ব ন শ্রী রা য় দা স
অঙ্গীকার
হৃদয়ের স্রোত থেকে কয়েকটি ঢেউ তুলে
দিলাম তোমার করতলে ,
পারলে রোধ কোরো সমূহ ক্ষয়রোগ।
মন-উপনগরীর বিজ্ঞাপনের মোড়ক খুলে
খানিক উর্বর জমি ও লিখে দিলাম
জীবনের শ্রেষ্ঠ বীজ রেখে দিও উত্তর’এর কাছে ।
ভূগোলের শ্রেষ্ঠ শরীরী মানচিত্রে রাখলাম
স্নায়ু- লোকের জলোচ্ছ্বাস ।
পারলে পোষা পাখিটির স্বর চিনে এসো
জীবন পেরিয়ে মৃত্যুর নবজেন্মে।
প্রেমের উপন্যাস
রাত্রির নীড়ে মরীচিকা বন্দি করে
পারুলবন থেকে খুঁটে এনেছি নক্ষত্র ,
পৃথিবীর ছাদ আলোজলে ভাসিয়ে
অন্তিম প্রেমের উপন্যাস লিখতে
বসেছে পেঙ্গুইন ।
নৌকোর পাটাতনে যেটুকু জল অবশিষ্ট
তা দিয়ে সহজ স্নান কেন
একটা মৃত্যু সাঁতার ও অসম্ভব নয়।
মেঘের হিমকুচি মেখে টাটকা পলাশ
তুমি এলে গায়ে মহাকালের গন্ধ ,
এলেই যখন অসময়ে
যেটুকু আমাদের মাটিমময় উঠোন
চলো জ্যোৎস্না চাষ করি নদী-গর্ভে ।
নীতিমালা
মনের মায়া হরিণ গলে জল হলে
বসন্ত রঙিন ঘোমটায় কোকিল ডেকে ওঠে ,
সূর্য চোখ ধুয়ে ঝুলে থাকে কৃষ্ণচূড়া অন্তরে ,
বাউল রঙের হৃদয়ে আমার
তুমি তন্নতন্ন করে খোঁজ বিস্ময়ের আদি অন্ত ।
সুক্ষ্ম কোণের চুলচেরা দূরত্ব রেখে
তুমি নিজেকে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করলে
বিপর্যয়ের কথা ভেবে ,
ভবিষ্যতের জন্য আমি তুলে রাখি
ছেলেবেলা-আয়না ও ঈশপের নীতিকথা ।
জলের আলাপ
দেহ মনে জমে থাকা আবর্জনা প্রত্ন
হালকা হয়ে যায়
এলে নদীর কাছাকাছি ।
ইচ্ছে মতো মোচড়গুলো টুকরো করে
নদী বেঁধে ফেলে তার
হিরণ্ময় আঁচলে ।
ফেঁপে ওঠা পিপাসা, হেঁটে যাওয়া মার্গ
শাসন করে এলোমেলো ঢেউ – ঝুঁটি।
থাবা
এখন সময় অঢেল, হাওয়া অনিকেত
অনামী ফুলের নেশাতুর ঘ্রাণে
নৃত্য করে আদিমতা ,
মৃত্যু মাপে রোজ অদৃশ্য থাবা ।
জামগাছের জুনি আলোর সংলাপে
রাতবিরেত লিখি রং লিখি
গান ধরি ঘুঘুর ফাঁদ – – –
নদী লিখে ছুঁড়ে ফেলি কালের গর্ভে ।
আলোড়ন
মাঝে মাঝে ভাবি এই বেশ নির্জনে ,
বিজনের সঙ্গে সুখ দুঃখ বলি ,
অন্তর থেকে ওথলানো মায়াবী হরিণ ।
অশ্রু আঁকি নগরজোছনায় ,
আগুনে আত্মিক দহন উপুড় করি
আলোড়িত করি নিজেকেই ।
প্রশ্ন করি উত্তর ও আসে
ঘৃণা করতে করতে ভালোবেসে ফেলি
নিজেকেই ।
ফিরে আসা
শিশির পড়ছি তখন আশ্বিনের পাতা খুলে
ঝাউবনের শিরায় নাক্ষত্রিক আলো।
ফুটে উঠল জন্মান্তরের কাদম্বরী হাওয়া ,
অগভীর জলের বিভীষিকা থেকে
নিরূদ্দেশের গান হয়ে গেল
একটি দহন কালের প্রজাপতি ।
ঠোঁটের সুর থেকে খসে পড়ছে
হাজার স্বরলিপি ।
আমি সঞ্চারী থেকে ফিরে আসি অন্তরায় ।