অ ম লে ন্দু চ ক্র ব র্তী-র স্মৃতিকথায় “শৈলীর ইতিবৃত্ত”

পরিচিতিঃরিটায়ার্ড, বৈদ্যুতিক কারিগর। টাটা স্টিল, নিবাস – ধানবাদ, ঝাড়খন্ড।

অ ম লে ন্দু চ ক্র ব র্তী-র স্মৃতিকথা

 

শৈলীর ইতিবৃত্ত

কিশোর বয়স থেকে দেখে আসছি। বাবা ক্লাবের ফাংসানে নাটক যাত্রা রিহার্সাল। তার আগে ছিলেন স্বাধিনতা আন্দোলনের শরিক। নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসের অনুগামি ছিলেন তিনি। সে সব বহু পুরানো কথা। এ এক এমনই রক্তে নিহিত ধারাপ্রবাহ যা, বংশ পরম্পরা চলতেই থাকে। তার দ্বিকবদল ঘটে হয়ত, বিলুপ্ত হয়না।
কেন এ গৌরচন্দ্রিকা কারণ জানেন। শৈলী নির্মানের একটি প্রাককথন থাকে, থকতেই পারে। আমার জীবণেও নাটক অভিনয় ক্লাব ফাংসান আবৃতি সঙ্গে গান বাজনা। তারপর গ্রুপথিয়েটার, ড্রামা কমাপিটিশন। কলশো ক্রমশ আমরা প্রফেশনাল হয়ে উঠছিলাম। এবং প্রচার মাধ্যম হিসেবে একটি নাট্যপত্রিকা জরুরি হয়ে পড়েছিল। এবং দলের সে দায়িত্বটি আমার ওপর দেওয়া হল। যেহেতু আমার সঙ্গে লাইব্রেরি ও ক্লাবের সঙ্গে সুসম্পর্ক সুভিনিয়োর টুভিনিয়োরে।…. পত্রিকার করার মনস্থ অনেকদিন থেকে। সোলতে পাকানো হচ্ছিল হাত পা ছুঁড়তে লেগেছি। স্থানিয় সাহিত্যিকদের সঙ্গে চেনা জানা ছিল। বাবার কারনেই বলাচলে। পত্রিকার নাম ? আমার মায়ের ডাক নাম সিলেক্ট। তখন আমাদের নাটকের মোহড়া চোলছে মনোজ মিত্রের “পাখি”এই পাখির প্রচার তুঙে প্রায় দশ থেকে বারোটি রজনি। আটজনের দল। প্রগতী নাট্যসংস্থা। ১৯৮০ অক্টোবর শৈলী প্রথম সংকলন। ৬ পাতার একটি প্রচার পত্রিকা নাম দেওয়া হল “শৈলী”আমার মায়ের ডাক নামেই ক্রমশ পত্রিকা, সাহিত্য পত্রিকাায় পরিনত হল। কয়েকটি র পর দ্বিতীয় সংখ্যা থেকেই সাবালোকত্বে আনা সম্ভব হল। তার পর আর পিছন ফিরে দেখার প্রয়োজন হয়নি ম্যাট্রিকের পরিক্ষা শেষ। কলেজের পড়ার দোটানা। বাবা নেই বড়দাদার ওপর সব বড় পরিবার আমরা রাবণের গুষ্টি। তখন বোধহয় এসব যেন বিলাশিতা মনে হতে লাগল।কয়েক মাস পেপার হকারি করলাম। শারদ শৈলী করব বলে। করলাম। বর্ষাকালটা পুরো ভিজে ভিজে পেপার ডিস্টিবিউশন। শৈলী হল এবং জবরদস্ত হল। সামনের পুজা মন্ডবে বসে পড়লাম। চারদিনে চল্লিটাও কাটলোনা। লিটল ম্যাগ জানবে তবেতো পড়াশোনা। তারআবার আমাদের মত গাঁয়ের মেধো। ” তরা কি লিখবি রে সব সরচ্চন্দ চলে এসচে। নিজেরা ভালোগরে পড়গে যা তারপর ল্যাখক।এই রকম জায়গায় লিটলম্যাগ !! বুঝতে পারলাম। এবার বোঝানোর পালা। জমি তৈরি করতে হবে। অক্ষর চাষিগণ আপনারাই পারবেন পরিবর্তন আনতে।

তবুও দোমে যেতে পারিনি তাইতো আজ শৈলীর ৪৮ তম সংখা বেরোতে চলেছে শৈলীর পাতে যাঁদের দিয়ে লিখিয়ে নিতে পেরেছি সেও কি কম পাওয়া? রাখালরাজ মুখোপাধ্যায়, যশোদা জীবন ভট্টাচার্য, সুবিমল বসাক , মলয় রায়চৌধুরী কমল চক্রবর্তী, বারীণ ঘোষাল, উদয়ন ঘোষ স্বপ্নময় চক্রবর্তী বিশ্বজিৎ বাগচী সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত রাণা চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ দত্ত, কাজল সেন অজিত বাইরী কেউ বাকি নেই। তবে বেশির ভাগ লিটল ম্যাগে যাঁরা লেখেন তাঁদের দিয়েই লিখিয়ে নিই।সে কারণে আমার বদনাম আছে। আমি নাকি নাছোড়বান্দা। একবার পুজাবোনাসের প্রায় বারোআনা লাগিয়ে দিয়েছিলাম। মা রেগে গেছিলেন। গজ গজ করে গেলেন কদিন। “ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়নো এবার পুজায় ঐ কাগজটি খা। কি বেহিসাবি ছেলে হয়েছে এত অভাব দেখলি দাঁড়াবার মত পাশে কেউ ছিলনা বুঝবে ! ” এই শুনতে হল যাঁর নামে পত্রিকা তিনিই বিরোধ করলেন খরচের বহর দেখে। আজ দৈননদিন কাজ হয়েগেছে। কাগজ লেখা ডিউটির পর এইসবই করতে হয়। তারপরও আরো গুণিজনেরা আজও লিখছেন শৈলীর পাতায় শোভা বাড়িয়ে চলেছেন। কমল চক্রবর্তী স্বপ্নময় চক্রবর্তী যশোধরা রায়চৌধুরী রামকিশোর ভট্টাচার্য আইভি চট্টোপাধ্যায় উত্তর বাংলার রিমি দে, অতনু বন্দোপাধ্যায়, তৃপ্তি সান্ত্রা, ঈশিতা ভাদুড়ী, রীমা দাস, সঞ্জীব নিয়োগী, স্বপন রায়,প্রণব পাল,উমাপদ কর, রঞ্জন মৈত্র সৌগত বালী, রবীন্দ্র গুহ, গৌতম গোস্বামী,সুকুমার মোহান্ত অনাথ বন্ধু মোহান্ত, চন্দন সরকার দীলিপ বৈরাগ্য রীনা ভৌমিক কাজল সেন নীহারুল ইসলাম।কত গুণীজন এই পত্রিকা কে সমৃদ্ধ করেছেন। বার বার মনে হয়েছে ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত।
এই ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে এসেছেন পারীয়ায়ি পাখির মত। নতুনে পুরোনয় মিলেমিশে একাকার হয়ে রয়েছে শৈলীর পাতায় পাতায় আমার শ্লাঘা বোধ সমৃদ্ধতা সবই এসব ঘিরেই আমি ভালোথাকি, আমার একান্ত অন্তর আত্মাকে ঘিরে শৈলী র ভালো থাকা মানেই আমার ভালো থাকা। এই ভালোবাসা আমি আমার শেষ দিন পর্যন্ত রেখে যেতে চাই। গাছ একটাই অসংখ অতিথীর আনাগোনা তাদের পায়ের ধুলায় আমি পবিত্র হই। শৈলী র চলায় মরিমরি নাই, আহামরি নাই তবুও সে কাছিমের মতো ধির গতীতে এগিয়ে চলেছে (৪৮) তম সংখার দরজায় কড়া নাড়ছে বন্ধুগণ। আর কি অনেক হল। আমার ও তো মেঘেমেঘে বেলা হল অনেক, আটান্ন প্লাস। এইখান থেকেই ষোলখানা গ্রণ্থ সম্পাদনা। ও নিজের লেখা অনু উপন্যাস দশখানা গল্পসংকলন দুখানা। কবিতা বই যৌথ ভাবে তিনটি। এসব ভালোবাসা ছাড়া আর কি হতে পারে। সংজ্ঞাহিন ভালোবাসা শৈলী নামক বৃক্ষের অগ্রমূল ভালোবাসা। ফুল ফল মুল পল্লব বল্বকলের ভালোবাসা ছাড়া কিইবা থাকে এই নশ্বর জীবন জুড়ে। এই মহামারী কালে সকলের মঙ্গল কামনা করে এখন কাার মতো ইতি টানছি।

লেখা পাঠাতে পারেন
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *