গৌ ত ম   ম ণ্ড ল-র ধারাবাহিক উপন্যাস– “হেঁতালপারের উপাখ্যান”(২১তম পর্ব)

পরিচিতিঃ ১৯৮৩ এর ১৫ই জুন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ বড়রাক্ষসখালিতে জন্ম। জল জঙ্গলে বড় হয়ে ওঠা। বর্তমানে দক্ষিণ২৪ পরগণার কাকদ্বীপের একটি বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। কবিতার নিয়মিত লেখক নয়।বাইফোকালিজম্-র পাতায় আজ তাঁর ধারাবাহিক উপন্যাস “হেঁতালপারের উপাখ্যান-র ২১তম পর্ব

গৌ ত ম   ম ণ্ড লর ধারাবাহিক উপন্যাস

হেঁতালপারের উপাখ্যান(২১তম পর্ব)

অপু ও অন্যরা
“আমি কি ভীষণ ভাবে তাকে চাই ভালোবাসা জানে।”শক্তি চট্টোপাধ্যায়
সব ইতিহাস শ্মশানে লেখা থাকে না। সব ভবিষ্যৎ গোরস্তানের মাটিতেও খোদাই করা থাকে না। মানুষের শেষ ঠিকানা শ্মশান কিংবা গোরস্তান শুধু নয়। সবাই ঠিক কথা বলে না। অনেক দিন আগে আমাদের খ্রীষ্টান মহল্লায় একটা ক্যাথলিক চার্চের পাশের গ্রেভ ইয়ার্ডে বসে চন্দন আমাকে সে কথাই বলেছিল যা বহুদিন আগে মন্টু সাউ আমাদের শ্মশান ঘাটে বসে আমাকে বলেছিল। সমাধিস্থলে একেকটা সমাধির উপর যাদের পরিজনরা পেরেছিল, একটা ঠিকুজি লিখিয়ে রেখেছিল সিমেন্টের প্লেটের উপর। যেমন “মাইকেল নেয়ে,আবির্ভাব: ফাদার জন ক্রুজ যে বছর এসেছিলেন, প্রভুর নিকট গমন: ১৯৯৫ এর ৩ রা মে”। এ তো সহজ বাংলায় জ্বলজ্বল করা লেখা। এ ইতিহাস বটে। কিন্তু যারা কোনো পরিচয় টরিচয় না নিয়েই শুয়ে আছে সমাধিস্থলে তাদের প্রত্যেকের ইতিহাস আছে। এটা ঠিক লেখা নেই। অলিখিত ইতিহাস খুব গুরুত্বহীন, কে বুঝবে সে ইতিহাসের মর্ম কথা! আবার এই সমাধিস্থল দেখে অনেকের ভিতর তীব্র দার্শনিক চিন্তার গভীর আবেগের জন্ম। তারা বলে এই হলো সবার ভবিষ্যাৎ, ঠিক যেমনভাবে মন্টু সাউ শ্মশানের পাশে বসে আমাদের ভবিষ্যৎ দেখিয়েছিল। কিন্তু আমি নিশ্চিত এসবই আংশিক ভবিষ্যৎ, সবটা নয়। সব মানুষের শেষ ঠিকানা শ্মশান কিংবা সমাধিস্থল নয়। কিছু মানুষ শেষমেষ কোথায় আশ্রয় নেয় তার হদিশ কেউ নিতে পারে না।
  আমার দ্বীপ, আমার মহল্লা আর আগের মতো আকর্ষণীয় ছিল না আমার কাছে। প্রায় বছর দেড়েক পর যখন এখানে ফিরলুম তখন আমি আর আগের মতো নেই। সদ্য কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছি। আমার ভিতরে তখন অনেক অনেক গোলাপ নয়, গোলাপ গাছের বন জংগল জন্ম নিয়েছে। আমি সেই ঝোপঝাড় তন্ন তন্ন করি প্রত্যেক মুহুর্তে একটা বিশেষ গোলাপ খোঁজার জন্য। আমি জানি সে কেমন গোলাপ। ডাঁটা শুকিয়ে কাঠ, পাঁপড়িগুলোও কবে শুকিয়ে গেছে। গন্ধ নেই, রূপ রস কিছুই নেই। তাকে জল দিয়ে সতেজ করে তোলারও কেউ নেই। জানি না সেটা কোথায়। কোনো ইঁদুরে টেনে নিয়ে কুচিকুচি করে হয়তো কেটে ফেলেছে। কিন্তু আমি তাকে দেখলে ঠিক চিনে ফেলবো। কারণ তার পাশে একটা পুরানো, স্যাঁতস্যাঁতে জীর্ণ কাগজের অংশ থাকবেই, যাতে লেখা থাকবে ” তুমাকে অনেক দিন দেখিনি বলিয়া আমার কষ্ট হঅটে”।
 সেই বিকেল থেকে শ্মশান ঘাটে বসে আছি।কেউ নেই আর, আর কারুর থাকার কথাও নয়। যার থাকার কথা সে অনন্ত প্রতীক্ষায় রেখে গোটা পৃথিবী জয় করতে বেরিয়েছে। কেন যাবে না? কী আছে এই পোড়া দ্বীপে! শুধু কিছু দীর্ঘশ্বাস, কিছু বাঁজা প্রেম, কিছু উৎকন্ঠা আর শেকলের মতো চারদিকে গাঙ আর গাঙ, যা দিয়ে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখা একটা ভিখিরি ভূ-খণ্ড। আমি কখনো তাকে ট্রাজেডির নায়ক বলে মানি না। আমার ভিতরে আর একটা আমি যখন পুড়ে যাওয়া ঘরদোরের ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে পারে না, তখন তাকে আমি বোঝাই, এখানে কিছুই পোড়েনি, ধোঁয়াও নেই; মহারাজ গেছেন দিগ্বিজয়ে। একটা বিশাল নৌবহর, মহারাজ উঠে বসেন। বিদায়বেলায় টেলেমেকাসকে বলে যান “সব কিছু লক্ষ্য রাখবু, ভাল রইবু”। আমি শুধু সেই রাজকুমার টেলেমেকাসকে খুঁজি। তাকে জিজ্ঞেস করবো ” সে কি আর কিছু কইতল?”
  কে রে অঠি বুসসুউউউউউ?
মন্টু সাউর গলা।
আমি,অপু গোওওওও
আচ্ছা যাইটিইইইই।
‘আহ্লাদি’ চড়ে বৈঠা বেয়ে আসছে মন্টু সাউ। ঘাটে এসে বৈঠা তুলে নৌকায় রাখে, তারপর একটা গাছের সংগে বাঁধে আহ্লাদিকে। বাঁধে উঠে আসে। পরনে একটা খদি,কাঁধে গামছা।
কীরে কচি, কবে আসসু? হাসি মুখ মন্টু সাউর।
আইজ।
ওহ।
বসে পড়ে আমার পাশে। ট্যাঁক থেকে বিড়ি বের করে। ছর্ করে দেশলাই কাঠি জ্বেলে ধরায়। একটা টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ে।
এঠি কউ কুনদিন বুসেনি, শুধু আমি একলা যখঁ তখঁ আইসিয়া বুসি। আইজ তোকে দেখিয়া অবাক হইছি। পথমে তো চিনতে পারিনি।
ওহ
দ্যাকচু, এ জাগাটা কত ভাল!
হুম
বাদ দে, ভালো আছু কচি।
হঁ গো, তুমি ভালো আছ?
আছি আর কি! কী লুবু আমার কথা, বয়স হয়া যাআটে!
তুমার কথা খুব মনে হয় গো।
আমার কথা? অবাক হয়ে যায় মন্টু সাউ।
হঁ, তুমার কথা।
হেসে ফেলে মন্টু সাউ।
শীকান্তদা টা সব কির্কম আছে গ’?
ভাল আছে রে কচি। তোর কথা কয় খুব, তুই তো অনেক দিন আইসুনি।
হঁ।
সন্ধ্যা হয়াইসেটে। আমি একটু গাঙে ঘুরবো। জুয়ার পড়িছে। তুই কি এঠি বুসবু কচি?
আমি?
হুঁ।
নাহ্, ভাল্লাগেনি কিছু।
যাবু?
কাই?
গাঙে।
চল’, সেপাসনু ঘুরিয়াইসি চল’
চ’ তোর যেখাঁয়ে ইচ্ছা চ’
মন্টু সাউ উঠে পড়ে। নৌকা খুলে উঠে পড়ে। আমিও উঠে পড়ি। অবলীলায় নৌকার পাছায় গিয়ে ব’সে বৈঠা তুলে নিই। মন্টু সাউ ঈষৎ ঠোঁট ফাঁক করে হাসে। ছপাস করে বৈঠা নামায় জলে। এঁকে বেঁকে ঘাট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে আহ্লাদি। একবার বামে, একবার ডাইনে ঘুরিয়ে বৈঠা চালায়। নৌকা একবার এদিক, একবার ওদিক মাথা নেড়ে নেড়ে এগোতে থাকে। ছোটবেলার মতো আহ্লাদিকে নিয়ে খেলতে থাকি অথৈ মাঝ গাঙে। আহ্লাদিও যেন আমার হাতের বৈঠায় খুশি হয়ে গা দোলাতে দোলাতে এগিয়ে যায়। গলুইএর কাছে রাখা একটা নাইলনের ব্যাগ থেকে মন্টু সাউ গাঁজা আর কল্কে বের করে। একটা ছোট ছুরি দিয়ে গাঁজার ফুল পাতাগুলো কুচিকুচি করে কাটে, তারপর হাতে নিয়ে দলতে থাকে। আমি হেসে উঠি।
কী রে?
অগা কী?
বাওয়ার পোসাদ।
আবার হেসে উঠি।
পোসাদ আমিও খাবো আইজ।
তুই খাবু?
হঁ।
তুই কল্কায় টাঁআতে পারবুনি।
কেনি?
অভ্যাস নেই।
অহ। তবুও খাবো।
শুঁউ।
কও।
তোকে বিড়ির ভিত্রে করিয়া দেই, তা’লে খাইতে পারবু।
দও।
একটা বিড়ি সযত্নে খুলে ফেলে। মশলা বের করে দেয়। তার বদলে ভিতরে ঠেসে দেয় গাঁজার মশলা। আবার আগের মতো সুতো জড়িয়ে দেয়। বিড়িটা আগের চেহারায় ফিরে আসে। নৌকা তখন মাঝ গাঙে।জোয়ারের জল বাড়ছে। বিকেলের সূর্য নেই, তার শেষ আভাটা লুথিয়ানের জঙ্গলের উপর পড়ে এখনো কিছুটা লাল হয়ে আছে। পাখপাখালির কিচিরমিচির শব্দ বসন্তের শান্ত আধেক গাঙ পেরিয়ে এসে কানে ঠেকছে। ‘হুয়া হুয়া’ করে একদল শেয়াল বানিচরা খালের কাছে ডাকছে। একটা বিশাল সারস নৌকার প্রায় গা ঘেঁসে উড়ে গেল লুথিয়ানের দিকে। আহ্লাদির মুখ বানিচরা খালের দিকে।
এই লে, মন্টু সাউ গাঁজার মশলাভরা বিড়ি ধরিয়ে হাত বাড়িয়ে দেয়। বাম হাতে বৈঠা ধরে আহ্লাদিকে জোয়ারের টানে ছেড়ে দেই। একটা টান মারি। কীরকম তেতো ধোঁয়ার স্বাদ। কিন্তু ভালো লাগে। মাথাটা একটু ঝাঁকিয়ে দেয়, কিন্তু একটু পরে একটা অদ্ভুত ভালো অনুভূতি আসে। হাত পাল্টে পাল্টে টানছি আর বৈঠা ধরে রেখেছি। আহ্লাদিকে বল্লুম ” তোর ইচ্ছার দাম কুনো শ্লা কুনোদিন দেয়নি। আমি দেইটি, যেদিকে পারু যা”।
কীরে কচি?
কী?
নেশা লাগিচে?
না।
চেঁচাউটু কেনি?
ভাল্লাগছে।
আমাকে বৈঠা দুবু?
না, আইজ বৈঠা কাউকে দুবনি।
আচ্ছা, চালা।
মন্টু সাউ লম্বা লম্বা করে টান দেয় কল্কেতে। নৌকা বানিচরা খালের মুখের কাছে চলে এসেছে। জোয়ারের জল বাইরের দিকে ছোট ছোট লবনাম্বু গাছগুলোর গলা অব্দি হয়ে গেছে। আবছায়া আলোকে দেখলুম একটা বানি গাছের মাথায় বিশাল এক কেউটে সাপ।
দ্যাখো। মন্টু সাউকে ডেকে দেখাতে চাই।
কী রে?
দ্যাখো।
অন্ধকার লাগচে। দেখা যাটেনি।
এদিকে আইস।
কল্কে নিয়ে এগিয়ে আসে মন্টু সাউ। তারপর দু হাতের মধ্যে কল্কেটা রেখে অদ্ভুত হাত জোড় করার ভঙ্গীতে বলে ” ম্বা গো, ম্বা মনসা, সব লোককে ভাল রাখ ম্বা”। ছপাস ছপাস করে জংগলের গা ধরে উত্তুরের দিকে খানিকটা এগিয়ে যাই। অন্ধকার নেমে এসেছে।পরিষ্কার আকাশে নক্ষত্ররা ঝিকমিক করছে। এপারের অন্ধকার থেকে আমার দ্বীপকে দেখা যাচ্ছে না। আমার বৈঠার পাতায় ফরফরাস জ্বলছে অবিরাম। পারসে মাছের ঝাঁক সহস্র জোনাকির মতো আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে গাঙের জলে। নৌকো ঘুরিয়ে মাঝখানের দিকে যেতে ইচ্ছে হলো। তার আগে কেন জানি না, আমার মুখ থেকে বেরিয়ে এল একটা চীৎকার-
শম্ভু রেএএএএএএএএএ
ওওওওও শম্ভুউউউউউউ
শম্ভু রেএএএএএএএএএএএএএএ
ওওওওওওই কাই গেলু রেএএএএএএএএ
“ডাক ডাক, আমিও জংগয়ে আইলে অনেক লোককে ডাকি। ভাল্লাগে। ডাকলে মনে হয় লোকগুয়া বাঁচিয়াছে। আইসবে। ডাক।” মন্টু সাউ একা একা বলে চলে। আমি আরো দু বার, দশবার ডাকি শম্ভুকে নাম ধরে। তারপর চুপ করে যাই। হঠাৎ আবার গলা চিরে বেরিয়ে আসে “অই শ্লা বকাচদা শম্ভু, কাই গেলুরেএএএএএ” তারপর গলা ছেড়ে চীৎকার করে কেঁদে উঠি। অনেক কালের জমা জল, হু হু করে বেরিয়ে আসে। মন্টু সাউ অন্ধকারে বিড়ি জ্বালে। হাত বাড়িয়ে আমার দিকে ধরে। “লেএ খা, চ্যাঁচা, চিক্কার কর, কউ শুঁউবেনি এঠি, আমি কষ্ট পাইলে আহ্লাদিকে লিয়া গাঙে আইসি, কাঁদি, আহ্লাদি ছাড়া আমার চোখের জ’ কুন’ চুদিরভাই দ্যাখেনি আইজ অব্দি”।
  চোখ মুছে বিড়ি টানি। বৈঠার পাতায় জল কেটে ঘুরে পড়ি দ্বীপের দিকে। অন্ধকারে মন্টু সাউ আবার গাঁজা তৈরি করছে, বুঝতে পারি। নারকোল ছিবড়ের গোলায় আগুন জ্বলে উঠে। আগুন দপ করে উঠে কল্কের মুখে।
 ছপাস ছপাস করে জল টানছি বৈঠায়। মনে হয় দ্বিতীয়া হবে, গোল চাঁদ লাল থালার মতো উঠছে আমাদের দ্বীপে। দ্বীপের জংগল দেখা যাচ্ছে রহস্যের মতো। নক্ষত্রেরা ফ্যাকাশে হয়ে যায়, মৃদু হাওয়ার মাদকতা এসে ধাক্কা মারে সর্ব শরীরে।
 ঘর যাবু? মন্টু সাউ জিজ্ঞেস করে।
আর কাই যাবো? চন্দানীর ঘাটে একটু বুসিয়া চলিয়াবো।
ওহ।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার বলে,
একটা জিনিস দ্যাখবু?
কী?
চ’
কাই?
ঘাটে চ’,  তারপর কইটি।
 চন্দ্রানীর ঘাটে আহ্লাদি এসে থামে। মন্টু সাউ নেমে একটা কেওড়া গাছে বেঁধে দেয় নৌকা। বৈঠা রেখে আমিও নেমে পড়ি। মন্টু সাউ বাঁধে উঠে হাঁটতে শুরু করে। নিঃশব্দে তাকে অনুসরণ করি আমি।
 গংগা রেএএএ, গংগা ঘড়ুইর ঘরের সামনে এসে মন্টু সাউ ডাক দেয়। লাঠি হাতে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঝুপড়ি ঘর থেকে নীচু হয়ে বেরিয়ে আসে গংগা ঘড়ুই।
কে গো, ওহহ মন্টু দা। আর কে?
আমি, আমি অপু।
ওহ।
মন্টু সাউ একটা বিড়ি ধরিয়ে গংগা ঘড়ুইকে দেয়।
চাউল দিইছে জগাই? মন্টু সাউ জিজ্ঞেস করে গংগা ঘড়ুইকে।
হঁঅ, দা, দিইছে।
রাঁধচু?
হঁ, দা।
সে কাই?
ভিত্রে পা ছাড়িয়া বুসিয়াছে।
অহ।
মন্টু সাউ মাথা নীচু করে ভিতরে ঢোকে, আমিও যাই তার পিছন পিছন। একটু আগে বোধ হয় রান্না হয়েছে, ঘরের মধ্যে ধোঁয়া। একটা নিভু নিভু লম্ফ জ্বলছে, ভাতের হাঁড়ি উনুনের পাশে।অনেক কাল হাঁড়ির কালি তোলা হয়নি। একটা শীতল চাঁটাই পাতা উনুনের একটু দূরে। সেই চাঁটাইর উপর দেওয়ালে ঠেস দিয়ে একটি মেয়ে বসে আছে। তার মাথার চুলে জট ধরে গেছে। গায়ে পুরানো ময়লা,জায়গায় জায়গায় ছেঁড়া একটা জামা। পায়ের গোড়ালিতে সহস্র ফাটল। আমি অবাক হয়ে মন্টু সাউর দিকে তাকালুম। আমার দিকে তাকিয়ে মন্টু সাউ বলে –
কে ক’ ত?
কে?
ক’অ না।
বুঝতে পাট্টিনি।
দ্যাখ।
আমি আরো ঘন হয়ে, আর একটু স’রে দেখার চেষ্টা করলুম। আবছায়া আলোকে দেখলুম মাথা নীচু করে বসে আছে গৌরি। আমি বিষ্ময়াভিভূত হ’য়ে বলে ফেল্লুম –
গৌরি…
সে আমার দিকে তাকালো। স্পষ্ট, সে চাউনি অপকৃতিস্থের।  কোনো রাগ নেই, অভিমান নেই, অভিযোগ নেই, সে চাউনি যেন গোটা দ্বীপের প্রতি একটা মায়ায় ভরা। আমি উঠে আসছিলাম। পিছন থেকে এলোমেলো অস্বাভাবিক অতিপ্রাকৃত একটা যুবতী কন্ঠস্বর ব’লে উঠল “অউ ফুলটা আর অউ চিঠিটা তাকে লুকিয়া দিই দুবঅ তো?”
ক্রমশঃ…
লেখা পাঠাতে পারেন

আগের পর্বটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন

https://www.bifocalism.com/bengali-novel-hentaaler-upakkhyan-part20-by-goutam-mandal/
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *