ছবিঃ গৌতম মাহাতো
দেবাশিস সরখেল-এর কবিতাগুচ্ছ
মূলত কবি।তবে গদ্যও লেখেন।সমসাময়িক বিষয় তাকে ভীষণ রকমের নাড়া দ্যায়।কবি প্রতিক্রিয়াশীল। মূলত তাঁর বিচরণ লিটল ম্যাগাজিনেই।এতেই তাঁর মুক্তি আস্বাদ খুঁজে পান।
রাত
সারাটা জীবন যেখানে পেরেছি।
কুঞ্জ শব্দটি বসিয়েছি।
অতি যত্ন করে।
আজ বেলা পড়ে এলে রাতে
মহাপ্রসাদ পেলাম।
আমার ভেতরে রাধাভাবটি জেগে উঠলাে
তখুনি।
আমি কৃষ্ণসাধক দাস নই ।
চারিপাশে কত সই
তবু কারও মুখমন্ডলে নেই।
কৃষ্ণবাসনামুখ।
সরসরসভাঁড়
দূর নক্ষত্রের আলাে , আমার ভূবণ ভরালাে
জলের গভীরে যেমন মাছেদের খেলা।
উদ্দানময় খেলাঘর দ্যায় উঁকি , সেখানে অনেক ঝুঁকি।
খেলায় নতমুখে বার-বার পরাজয়মাল্য – আলােয় অবগাহন নিত্যদিন
নিত্য পেতে চাই সরসরসভাড়,
তােমার অশেষ ঋণস্বীকারের পর এই অধিকারপত্র পেশ
যা অন্যায় , নীতিকথা মানে না তাে কোনাে ।
তােমার চাষের খামার যেন আমারও খামার।
না পেনে কেবল হাহাকার , রাগ।
টেনে ধরি আলাের অাঁচল ,
এই সরসরসভাড় না পেলে যুক্তিহীন হােমানল কিভাবে নেভাই ?
গৃহস্থের এঁটোকাটা পেলে কিষ্টের জীবণ সরে যাবে চুপিসারে ?
তুমি দেখে হতবাক , নয়ানজুলির পাশে নয় , সােজা সােফাসেটে ।
চোখ জুল জুল ,
শিকার ধরার লােভ এখনাে গেল না।
প্রতীক্ষালয়
হােক যত হােক ঈর্ষে
প্রতিক্ষালয়ে তিনিই আছেন শীর্ষে।
কাদের কাজী, ষাঁড় বাবাজী
ভান্ডা বােতলে, জীবনানন্দ আছেন।
হােক না যত ঈর্ষে।
মনীষীরাই শীর্ষে।
দেশের নামটি নীরবতা।
প্রতীক্ষালয়ে নীরব আছেন ঋষি।
বারে বা, চাদের আলােয় কবিসভা
মর্ত্যে তখন হিসি করেন কুকুর
গন্ধে বাজে চন্দন।
প্রসব
শ্রাবণ জন্মমাস, ঝারাঝরাে অন্ধরাত মাখা ললিতকলায়।
চারপাশে শঙ্খচূড়, বৃশ্চিকবলয়, ফুলপিসি।
ঠাকুমা দিদিমা, শালখুটি বাবার মতন।
লাজুল ও শালখুটি সরে গেলে
মাঠ দেখা যায়।
ধূপ মরুশিখা, দিচক্রবলে ভ্রান্তি ঢের।
কোনাে ডাকাতের দেখা পেলে বীরপুরুষ হতে পারতাম
ঘন আঁধারেও ব্যাঙ্গমীর নির্দেশিকা পাইনি কখনও।
হইনি বীরপুরুষ, নগন্য যাত্রী আমি।
সাথে একা উঠপাখি, ডিম দিব বলে।
বালি খুঁজি,-তার ডিম রাখিব কোথায়?
বাসব জানেন
বিজ্ঞানের সারকথা রয়েছে এখানে।
সব বাণী কানাকানি রয়েছে এখানে
যত খুটি খুটিনাটি রয়েছে এখানে।
ভেট দিলে টেট পাবে তার কথা রয়েছে এখানে।
ধূলােমুঠি রুপান্তরে সােনামিঠি সবগুলি যাদুকাঠি রয়েছে এখানে।
সব সমানের দেশ যেথা প্রভু নাই।
কল্পরাজ্যে সকলেই রাজার জামাই তার কথা রয়েছে এখানে ।
বােলচাল। চাল ডাল তেল নুন।
বাজারের সমস্ত আগুন।
দিশাহীন শাসকের সেবকের বেশ
ফাটা মাথা ফাসা মাথা গােবেচারা রাকেশ রমেশ
রয়েছে এখানে। সমস্ত ডাকিনীবিদ্যে ছাই ভস্ম সব কথার সমস্ত কথামুখ জানেন বাসব।
হুল্লোড় অঙ্গের অসভ্য ভঙ্গর কলা পাগলু যা জানে। বাসবের কোনাে চারা চলে না এখানে।
কাক
পুচ্ছহীন, নিরালম্ব, বায়ুজীবী একা কাক।
পবন-পদবী নেইতাে আমার, একা থাকি।
মঙ্গলঘট দুটি যেন সাদামাটা জলঘটি, মাটিতে গড়ায়
একা বসে থাকি ঠাঁয়।
খসে যাই জীর্ণ পাতার মতাে ভাঙা বিছানায়
শূন্য মাঘমাস।
এই প্রথম তােমার আকাশ বজ্রবিদ্যুৎহীন
দীনভিখারীর মতাে এসেছি তােমার দ্বারে
চাইতে পারিনি কিছু মুখ নীচু ।
চাইতে পারিনি কিছু
ক্ষমা কর-অপরাধ
তারও ছিল জেগে থেকে ঘুমােবার সাধ ।
ডুবন্ত কণকপুরী, সেথা ছিল প্রণয় অগাধ,
ছিল জাগিবার-ঘুমােবার সাধ
চারিপাশে প্রণয় অগাধ।
চারিধারে প্রণয় অগাধ।
ইশারা
ব্রহ্মান্ডের সন্ধিবিচ্ছেদ করতে গিয়ে অন্ড গড়িয়ে পড়লাে খাতা থেকে
পাতা থেকে গড়াতে গড়াতে পাহাড় নদী ও বনে এবং প্রাথিত উর্ষতায় দুম ফটাস ।
প্রকাশিত একখানা সবুজ পৃথিবী , ডালে ডালে পাখি ও ময়ূর ।
তারাপদ পাথুরে টিলায় ।
তারাপদকে আপনারা চেনেন, গ্রাজুয়েট , অ-বাম , কাঠবেকার
নতুন আকাশে কালপুরুষের মতাে নীবিবন্ধে রাঙা তলােয়ার
নতুন পৃথিবীতে মাটি ও মানুষের পাশে যেন তারাপদ নতুন তারকা।
রাতের আকাশে আজো আগুন ঝরায়।
আমাদের কলেজের বন্ধু তারাপদ মাজী। মাল্টিপার্পাস এগ প্রজেক্টের নবীন তারকা।
ভুন্ডলে লাখাে লাখাে অন্ডে প্রাণ ।
লাখাে লাখাে তারকাখচিত আকাশের দিকে চেয়ে থাকে তারাপদ।
আলাের ইশারা থেকে দুরে নয় আগামী জীবন ।
★★★