নূ পু র রা য়-র কবিতাগুচ্ছ

পরিচিতিঃ বর্ধমানে জন্ম। বর্ধমানেই বাস। নূপুর মনে করেন তিনি কোন পরিচিতিই তৈরি করতে পারেননি। টুকটাক লিটল ম্যাগাজিনে লেখালিখি আর ছবি আঁকা আর অল্পস্বল্প মাটির কাজ, এটুকুই তাঁর নিজের কাছে নিজের পরিচয়। আজ বাইফোকালিজম্-র পাতা তাঁরই গুচ্ছকবিতার ডালিতে সুসজ্জিত হল।

 

নূ পু র রা য়-র কবিতাগুচ্ছ

 

এবং একা

এক

আকন্দের ঘন নিঝুম প্রত্যন্তে ডাহুক তিনমাত্রা থেমে থেমে ডাকছিল আর সেই ডাকের নিভৃতিতে ঢুকে পড়েছিল দাবদাহের আস্ত একটা শহর। সে কোন মাস, সে কোন কালের ষড় আজ আর মনে পড়ে না শুধু গ্রীষ্ম যেতে যেতে বারবার পিছু ফিরছিল। শানাচ্ছিল দিকবিদিক করাল ল্যাজের ঝাপটায়। বর্ষা সেবার খরার মধ্যে গুটিয়ে ফেলেছিল নিজেকে। অপ্রেমের মুষলধারায়। সমস্তকাল পাঁশুটে আগুনে ঘেঁটে ঘনীভূত হয়েছিল মহাধূমে।

দুটো তাজা রজনীগন্ধার মালা অস্তিত্বহীন স্বপ্ন ছিটিয়ে ছিটিয়ে শুকনো একদিন ঝুরঝুর ঝরে গেল

দুই

সমস্ত মুগ্ধ প্রয়াস একদিন থিতিয়ে এল। এবং একা থাকার যাবতীয় প্রলোভন আলগোছে ব্যর্থ হয়ে গেল। করুণ মিনতির মতো দাঁড়িয়ে আছি সহজ যাপনের এপারে। নিচুস্বরে বিষাদ নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছে অভ্যাসের গূঢ় সংকেতে। অদূরে একটা অবুঝ সরল সেতু। ইশারা ছোড়ে। অদূরে শহরের, বাজারের, জানোয়ার আর কোলাহলের লোলুপ ভিড়।

ঠাহর করতে পারি না অন্ধকারে। দূরে তারাদের কাঁপা কাঁপা রাত। একা এবং একা একটা কালিমাখা কূপি জ্বালানোর ব্যর্থ মহড়া দিয়ে যাই মাত্র

তিন

প্রবল রাতের উঠোন। অন্ধকার গিলে খাচ্ছে খাঁ খাঁ করে। স্বপ্নের মধ্যে আঁকাবাঁকা সিঁড়ি ভেঙে প্রায় মিলিয়ে যাওয়া খোয়াবের কিছু ভগ্নরেখা অভ্যাসে খেলে বেড়ায়। মস্তিষ্কের কানাগলি জুড়ে বেখেয়ালি দখলদারী বাড়ে।

ভাসানের শরীর পড়ে আছে মরুভূমির সঙ্গোপনে। খেজুরের ফলন এবারে তেমন হয়নি। ভাঙা কলসির গলায় বাঁধা দড়ি গাছে গাছে শূন্যে হাতড়াচ্ছে। বালির দানা কড়কড় করছে টলমলে আটকে রাখা কৌশলে আর খেজুররসের তলানিতে…

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *