শ্রী কানাই লাল দীর্ঘাঙ্গী-র
চন্দ্রকোনার হারিয়ে যাওয়া ছোট ছোট ইতিহাস নিয়ে
মেদিনীপুরের ভুলে যাওয়া ইতিকথা
ছবিঃ গৌতম মাহাতো
পর্ব-২২
বিদ্রোহ বহ্নি
নীল কুঠি, নীলের টুসগান,
চন্দ্রকোণার তাঁত শিল্পের অবস্থা
ও নীল বিদ্রোহ
শ্রী কানাই লাল দীর্ঘাঙ্গী
নদীর ধারে নীল বুনিলাম
……………………………..
কুসুম ফুলের ছাপ আছে।
প্রকাশ থাকে যে লেখকই গানটি সর্বপ্রথম সংগ্রহ
করে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির
মেদিনীপুর জেলা শাখার মাসিক মুখপত্র
‘মেদিনীপুর শিক্ষক বার্তা’ ৭ম বর্ষ ৯ম সংখ্যাতে
“ছড়ায় মেদিনীপুর” নামক প্রবন্ধে উল্লেখ করেন।
পরে এই গানটিও মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রাম
সম্বন্ধে এই এলাকার বিস্তৃত তথ্য সহ মাননীয় বসন্ত কুমার দাস মহাশয়কে “স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুর প্রথম খন্ড নামক পুস্তকে প্রকাশ করার
জন্য দিয়েছিলেন’।
শ্রী রাধা রমন সিংহ মহাশয়ের লেখা থেকে জানতে পারি ” নীলকর সাহেবগণ এতদঞ্চলে কেবল যে
চাষীদের দ্বারা নীল চাষ করিয়ে কুঠিতে নীল তৈরি
করত তা নয়; তারা এই কুঠিগুলি থেকে
চন্দ্রকোণা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তাঁতিদের প্রচুর পরিমাণে অর্থাদি দাদন দিত এবং প্রথমত
এই অঞ্চলের কাপড় গুলি খরিদ করে’ এই সব
তাঁতীদের নিকট বস্ত্র বয়ন বিদ্যা উত্তমরূপে শিক্ষা
লাভের জন্য’ কাপড়ের পাড় গুলিকে বিলাতে চালান দিত”। কারণ সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ
থেকে ইংল্যান্ডে তুলা প্রস্তুত করবার জন্য যন্ত্র
আবিষ্কার হয়। ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে ভ্যালেনটিন নামক
এক ইংরেজ বঙ্গদেশে কোন কোন স্থানে বস্ত্র শিল্পের প্রসার ছিল তার একটি সমীক্ষা করে ও
তার মানচিত্র অঙ্কন করেন। তাতেই চন্দ্রকোণা
সুবৃহৎ বস্ত্রবয়ন কেন্দ্র ও বানিজ্য প্রধান নগরী
রূপে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ১৭৬৯ খ্রীস্টাব্দে
ক্রম্পটন spinning Machine আবিষ্কার করেন।
১৭৮৫ খ্রীষ্টাব্দে আর্করাইট আবিষ্কার করেন
Weaving Machine, এ সময় বিলাতে শিল্প বিপ্লব
ঘটে এবং ঐখানে কলের কাপড় তৈরী হতে থাকে।
কিন্তু তখন কাপড়ের পাড়ের সূক্ষ্ম নকশা ইংরাজরা
করতে জানত না। তারা চন্দ্রকোণা হতে পাড়গুলো
নিয়ে গিয়ে ঐ পাড়ের নকশা শিখে।
ক্রমশঃ…
★★★