কম্পাঙ্ক ‘- প্রতিকথা– ২০১৮। এক ফর্মা। ‘জাম রঙের পুরুষ ‘- কবিতিকা – ২০১৯ । দু ফর্মা। ‘মনস্কাম ছুঁয়ে দেখো’ — শব্দরঙ– ২০২১ । চার ফর্মা। ‘নিঃসঙ্গ নাভিচন্দন’ – পারস্পরিক ২০২২। এক ফর্মা। বাইফোকালিজম্-র পাতা জুড়ে রইল তাঁরই কিছু কবিতা।

 

ল ক্ষ্মী কা ন্ত ম ণ্ড ল-র কবিতাগুচ্ছ

আত্মীয়

 

গরল পান করে  নির্জনতা চাইছেন মহাকাল  –

দোরগোড়ায় তখন মৃত্যু পরিমাপক যন্ত্র   ; তারও বেশি দুর্বলতা নিয়ে পৃথিবী আকর্ষিত হচ্ছে বিভিন্ন বিদ্বেষে  –  বসে আছে নির্জন আঁকা স্নেহার্ত সময়

কোনো ধ্বনি নেই  –  প্রতিধ্বনি কিংবা ইশারা-সংকেত –

ইথারে জড়িত কান্না আর সীমিত বিকেল নিয়ে আমি তাঁর জাগরণ পর্যন্ত অপেক্ষা করি –

প্রানিক

 

কাতরতার মাঝে যে ফুল উড়ে আসে , তার উৎস আলো কিনা জানা নেই – কোনো পাখি কি পূর্ণিমা হতে পারে –

অন্ধকার থেকে মলয় বাতাস নিয়ে চলে যায় রাত্রি  – গান দিয়েছিলাম তার ঠোঁটে  – কোন হিসেব নেই  অকারন অভিসারে –

হঠাৎই আমার বুকের ভিতর শূন্য বিস্তার করেছে রঘুবংশে ফিরে যাওয়া পুষ্পরথ –

প্রতিরূপ

 

নীল যাজ্ঞবল্ক্যের সমুদ্র দর্শণের পর  উড়ে গেছে মেঘ – ভেদ করে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের কাছে এক সুতীব্র অশ্বের আকর্ষণ  –  চারদিক থেকে উড়ে আসে পাতাপত্র  –

সেখানে নিউট্রন শক্তিও হার মানে  –  এক উন্মুক্ত তারার কাছ দিয়ে অষ্ট বসুর ইচ্ছে  উড়ে যায় -মিশে যায় মোহ অথবা চিৎসাঁতার

আকাশের দিকে উন্মুখ নক্ষত্রের কাছে মৃত্যুর হিসেব চাইতেই হারিয়ে যায় পূর্নিমার অস্তিত্ব  –

 

পূর্বাদ্রি

 

একটি কেন্দ্র বিস্তারিত হতে হতে বিকিরণ করছে উজ্জ্বলতা  – তারই  সমগ্রতায় উপমাবর্জিত সব চন্দনগাছ – সেই আলোতে হেঁটে চলেছে অংশত মেঘলা আকাশ…

আদিগন্ত জলাশয়ে সন্ধে নামের কেউ নেই  – কেবল দিক পাল্টে যায় ভৈরব রাগের শুরু থেকে শেষ  – শূন্যের অবশিষ্ট থাকে শূন্য

সূর্যের থেকে দিব্যতার মৃত্যু হলে আমারও মৃত্যু হয় অবশেষে…

নিশ্বাস

 

মেঘ বিচ্ছেদের গা ঘেঁসে পরপর দুটো বক উড়ে যায় – ডানার নিচে শরীর আঁকা মৃত্যু আর মুক্তি –  মুক্তি আবিষ্কার করতে পারে না কোন মৃত্যু নামক সময় –

মৃদু মৃদু আলোর শেষে আমাকেও বুঝে নেয় সমস্ত অরণ্যকাণ্ড

সম্মুখের সুদীর্ঘ পথে সরাসরি রাস্তা – নিশ্বাসের কাছে পরিতাপের নগ্ন শরীর  ; অন্ধকার নামে – কয়েকটি ক্ষীণ পিপীলিকা ক্রমশ নিশ্চুপ  –

ধ্রুব

 

উড়ে আসে গোপন বাতাসের অহংকার , কোলাহল থেকে বেশ দূরে নিমগ্নতার সাররূপ – একটা ছোট পাখি বনের প্রতাপ থেকে নতুন অস্থি গড়িয়ে আনে

অস্তিত্বের উপর তোমার ঠোঁটের ভাঁজ  ; আহা !  –  এই পরম সুরে মৃদু মৃদু আলোর তরঙ্গ আমাকে নিয়ে যায় পবিত্রতার আত্ম রূপায়নে-

কক্ষপথ নিয়ে  সমস্ত জনম মহাকাশ হয়ে যায় –

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *