প্রাচীন বাংলার সময় কাল
প্রাচীন বাংলার সময় কাল
(The Historic Period of ancient Bengal)
গৌড়ের রাজা শশাঙ্ক সপ্তম শতাব্দীতে সুহ্মদেশ স্বীয় রাজ্য ভুক্ত করেন এবং উক্ত শতাব্দীর মধ্যভাগে সুহ্ম রাজ্য শিলাদিত্য হর্ষবর্ধনের রাজ্য ভুক্ত হয়। এই সময় চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সিয়াং ভারতবর্ষে আসিয়া ভারতের বিভিন্ন স্থান
পরিদর্শন করেছিলেন। তার ভ্রমণ-বৃত্তান্ত পাঠ করে
এটা জানা যায়, তৎকালে বাঙলাদেশ ছয়টি বিভাগে বিভক্ত ছিল বলিয়া জানতে পারা যায়।
তার সময়ে কর্ণসুবর্ণ বলিয়া একটি রাজ্যের উৎপত্তি হয়েছিল এবং তিনি তাম্রলিপ্ত হ’তে কর্ণসুবর্ণ এবং কর্ণসুবর্ণ হতে উড়িষ্যার পথে
গমণ করেছিলেন। ছয়টি বিভাগে ছয়জন রাজা
রাজত্ব করিতেন বলে তিনি তার ভ্রমণ কাহিনীতে
লিখেছেন।
“The Milinda-Panho mentions Vanga in a list of maritime countries where ships
Congregated for purposes of trade. In the
Nagarjunikonda inscriptions we have reference to Vanga in connection with the
Missionary activities of” the masters and fraternities. Of monks of Ceylon.
From the forth century A. D. onwards the epigraphic records which are assign able
to distinct Chronological periods (such as the Gupta, early post-Gupta, Pala and Sena ages) enable us to trace more clearly
the chief political or geographical divisions
and administrative unit of Bengal. Unfortunately the boundaries of some of the unit cannot fixed with any degree of certainty, and the difficulty is increased by the fact that the extent of even well known
division like Gauda,Vanga, and Radha varied in different ages. “
“চোল, পান্ড্য, সত্যপুত্র, কেরল পুত্র, তাম্রপর্ণী(তাম্রপল্লী) এবং অংতিয়োকো অর্থাৎ
এন্টিয়োকাস্- এর রাজ্য এই কয়টি সীমান্ত রাজ্য তখন স্বাধীন ছিল। এই সকল রাজ্যের রাজাগণ ভিন্ন আর কোন প্রত্যন্ত নৃপতি সেই সময়ে স্বাধীন ছিলেন না। এই তথ্য অশোকের শিলালিপি হতে জানা যায়। মৌর্য্য সম্রাটদের আমলে ‘পুরাণ’ নামে
একপ্রকার রৌপ্য মুদ্রা প্রচলিত ছিল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য পুরাণ’ আবিস্কৃত হয়েছিল। সুতরাং বাংলাদেশ মৌর্য্য শাসনাধীন, অত্যন্ত প্রাধান্যধীন ছিল, একথা বলা যেতে পারে।
শুঙ্গ শাসনকালে ও পুণ্ড্রনগর সমৃদ্ধশালী ছিল সেই
প্রমাণ মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত শিল্প- নিদর্শন হতে অনুমিত হয়। বাংলা,বিহার, উড়িষ্যায় কুষাণ আমলের বহু মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছিল। মহাস্থানগড়ে
কণিষ্কের মূর্তি অঙ্কিত মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। তমলুক, বগুড়া,, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি অঞ্চলে কুষাণ রাজগণের মুদ্রা পাওয়া গেছে।
“কুষাণ আমলে বাংলাদেশের কিয়দংশ হয়ত বা কুষাণ সাম্রাজ্য ভুক্ত ছিল, (ডক্টর রমেশ চন্দ্র মজুমদার) “
টলেমির রচনা ও পেরিপ্লাস নামক গ্রন্থে খ্রীস্টীয়
প্রথম ও দ্বিতীয় শতকে বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চল নিয়ে এক শক্তিশালী রাজ্য গঠিত ছিল, এই রাজ্যের রাজধানী ছিল গঙ্গে(‘ Gange) এবং
এটি প্রসিদ্ধ বাণিজ্য বন্দর ছিল। “মসলিন’ নামক সূক্ষ্ম সূতীবস্ত্র এখানে হতে রপ্তানী হত।
★প্রাচীনকালে বাংলার শাসন ব্যবস্থা
( Administrative system of ancient Bengal)
আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের পরবর্তী কালে যে বিশাল মৌর্য্য সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটেছিল, তাহা বাংলাদেশের উত্তরাংশ অর্থাৎ উত্তর- বঙ্গ
ও উপকূল অঞ্চল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। বৌদ্ধ, গ্রীক লেখকদের রচনা হ’তে এটা অনুমান করা যায়। মহাস্থানে প্রাপ্ত ব্রাহ্মী লিপিতে পুন্ড্রনগর কে
একটি সমৃদ্ধ শালী নগর বলা হয়েছে। ঐতিহাসিক
-গণ এই লিপিটি মৌর্য্য যুগের বলিয়া অনুমান করেন। গ্রীক দূত মেগাস্থিনিসের ‘ইন্ডিকা’ নামক
গ্রন্থের যে সকল অংশ এযাবৎ উদ্ধার করা হয়েছেতার থেকে জানা যায় যে, মৌর্য্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের
আমলে ‘গঙ্গারিডয় রাজ্য অন্ধ্র রাজ্যের ন্যায় স্বাধীন ছিল এবং কলিঙ্গ রাজ্য গঙ্গারিডয় রাজ্যের সহিত সংযুক্ত ছিল। ( বাংলার ইতিহাস, রাখালদাস
বন্দোপাধ্যায়)
গুপ্ত যুগ আরম্ভ হবার সময়, আনুমানিক খ্রীষ্টীয় তৃতীয় শতকের শেষ অথবা চতুর্থ শতকের প্রথমে, বাংলাদেশে কৌমতন্ত্রের (clannish rule) অবসান হয়ে রাজতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল (বাঙলার ইতিহাস,
ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত)। শুশুনিয়া পর্বতগাত্রে উৎকীর্ণ লিপি, সমুদ্রগুপ্তের লিপিসমূহ, কলিকাতার অনতিদূরে (উত্তর ২৪ পরগণা জেলায়) অবস্থিত
চন্দ্রকেতুগড়ে প্রাপ্ত নিদর্শন হ’তে বাংলার বিভিন্ন রাজ্যের কথা জানা যায়। সমুদ্রগুপ্তের আমলে
সমতট ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল। আবার চৈনিক পরিব্রাজক ই-সিঙ’ এর
বিবরণ অনুসারে শ্রীগুপ্ত (গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা) বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের জন্য বাংলার বরেন্দ্র ভূমিতে একটি বিহার বা মঠ নির্মাণ করেছিলেন। সমুদ্রগুপ্ত উত্তর-ভারত বিজয় কালে চন্দ্র বর্মন
নামে জনৈক রাজাকে পরাজিত করেছিলেন বলিয়া ‘এলাহাবাদ প্রশস্তি’তে উল্লিখিত আছে।
এই চন্দ্রবর্মনই বাঁকুড়া হতে ফরিদপুর পর্যন্ত
বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে গঠিত পুষ্করণ রাজ্যের রাজা
ছিলেন একথা অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন।
কেহ কেহ আবার দিল্লির মেহেরৌলি-স্তম্ভে উৎকীর্ণ
চন্দ্রবর্মনের সহিত পূষ্করণ রাজ্যের এই চন্দ্রবর্মনকে
এক করে দেখেন।
এ রাজ্যের রাজা সমুদ্রগুপ্তর আনুগত্য স্বীকার করতেন এবং বাৎসরিক কর প্রদান করতেন।
“The Susunia inscription of the fourth century A. D. refers to a place called Pushkarana which has been identified with the Pokharanaon the South Bank of Damodar in the Bankura district. To its famous ruler Chandravarmana had been
ascribed the foundation of Chandravarmana-kota mentioned in a Faridpur Grant. This stronghold is said to be represented by the fort at Kotalipada in the district of Faridpur. “
“Evidence is not altogether lacking that Samudragupta himself carried his victorious arms into Bengal. For among the kings of Aryavarta, who were, according to othe Allahabad Prasasti, uprooted by Samudragupta, we find the name of Chandravarmana who may be reasonably
Identified with the king of that name mentioned in the Susunia inscription as ruler of Pushkarana. (Dr. H. C. Roychaudhuri holds that Chandra may be one of the “two kings named Sada-Chandra and Chandramsa mentioned among the
Post-Andhran kings of Naga lineage” in
Puranas. None of these proposals however,
is supported by convincing arguments.)
This Pushkarana has been plausibly identified with the village named Pokharanaon, 25 miles north-east of Susunia on the South Bank of the river, Damodar, which has yielded considerable
antiquities reaching back to the Gupta period, if not earlier. Chandravarmana may
thus be regarded as the king of Radha or the region immediately to its South, by defeating whom Samudragupta paved the way for the conquest of Bengal. “
References:
ভারতের ইতিহাস কথা-১৯৯৩
ডঃ কিরণচন্দ্র চৌধুরী
The History of Bengal, vol-l(1943)
Dr. R. C. Majumdar
হুগলী জেলার ইত্যাদি -১৯৪৮
সুধীরকুমার মিত্র বিদ্যাবিনোদ