ছবিঃ গৌতম মাহাতো
চন্দ্রকোনা হারিয়ে যাওয়া ছোট ছোট ইতিহাস নিয়ে
লিখছেনঃ– দুর্গাশঙ্কর দীর্ঘাঙ্গী
মেদিনীপুরের ভুলে যাওয়া ইতিকথা
পর্ব-১৩
ঐতিহাসিক চন্দ্রকোণা
রেশম কুঠি, মগ জলদস্যু এবং
ক্ষীরপাই এর রেশম ও ফকির
বিদ্রোহের ইতিহাস।
শ্রী কানাই লাল দীর্ঘাঙ্গী
দুই ভাই, হরেক চাঁদ ও বুল চাঁদ তেওয়ারী প্রথমে
সাহেবদের অধীনে কুঠিতে কাজ করতে থাকেন। তারপরে স্বীয় প্রতিভা বলে রেশম কুঠির মালিক
হয়ে যান। কোন সময় এদের সহিত কুঠিয়াল সাহেবের মনোমালিন্য দেখা দিলে এঁরা এক কুঠিয়াল কে ভীষণভাবে অপমানিত করেন।
এমনকি সাহেবের টুপিতে প্রস্রাব করে দেন বলে
প্রবাদ আছে। এতে কুঠিয়াল সাহেবের সহিত
তেওয়ারী বাবুদের দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে।
ইহাই “ক্ষীরপাই এর রেশম বিদ্রোহ’ নামে খ্যাত।
এছাড়া ক্ষীরপাই শহরের ফরাসী রেসিডেন্ট
এডওয়ার্ড বাবর কর্তৃক এতদঞ্চলে বর্গী হাঙ্গামা
দমন কাহিনী ফরাসীদের বীরত্বের কথাই স্মরণ
করিয়ে দেয়। স্মরণ করিয়ে দেয়, মগ জলদস্যুদের
অত্যাচারের ‘মগের মুলুক’ প্রবাদ বাক্যটি। কারণ
এখানে ক্ষীরপাই এ মগের ভিটা নামক এক জায়গা
আছে। ইহা বিশাল পুকুরের উত্তরপাড় হতে গয়লা
ভিটা ও সতীমাড়ো পর্যন্ত বিস্তৃত। সে যা হোক,
হরেক চাঁদ ও বুল চাঁদ তেওয়ারী ৺চন্ডী চরণ তেওয়ারী মহাশয়ের পূর্বপুরুষ। এই শহরের
তেওয়ারী বাবুদের ভগ্নপ্রায় ইমারতটি সেই সময়ের
রেশমকুঠি। পূর্বেই বলেছি তৎকালে শিলাবতী নদীর দুই পার্শ্বে ইতস্ততঃ বহু নীল ও রেশম কুঠি ছিল। সেহেতু আজও ঘাটালের বাজারকে কুঠি
বাজার বলে। বর্তমান ফৌজদারি আদালত টি
প্রাচীন রেশম কুঠির নিদর্শন। ক্ষীরপাই এর তেওয়ারী বাবুদের বাড়ী থেকে সংগৃহীত তৎকালীন
কিছু রেশম ও প্রামানিক তথ্য “লেখকের প্রতিষ্ঠিত
” চন্দ্রকোণা সংগ্রহ শালা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে
সংরক্ষিত আছে। বেড়াবেড়িয়া গ্রামে এই সাহেব -দেরই কবর আছে।
১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহ হয়।
ক্ষীরপাই শহরে বিদেশী গণ কর্তৃক ধর্মের উপর
অত্যাচার হলে একদল সন্ন্যাসী এই শহরে প্রবেশ করে।
ক্রমশ…