চ ন্দ্র না থ   শে ঠ -র গুচ্ছকবিতা

পরিচিতিঃ  হুগলি জেলার পারুল গ্রামে জন্ম, চন্দ্রনাথ শেঠের। জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন বর্ধমানে। বাড়িতে কবিতা-গান-যাত্রা-থিয়েটার চর্চার জলহাওয়ায় বেড়ে ওঠা। ফলত সাহিত্যপ্রীতি তাঁর সহজাত।বাংলাভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতা করেন। বিভিন্ন পত্রিকা এবং ওয়েবজিনে নিয়মিত লেখেন– গল্প,কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ। তাঁর বইগুলি হল : কবিতা [ ‘ঝরনা কলম‘, ‘কাঠবাদামের মালা‘, ‘জি, জন্মান্তরীণ এই আলপথে‘, ‘ইচ্ছে ধোয়া জল‘] গল্প : [”সূর্যের কলঙ্কবিন্দু‘, এবং ”ভোঁপুর বীণাপাণি হাই“] বাইফোকালিজম-র পাতা জুড়ে পাঠকদের জন্য রইল কিছু তাঁরই কবিতার ডালি।

    চ ন্দ্র না থ   শে ঠ –র গুচ্ছকবিতা

 

চৈত্র ২০২০

[এক]

দেখেছি হলুদ-বাড়ি , মেঘ—নেমে আসে

. চৈত্রের ঘাসে

‘টেক্সট কোরো…’ ‘তুইও..তুই ও ও ও’

পাখির ডানায় রোদ ছোঁয়াচে আকাশে…

 

[দুই]

মাছরাঙা শব্দেরা উঠে আসে দু’পাশে দু-ডানা

অন্তরীণ-গৃহবন্দী

‘এ ওভারে কটা ছক্কা –স্মৃতি মান্থানার…’

 

[তিন]

একই রকম—একই রকম চারটে বাড়ির পর

. সূর্য ডোবা বাড়ি

রামধনুটির নীচেই কাঁদে চৈত্র হতচ্ছাড়ি…

 

বিজ্ঞাপন বিরতি

পালতোলা নৌকায় , এইমাত্র এলেন পাতাল

কালী…জয় মা

 

আর তৃষ্ণার রক্ত নয়—মাটি ফুঁড়ে উঠতে

লাগল : বিজ্ঞাপনের জেমস লজেন্স…

হুহু শৈশবের অভিশপ্ত লাভা

 

এই সেই ঝিঁঝি ডাকা ঝিরি পথ। ঈশ্বরীর

ডেরা। মাতৃযোনি গুহাটির গহিন আঁধার

 

গলার ঝুলন্ত মালা থেকে উঠে আসছে ফিনকি

দেওয়া শৈশব। দলবদ্ধ কান্নাগাথা বারংবার।

শুয়ে থাকে জন্মান্ধ জি টি রোড। অদূরেই

 

বার ফেলে বসে আছে গ্যাংম্যান। ছুটে আসে

তেপান্তর ফুঁড়ে ওই ভোঁ…

 

ছোবল

 

নামে না অহরহ। ছেড়েছে বিদ্যুৎ। তোমারও

ছোবল

ওই নেমে এল। ‘নতুনবউ তুমি ?’ নিমেষে

আড়ভাঙে–অন্যগ্রহখানি

 

অন্যজীবন–এ গ্রহে দীন ।

আকাশগঙ্গায় এই তো স্নান সেরে জাগল শুক

তারা, নিভল ঢেউ…সূর্য টুটাফাটা। পাখির ডানায়

নেমে গ্রামের কেঠোসাঁকো কেতিয়ে শুয়ে আছে–

 

ঠিকরে যায় রোদ অন্তহীন…

 

‘সো মহ কন্তা’

একঃ

তর্জনীর ডগায় লেগে কত পুরানো নাম্বার

শত গ্রামদেশ..আকাশের তারা কেউ কেউ।

 

সদ্য ফোটা ফুল বড়ো চেনা মনে হয় ! কুড়ানি

মেয়েদের প্রফুল্ল আঁচল..ঝরে

পড়ে..আলোছায়া…মাটিতেই ফের

মেশার আগেই টেনে নিই উপশিরায় আমার।

ইচ্ছে বেড়ে যায় দুদন্ড বেশি প্রশ্বাসের…

দুইঃ

জল দেয়। দেয় জৈবসার।

টবে পোঁতা কার হাড়গোড়

 

‘সো মহ কন্তা’…

প্রাকৃত ভাষায় লেখা। আষাঢ়-কিশলয়–

‘দূর দিগন্তা’ তার ওড়না ওড়ায়...

 

 রঙ্গন-(এক)

চিত্রঃ ৫

আমাদের ফ্লোরে কেউ নেই আজ শুধু ঝিরঝিরে

বৃষ্টি

সারাদিন ধরে হাতজোড়া, আর কাঁচা ড্রয়িংয়েই

তৈরি

সেই মিটারের বক্স। থেকে থেকে ওড়ে ওই–

মৌমাছিদের গুঞ্জন

পায়ে জড়িয়েছে সাত ফার্লং ভোকাট্টার মাঞ্জায়

 

দেহরসে শুধু গজিয়ে উঠেছে কার যৌবন

দেহাতির

এত যে চেষ্টা প্রিয়-বৃক্ষের নেই কোনও 

প্রতিবিম্ব…

 

ঠোঁটে চলকায় বিদ্যুৎ আর মুখে ঝরে পড়ে

মৌরির

দাঁতে পেষা চাপা গন্ধে মেতেছে জলে ডোবা

পানকৌড়ি…

 

তোমাকেই লেখে ঘোর সারাদিন–পছন্দতম

অঙ্গন

 

না না টবে নয়—ভিতর বাগানে তোকেই রেখেছে

রঙ্গন

 

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *