হী র ক ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়-র কবিতাগুচ্ছ
ধনুর্বাণ
একটি দুটি করে ঝরে পড়ছে বকুলপাতা দিনকেদিন
আমার জন্মদিনের মহামূল্য উপহারগুলি
কেউ না কেউ এসে আমার সামনে গুছিয়ে রাখছে
রঙ ঝলমলে কাগজগুলি
আজ রাত্রিতে তুমুল খাওয়াদাওয়া
আমোদ হবে খুব …
তবু আমার মনে সুখ নেই
ভালোমন্দ সব চক্রান্তকারীদের নখদন্তহীন মুখচ্ছবি
কেন যে ভেসে আসছে মুহূর্মুহূ
এতদিন পরেও ভুলতে পারছি না
কে কখন কীভাবে আমায় কাচি করে দিয়েছিল
ভুলতেতো চাই সমূলে কিন্তু
নীল ঝাঁপি খুলে বেরিয়ে আসছে বিষহরি
নিরন্তর নজরদারি, শব্দ করে ফোঁসফোঁস…
আদিগন্ত ভস্মস্তুপ ফেলে যায় যে অপমান
মনে পড়ে সেকথাও
মানুষ ভালবাসা ভুলে যায় অপমান ভোলেনা কখনো
বোধবুদ্ধিহীন সবকিছু
থমকে যায় সুবাতাস, উপত্যকা অটোগ্রাফ
লাল ডায়রি ডটপেন
আলকঝঙ্কৃত ধনুকের ছিলা …
স্বপ্নবীথিকা
বাইরে থেকে যে সংকেতকে দেখা যায় না
তুমি তাকে বাহুতে,আঙুলে ধারণ করো
সুন্দরী নারীদের হাত থেকে ছিটকে পড়া
করমচা তারপর একে একে নিজেদের নাম
উজ্জ্বল অক্ষরে লিখে রাখো
হে আমার বিগলিত পিয়ানো
স্বপ্নবীথিকা,নিঃশ্বাসের বায়ু সুদূরে হারিয়ে যাওয়া
রেলপথ …দুহাত জড়ো করে আজ বলো
ও আমার একমাত্র দয়িত
ও আমার সুবর্ণরেখা আমার উল্লাস আমার প্রাণ
চিহ্নিত করো,বাইরে থেকে যে সংকেত দেখা যায় না
যখন তোমার পায়ের তলায় কোনও মাটি নেই
তবু যে আমরা আভিধানিক চাঁদে পৌঁছাবো
কোনোনা কোনো একদিন
তার জন্যই এত আয়োজন,ভুলভ্রান্তি
এত মুখরতার লক্ষণ …
এই ভাবে দিন যাবে
হ্যাঁ স্যার আমি দেখেছি।আজও চোখ বন্ধ করেও
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
সমুদ্রের দিকে এক সুন্দরী নারী পাঠাচ্ছে তাঁর সংকেত । আবর্ত, নির্বাক অভিমান।
এদিকে আকাশে কচিকলাপাতা মেঘ
জানলার বাইরে ধূ ধূ মাঠ
পৃথিবীর স্বপ্নবিলাসী, ব্রহ্মাণ্ডের সর্বত্রই
সামিয়ানাতলে শুদ্ধ হয়।
কারা যেন ভেবেছিলো এই ভাবে দিন যাবে
কারা যেন ভেবেছিলো সানন্দে সুস্থির চিত্ত
মিশে যাবে মানব আবেগে।
অথচ ঘুম থেকে উঠে দুয়ারে হলুদ পর্দা
কে টাঙালো ?
ঘাস লতা পশুপাখি নির্বাক হলো
রাজপথে কোনও জনপ্রাণী নেই
শুধু শুনসান বাতাসের দূষণ
ঘরে ঘরে নি:শ্বাস বন্ধ মেঘেরদেশে স্হির ছায়া
সমস্ত সংহত ঘরের কপাটে
শুধু সন্ধ্যা হলে মোমবাতির আলো কাঁপে
সারারাত নিষ্কম্প
কাঞ্চনপ্রভায় জ্বলে ……
দেখা হয় না
আর কোনও দিন দেখা হয় না, আর কোনও দিন
দেখা হবেও না
সুখ এবং দুঃখের মতো একে অপরকে আষ্টেপৃষ্ঠে
নিঃসংকোচে, জেলে ডিঙির মতো…
বড়ো ঈর্ষা হয় ,যে সময় কাটলো
উৎসব হলো না ঠিক
তবু রাসমঞ্চে কালো বিড়াল আর সাদা ইদুরের খেলা
দুর্গা মন্ডপে ব্রিজ ব্রে টোয়েন্টি নাইন
নিয়ে আসে এখনো হিম শিহরণ
শুধু এই, এই মাত্র
না– যে লোকটার নাম ছিল স্বপন বুড়ো
প্রথম প্রেমের মতো রক্তকরবীর
লালে লাল হ ওয়া ,গ্রামের আর্মেচার পার্টির যাত্রা
আহা একজীবনে আর কতো…
কথায় কথায় চোখে জল আসে
লোকে ভাবে পাগল…
লোকে ভাবে বুড়ো ভাম…শেয়ানা …চতুর …
প্রতিশোধ
বোঝো অশনি সংকেত কাকে বলে ?
আবার ফিরিয়ে দিচ্ছো ? প্রতিশোধ নেবে না…
নবমী নিশিতে সবসময় কালীমাতা খুব সহায়
কেউ নেই কিছু নেই তবু
আত্মাতে রেখোনা বিলাপ
বিশ্বাস করিনা তুমি… না না অসম্ভব…
নিউজপেপার পড়িনা আর,কী হবে ?
একদিন সর্বাঙ্গ উজাড় করে খুজেঁছো
প্রেম ও মৃত্যুর মতো
উদ্ধারের আঙুল …
আজ তার চিহ্ন মাত্ৰ নেই
আসমুদ্রহিমাচল, বিস্ফোরনের আগে
যেমন থমথমে নিস্তব্ধ চরাচর
আবারো ফিরিয়ে দিচ্ছো… কেন প্রতিশোধ
নেবে না …?
সাক্ষাৎকারের সামনে
ডিং ডং । ডিং ডং । যাই ।দরজায় বেল পড়লো।
তুমি জানতে না,স্টিমার ঘাটে ভাতের হোটেল।
একই দেওয়াল অথচ অন্যদিকে জন্মাচ্ছে শিশু ।
অন্যদিকে স্টেনগান
বোমার উপচার।
__আ্যশট্রেতে মরা সিগারেট ।
পথে বেরোলেই পাকস্থলী শূন্যময়
প্লাস্টিকে আর ডি এক্স
যথাসাধ্য, সার্থক জনম আমার …
নিসর্গের মধ্যেই রয়েছে এক রেল সেতু।
কী বল্লে ,নিম্নচাপের বৃষ্টিতে থৈ থৈ …
ঐ ঝি ঝিঁ ডাকলো
যাই। লাইব্রেরির মাঠে ,ওরা অপেক্ষা করে আছে
সাক্ষাতকারের সামনে
মুখ খুলতে যাওয়া ।