পি য়াং কী -র কবিতাগুচ্ছ

পরিচিতিঃকবিতার আড়ালকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকা এবং একমাত্র কবিতার কাছে সৎ থাকা একজন মানুষ।  বিরতিহীন কবিতাপ্রেমী। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দুটো — “মধ্যযামের আলো” এবং “এসো,ছুঁয়ে দাও নিরাময়”।। আজ বাইফোকালিজম্-র পাতায় তাঁর একগুচ্ছ কবিতা পাঠকদের জন্য।

পি য়াং কী-র কবিতাগুচ্ছ

জলচর

 

স্পর্শজনিত অন্ধকারে আগ্রহ নেই আর

ডুবিয়ে রাখা হয়নি তোমার দক্ষিণ অক্ষাংশ

শরীরে গোধূলি নামলে দেখি,

পুকুরঘাটে  জমে থোক থোক লালপিঁপড়ে

এদের মধ্যে কারোর অন্তত  মাথায় ওঠার কথা ছিল

কারোর পৌঁছনোর ছিল অগ্রন্থিত গোপন স্থানে

বৃষ্টি পরবর্তী ঝাপসা আঁধার।

সিঁড়ি হয়ে দরজায় — নির্মিত ঋণ

পরিকল্পনা মাফিক — আড়াল,  তৈরি জমায়েতও

তবু কেন নোঙরে লেগে থাকে শেষ সূর্যাস্ত !

কেন চুম্বন ঘটিত লালায় কিলবিল করে না আঁশওয়ালা মাছ?

আঙুল নীতি 

 

মসৃণ ঢাল পথে লাল পাথর।

অনুপ্রবেশ  শোকভাঙা ময়ূর হলে…

স্ত্রীলিঙ্গ একান্তই বসন্ত অনুসারী

যখন যখনই রঙীন মুখোশ ছিটকে গেছে অন্য গ্রহের দিকে

দৃঢ় পায়ে স্পষ্ট হয়েছে নিঃশর্ত ছায়া

পৃথিবীর স্নানজল চুরি গেছে প্রত্নযুগের ভেজা দেয়ালে

বয়ঃসন্ধি পেরিয়ে — উদ্ভ্রান্ত চাউনি

 — একলব্য হ্যামিলটনের বাঁশি

শূন্য স্থানে অনুস্বার — ঢং ঢং ঘন্টা, সাদাসিধা ঘোর, কিলবিল অলিগলি

গচ্ছিত সর্বমোট  যোগফল থেকে একটি পাখি উড়ে গেল

অবশিষ্ট > আরেকটি ‌‌‌> আরও

বিয়োগফলে শুধু  নকল আপেল

সঞ্চয় বলতে, সূর্যাস্ত শেষে বুকের ভিতর  কয়েকটি জীবিত আঙুল

সমর্পণতত্ত্ব

 

নদীপথে ক্ষতস্নান। সেরে ওঠা বালকের চোখে বিমূর্ত দায়

এগিয়ে দেওয়া হাত অথবা নিঃশব্দ লজ্জাবস্ত্র পেরিয়ে মাত্র একটি সেতু

মোহ’র ভেতর কেন এত কিচিরমিচির?

সকল রাস্তায় লাইটপোস্ট নেই,নেই জন্মসূত্র

তবু, ঘোর লাগা মস্তিষ্কে রঙিন  ফুল

বিকেলঘুড়িতে আকাশ, মিথ ভাঙা আয়না

বালকের গায়ে সাদা বক — জলের ছাঁটে ভিজছে পূর্বকথা

প্রগাঢ় শোক সরে ক্রমশ  সাদা হচ্ছে সমর্পণতত্ত্ব

সমান্তরাল মানুষ 

 

শঙ্খলাগা সাপের ওপর সূর্য ডুবন্ত, এখন গর্ত ভরাট করবার সময়

সাহস এবং তীব্রতা থেকে খুলছে স্তর

অনায়াস চলাচল নিয়ে  কাছাকাছি দু’জন। সংজ্ঞাহীন সমস্ত আলো,

জলশব্দ, উপচে পড়ছে ঘটির পূর্ণতা

জিরিয়ে নিতে নিতেই  পায়ের পাতায় বর্ষা

এমত অবস্থায় করণীয় কী সেসব ভাবতে ভাবতেই পা বেয়ে উঠছে জোড়সাপ

পরিত্যক্ত সাঁকোর ওপর তখনও অখণ্ড সমান্তরাল মানুষ

চিত্রঃ ২
নিষিদ্ধ মাস

 

অনিবার্য যা, তাতে এদিক-ওদিক ছড়ানো   কিছু খণ্ডচিত্র। কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই এখানে আঘাত এসেছিল কিনা অথবা নম্রমুখ মানুষ এ রাস্তা বরাবর হেঁটেছিল কিনা। তবু অন্ধকার দেখলেই শিউরে ওঠে যারা, তাদের প্রত্যেকের চোখে বৃক্ষ। ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যন্ত্রণা।  বারোমাস্যার গায়ে ফুলের ছেঁড়া পাপড়ি। ঈষৎ নত হলেই খুলে যাবে গোপন কোণ, অলিখিত যাপন আর অধিকার সম্বলিত মিছিল। কী লাভ অকারণ হরষের? কোথায় রাখা পাহাড়ি গভীরতা? থাকে থাকে অগুনতি মানুষ, অথচ খোঁজ নেই তাঁর যার সাথে আজন্মের তাবিজ-কবচ। পূর্বজন্মের ঘাসফড়িং নেমে এসে ঢেকে দিচ্ছে উপন্যাস সংক্রান্ত চরিত্র।  এরপর একটা দীঘি,শান্ত জল,দীর্ঘ ঢেউ। দুটো রাজহাঁস আর এক শরীর ঘনজল…

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *